ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

দলীয় মনোনয়নপত্র বিক্রি চলছে;###;প্রার্থী বাছাইয়ে ব্যস্ত আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি;###;আন্দোলন থেকে সরে বিএনপি এখন নির্বাচনের মাঠে

দৃষ্টি সবার সিটিতে ॥ ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের নির্বাচন

প্রকাশিত: ১১:০৭, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯

দৃষ্টি সবার সিটিতে ॥ ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের নির্বাচন

শাহীন রহমান ॥ জনগণ, রাজনৈতিক দলসহ সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু এখন আসন্ন সিটি নির্বাচন ঘিরে। তাদের নজর এখন ঢাকা সিটি নির্বাচনের দিকেই। দেশের রাজনীতিও এই নির্বাচন বলয়েই আবর্তিত হচ্ছে। তফসিল ঘোষণার পর প্রার্থী বাছাইয়ে দলগুলো আটঘাট বেঁধে নেমে পড়েছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জাতীয় পার্টি ব্যস্ত প্রার্থী বাছাই নিয়ে। চলছে মনোনয়ন ফরম বিক্রি। অন্য ছোট দলগুলোর ভাবনায়ও এই সিটি নির্বাচন। জনগণ তাকিয়ে আছে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আশায়। কমিশনের মাথায় এখন একটিই চিন্তা নগরবাসীকে কিভাবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেয়া যায়। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে কোন বিশেষ দল বা প্রার্থীর পক্ষে পক্ষপাতিত্ব আচরণ না করতে। তফসিল ঘোষণার পর ইভিএম ব্যবহার নিয়েও পুরনো বিতর্ক এখন নতুন করে আলোচনায় এসেছে। গত ২২ ডিসেম্বর ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। এই তফসিল ঘোষণার পর রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মতৎপরতা বেড়ে গেছে। বিএনপি আন্দোলনের চিন্তা বাদ দিয়ে হঠাৎ করেই নির্বাচনের দিকে ঝুঁকেছে। শুরু করেছে প্রার্থী বাছাই। তফসিলের আগে গত কিছুদিন ধরেই বিএনপির পক্ষ থেকে সরকারবিরোধী আন্দোলনের হুমকি দেয়া হচ্ছিল। বিশেষ করে দলের কারাবন্দী চেয়ারপার্সন বেগম খালেদার জিয়ার জামিন উচ্চ আদালতে নাকচ হয়ে যাওয়ার পর তারা আন্দোলনের দিকে ঝুঁকে পড়ার ইঙ্গিত দেন। দলের কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন, আদালতের আদেশে খালেদা জিয়ার মুক্তির পথ এখন বন্ধ। আন্দোলনের জন্যও তৃণমূলে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছিল। হঠাৎই সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষাণায় আন্দোলনে ছেদ পড়েছে বিএনপির। সিটি নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিয়ে প্রার্থী বাছাই শুরু হয়েছে। আগামী ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। তফসিল অনুযায়ী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীর মনোনয়নপত্র রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দাখিল করতে হবে। রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের মনোনয়পত্র দাখিলের আগে দল থেকে মনোনয়ন নিতে হবে। দল যে প্রার্থীকে মেয়র পদে মনোনয়ন দেবে কমিশনের পক্ষ থেকে তাকে সংশ্লিষ্ট দলের প্রার্থী হিসেবে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। তবে স্বতন্ত্র নির্বাচন করতে হলে তাকেও তিন শ’ ভোটারের সমর্থনযুক্ত তালিকা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দিতে হবে। তবে কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের জন্য দলের মনোনয়নের প্রয়োজন নেই। এই পদে ভোট হবে নির্দলীয়ভাবে। যদিও দলগুলো থেকে মেয়র পদের পাশাপাশি কাউন্সিলর পদে মনোনয়ন দেয়ার তৎপরতা শুরু হয়েছে। এদিকে তফসিল ঘোষণার পর থেকেই রাজনৈতিক দলগুলো এখন ব্যস্ত প্রার্থী বাছাই নিয়ে। বুধবার থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলের প্রার্থীদের মধ্যে মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু হয়েছে। উপজেলা নির্বাচন এবং ঢাকা উত্তর সিটি উপনির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলেও এবার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই