ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

পিএসসি-জেএসসির ফল

প্রকাশিত: ০৭:৫৫, ৩ জানুয়ারি ২০২০

 পিএসসি-জেএসসির ফল

২০১৯ সালের প্রাথমিক ও জুনিয়র শ্রেণীর পরীক্ষার ফল প্রকাশ পেয়েছে ৩১ ডিসেম্বর। প্রাথমিক পরীক্ষায় পাসের হার ৯৫.৫০%। আর এবতেদায়িতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর পাসের হার ৯৫.৯৬%। গত বছরের তুলনায় পাসের হার কমেছে ২%। মেধা ও মনন যাচাইয়ে জিপিএ ৫-এর সংখ্যাও হ্রাস পেয়েছে। উত্তীর্ণদের মধ্যে পাসের হারে ছাত্রীরা এগিয়ে। জিপিএ-৫ পাওয়া ৩ লাখ ২৬ হাজার ৮৮ জনের মধ্যেও ছাত্রীরা কিছুটা বেশি। মেধা ও মনন বিকাশে বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা এখন আর আগের মতো ছাত্রদের তুলনায় পিছিয়ে থাকে না। এটা শুধু শহরে-নগরে নয়, বরং গ্রামাঞ্চল থেকে প্রত্যন্ত এলাকায়ও প্রাথমিক শিক্ষায় মেয়েদের সাফল্য এখন নজরকাড়া। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক প্রতিবেদনে প্রাইমারী শিক্ষায় সমতাভিত্তিক পর্যায়ে বাংলাদেশে বিশ্বের ১৫১টি দেশের মধ্যে এই সূচক প্রথম। সবমিলিয়ে বিশ্বে ৪৯তম হলেও দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষস্থান অর্জন করা বাংলাদেশ লিঙ্গ সমতায় অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে উন্নয়নের অবধারিত পরিণতিতে অগ্রসরমান হচ্ছে। গত বছর থেকে চতুর্থ বিষয় বাদ দিয়ে নতুন মূল্যায়ন পদ্ধতিতে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একটু পিছিয়ে থাকলেও এবার তা অত্যন্ত সফলভাবে সংশ্লিষ্টরা কাটিয়ে উঠতে পেরেছে। তাই গত বছরের তুলনায় এবার অষ্টম শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষায় ছাত্র-ছাত্রীদের সাফল্য সবাইকে মুগ্ধ করেছে। পাসের হার বেড়েছে গত বছরের তুলনায় ২%। এবার শূন্য পাস করা প্রতিষ্ঠান নেই বললেই চলে। তবে শিক্ষামন্ত্রী জিপিএ-৫-এর চাইতেও শিক্ষার্থীদের মেধা ও মনন বিকাশ অত্যন্ত জরুরী বলে তার অভিমত তুলে ধরেন। তিনি আশা করেন, অভিভাবকদেরও জিপিএ-৫-এর পেছনে ছোটা কমিয়ে দিতে হবে। বরং সন্তানের যথার্থ জ্ঞানচর্চায় মেধা ও মনন বিকাশকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করলে বিশ্বমানের শিক্ষায় তারা নিজেকে সমৃদ্ধ করতে বেগ পাবে না। সঙ্গত কারণেই আগামী বছর থেকে জিপিএ-৫-এর বদলে জিপিএ-৪ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে অষ্টম শ্রেণীর পরীক্ষায়। যা আন্তর্জাতিক মানের গ্রেডিং-এর সমপর্যায়ে। বোর্ড পরীক্ষা ছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাকি পরীক্ষাগুলো কিভাবে গ্রেডিংয়ের আওতা থেকে মুক্ত করা যাবে তেমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও সরকার ভাবছে। যেখানে মূল্যায়ন পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের মেধা ও মননকে যাচাই করার সুযোগ থাকবে। পরীক্ষা তখন অতিরিক্ত চাপ না হয়ে যথার্থ জ্ঞানচর্চার অনুষঙ্গ হবে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে যে মাত্রায় শিক্ষার্থীদের মেধা ও মনন বিকাশকে গুরুত্ব দেয়া হয় সেভাবেই আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকেও ঢেলে সাজানো অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক ও সময়োপযোগী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও শিশু-কিশোরদের অত্যধিক পড়ার চাপকে পাশ কাটিয়ে তাদের মেধা বিকাশের শক্তিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করার আবেদন জানান। এক্ষেত্রে অভিভাবক ও শিক্ষকদের ভূমিকা অত্যন্ত জরুরী। এছাড়াও আধুনিক সময় ও বিশ্বের সঙ্গে সমান তালে চলার উপযোগী প্রযুক্তিতে খুদে ও ভবিষ্যত প্রজন্মকে পারদর্শী হতে হবে। কোনভাবেই আগামীর প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্ব থেকে ছিটকে পড়লে চলবে না। দেশ ও জাতির ভবিষ্যত বিনির্মাণে নতুন প্রজন্মকে সব ধরনের জ্ঞান ও প্রযুক্তি আয়ত্তে আনা সময়ের যৌক্তিক দাবি।
×