বিএনপি নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ২৩ ডিসেম্বর দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে প্রার্থী বাছাইয়ে বৃহস্পতিবার থেকে দলের মনোনয়ন ফরম বিতরণের ঘোষণার দেন। সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টিও বুধবার থেকে দলের মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু করেছে। বুধবার প্রথম দিনেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম, ধানম-ি থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ফজলে নূর তাপস এবং হাজারীবাগ এলাকার সংসদ সদস্য হাজী সেলিম মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। তবে বৃহস্পতিবার ঢাকা দক্ষিণের মেয়র পদে মনোনয়নপত্র নেন মোঃ সাঈদ খোকন। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রার্থী হতে একাধিক প্রার্থী মনোনয়পত্র সংগ্রহ করলেও আলোচনায় রয়েছেন উত্তরের জন্য বর্তমান মেয়র আতিকুল ইসলাম, দক্ষিণের জন্য ঢাকা ৭ আসনের এমপি হাজী সেলিম, ধানম-ি ১০ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ফজলে নূর তাপস। তবে জানা গেছে উত্তরের মেয়র প্রার্থী হিসেবে বর্তমান মেয়র আতিকুল ইসলামের মনোনয়ন অনেকটাই নিশ্চিত। তবে দক্ষিণের কে মনোনয়ন পাচ্ছেন তা নিয়ে দলের মধ্যে এখন পর্যন্ত হিসাব নিকাশ চলছে। বৃহস্পতিবার দক্ষিণের মেয়র পদে দলের মনোনয়নপত্র নেয়ার সময় সাঈদ খোকন কান্নায় ভেঙ্গে পড়েনে। বলেন, ৫ বছরের দায়িত্ব পালনে কখনও অবহেলা করিনি। ৫ বছরে অনেক কাজ করেছি। এখনও কিছু বাকি রয়েছে। দ্বিতীয়বার মেয়র নির্বাচিত হলে বাকি কাজ সম্পন্ন করবেন। তবে জানা গেছে, ঢাকা ১০ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে নূর তাপস এই পদে দলের মনোনয়ন ফরম নেয়ার কারণে সাঈদ খোকনের মেয়দ পদে দলের মনোনয়ন পাওয়া অনেকটাই কঠিন হয়ে পড়ছে। এ কারণে তিনি অনেকটা আবেগঘন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত দক্ষিণে কে পাবেন দলের মনোনয়ন দলের সিদ্ধান্তেই তা চূড়ান্ত হবে। তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিতর্কিত প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া হবে না। যাকে জনগণ ভালবাসে, যার জনপ্রিয়তা বেশি এবং যে প্রার্থী বিজয়ী হতে পারবেন তাকেই দলীয় মনোনয়ন দেয়া হবে। এদিকে বিএনপিও ব্যস্ত হয়ে পড়েছে সিটি নির্বাচন নিয়ে। দলের মধ্যে প্রার্থীরাও মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। বৃহস্পতিবার দলের প্রার্থী অনেকেই মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত আলোচনায় রয়েছেন তিনজন। এর মধ্যে জানা গেছে উত্তরের তাবিথ এম আউয়ালের মনোনয়ন অনেকটাই নিশ্চিত। তিনি উত্তরের মেয়র পদে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। গত নির্বাচনে তিনিই দলের প্রার্থী ছিলেন। আর দক্ষিণের জন্য যারা মনোনয়নপত্র নিয়েছেন তাদের মধ্যে দুজন আলোচনায় রয়েছেন। এর মধ্যে একজন বিএনপির বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন। তিনি এক সময় ছাত্রদলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। গত নির্বাচনেও ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু বিএনপি মির্জা আব্বাসকে মেয়র পদে মনোনয়ন দিলে রিপন নির্বাচনী প্রচার থেকে নিজেকে দূরে রাখেন। অবশ্য তিনি ওই নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। জানা গেছে, উত্তরে বিএনপির প্রার্থী অনেকটা নিশ্চিত হলেও দক্ষিণে কাকে প্রার্থী করা হবে তা এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি। দলের বৈঠকে তা চূড়ান্ত করা হবে। তবে এ সিটিতে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে যার নাম আলোচনায় রয়েছে তিনি ইশরাক হোসেন। অবিভক্ত ঢাকা সিটির সর্বশেষ নির্বাচিত মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে। সাদেক হোসেন খোকা গত মাসে আমেরিকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। ঢাকার মেয়র ছাড়াও বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। দলের দুঃসময়ে খোকার সাহসী নেতৃত্বে বিএনপি অনেকবার ঘুরে দাঁড়ায়। সেই অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ঢাকা দক্ষিণের মেয়র হিসেবে তার ছেলে ইশরাক হোসেনের নাম আলোচনায় রয়েছে বলে জানা গেছে। গত একাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি পুরান ঢাকায় বিএনপির প্রার্থী ছিলেন। পরে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে সংসদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। ধারণা করা হচ্ছে তিনি এবার ঢাকা দক্ষিণের বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাচ্ছেন। এদিকে গত বুধবার থেকে মেয়র প্রার্থীর জন্য মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করেছে জাতীয় পার্টি। প্রথম দিন ঢাকা উত্তরের জন্য মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হয়েছে। প্রথম দিন উত্তরের মেয়র প্রার্থীর জন্য জাতীয় পার্টির মনোনয়নপত্র নেন মেজর জেনারেল (অব) কামরুল ইসলাম। তিনি গত মঙ্গলবার দলে যোগ দেন। বৃহস্পতিবার ঢাকা দক্ষিণের জন্য দলটির পক্ষ থেকে আগ্রহী প্রার্থীদের মধ্যে মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হয়। তবে জানা গেছে, ইসির নিবন্ধিত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা মেয়র পদে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে অধিকাংশ ভোটারের মতামত এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপির প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। জনগণেরও আগ্রহ এই দুই দলের প্রার্থীদের নিয়ে। বসে নেই ছোট রাজনৈতিক দলগুলোও। তারা জোটে নির্বাচন করবে না আলাদাভাবে নির্বাচন করবে তা নিয়ে দলগুলোর মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। ইসির নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দল থাকলেও মূলত : অধিকাংশ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির জোটের সঙ্গে সম্পৃক্ত। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে রয়েছে ১৪ দলীয় জোট। অপর দিকে বিএনপির সঙ্গে ২০ দল ছাড়াও গত নির্বাচনে তারা ড. কামালের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্ট গড়ে তোলে। জানা গেছে, জোটের এসব দল আলাদা প্রার্থী দেবে নাকি জোটের প্রার্থীকে সমর্থন দেবে তা নিয়ে অভ্যন্তরীণ আলোচনা শুরু হয়েছে। নতুন করে ইভিএম বিতর্ক নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে প্রথম থেকে আপত্তি রয়েছে বিএনপির। গত জাতীয় নির্বাচনসহ যখনই কোন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের প্রসঙ্গ উঠেছে তখনই বিএনপির পক্ষ থেকে কারচুপির সুযোগ রয়েছে অভিযোগ জানিয়েছে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। ইভিএম ব্যবহার না করার জন্য বারবারই তারা নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ দিয়েছে। এবারও তফসিল ঘোষণার পর বিএনপি ইভিএম ব্যবহারের বিরোধিতা করছে। গত ২৩ ডিসেম্বর বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সিটি নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের আপিত্ত রয়েছে বিএনপির। বিশেষ দলের প্রার্থীকে জেতানোর অপকৌশল হিসেবে ইসি ইভিএম ব্যবহার করতে চায় বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, নির্বাচনে সব কেন্দ্রে ইসির ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের সিদ্ধান্ত অত্যন্ত আপত্তিজনক। আমরা এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানাচ্ছি। ইভিএমে নির্বাচনের ফলাফল পাল্টানো এবং কারচুপির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। এই নির্বাচনেও ইভিএম ব্যবহারের বিরোধিতা করছি। গত ২২ ডিসেম্বর ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী উত্তর ও দক্ষিণ সিটির সব কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সে অনুযায়ী প্রস্তুতি চলছে ইসিতে। তবে এই বিতর্ক শুধু বিএনপিতে থেমে নেই। খোদ নির্বাচন কমিশনেও এটা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। বুধবার নির্বাচনী কর্মকর্তাদের এক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা এবং জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের মধ্যে এ নিয়ে বাহাস চলে। অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় সিইসি বলেন, আগে বিভিন্ন নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহার করে ‘সুফল’ পাওয়া গেছে। এ কারণেই নির্বাচন কমিশন ইভিএম ব্যবস্থা ধরে রেখেছে। তবে যন্ত্রে ভোটগ্রহণ নিয়ে এখনও অনেকের আপত্তি আছে। তিনি বলেন, ইভিএমে নির্বাচন পরিচালনায় কোন অসুবিধা নেই। এর মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগ সফলভাবে করা যায়। সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে কয়েকটি আসনসহ বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা সুফল পেয়েছি, তাই ধরে রেখেছি। অপরদিকে মাহবুব তালুকদার বলেন, ইভিএম নিয়ে অংশীজনদের মধ্যে অনেক দ্বিধা-দ্বন্দ্ব আছে। ইভিএম প্রশ্নবিদ্ধ হলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। এ সময় সিইসি তার বক্তব্যে জবাবে বলেন, যদি সবাই বলেন, ইভিএম দিয়ে ভালভাবে নির্বাচন করা যায় না, তাহলে আমরা ইভিএম ব্যবহার করব না। সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রস্তুতি ইসি এদিকে আসন্ন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে নির্বাচন কমিশনও ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। তফসিল ঘোষণা করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, সিটি ভোট নিরপেক্ষ হবে। নির্বাচন সকলের জন্য উন্মুক্ত। প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হবে। সবাইকে আসার জন্য বলছি। আশা করি উৎসবমুখর, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে। এদিকে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, সব প্রার্থীর সঙ্গে নিরপেক্ষ আচরণ করতে হবে। দল দেখে প্রার্থীদের প্রতি আচরণ করা যাবে না। কার কি রাজনৈতিক পরিচয় তা না দেখে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। ভয়-ভীতির তোয়াক্কা না করে দায়িত্ব পালনে সাহসী ও কঠোর হতে হবে। তবে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে তা দেখার জন্য সিটি ভোটের দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে সাধারণ ভোটারদের। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে আগামী ৩০ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দুই সিটিতে মেয়র পদ ছাড়াও ঢাকা উত্তর সিটিতে মেয়র পদসহ ৫৪টি সাধারণ ওয়ার্ড এবং ১৮টি সংরক্ষিত আসনে ভোটগ্রহণ করা হবে। উত্তর সিটিতে মোট ভোটার রয়েছেন ৩০ লাখ ৩৫ হাজার ৬২১। এই সিটিতে ভোটগ্রহণের জন্য সম্ভাব্য কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৩৪৯। ভোটগ্রহণের বুথ সংখ্যা ৭ হাজার ৫১৬। অপরদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে মেয়র পদসহ ৭৫টি সাধারণ ওয়ার্ড, ২৫টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর নির্বাচনের জন্য ভোটগ্রহণ করা হবে। এই সিটিতে মোট ভোটারের সংখ্যা রয়েছে ২৩ লাখ ৬৭ হাজার ৪৮৮। সম্ভাব্য ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১ হাজার ১২৪টি। বুথের সংখ্যা ৫ হাজার ৯৯৮টি। সব কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট নেয়া হবে। উল্লেখ্য, বিভক্তির পর ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে একসঙ্গে ভোট হয়েছিল ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল। নির্দলীয় ওই নির্বাচনে ঢাকা উত্তরে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আনিসুল হক এবং ঢাকা দক্ষিণেও ক্ষমতাসীন দল সমর্থিত সাঈদ খোকন মেয়র নির্বাচিত হন। আনিসুল হকের মৃত্যুর পর বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের বর্জনের মধ্যে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম মেয়র নির্বাচিত হন।
×