ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে কোন দিকনির্দেশনা নেই ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ১১:১৭, ২২ ডিসেম্বর ২০১৯

আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে কোন দিকনির্দেশনা নেই ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলে জাতি হতাশ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলে শুধু ব্যক্তিবন্দনা ছিল, জাতির জন্য কোন দিকনির্দেশনা দেয়া হয়নি। এ ছাড়া গণতন্ত্রহীনতা থেকে উত্তরণের পথ দেখাতে পারেনি আওয়ামী লীগ। শনিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সদ্য প্রয়াত জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কবীর মুরাদ স্মরণে আয়োজিত মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে তিনি এ মন্তব্য করেন। মিলাদ ও দোয়া মাহফিল শেষে বিএনপির জাতীয় কাউন্সিল কবে হবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা জানেন যে, আমরা একটা বৈরী ও প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে দিয়ে রাজনীতি করছি। আমাদের রাজনীতির জন্য যে স্পেস দরকার, আমরা এখানে তা পাচ্ছি না। যার ফলে আমাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম আমরা পরিচালনা করতে পারি না। ফখরুল বলেন, সারাদেশের বেশিরভাগ জায়গায় আমাদের কাউন্সিল করতে দেয়া হয় না। বিশেষ করে জেলা ও উপজেলাগুলোতে আমাদের কাউন্সিল করতে দেয়া হয় না। এর মধ্যেও আমরা কাজ করছি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমাদের সংগঠনকে গুছিয়ে আনা হচ্ছে। আমরা যত দ্রুত সময়ে সম্ভব এটা শেষ করব। এর মধ্যেই হয়তবা আমরা জাতীয় কাউন্সিল করার চেষ্টা করব। তিনি বলেন, সরকার আমাদের কোন সভা-সমাবেশ করতে দিচ্ছে না। আমরা অনেক চেষ্টা করেও কোন অনুষ্ঠান করতে পারিনি। মির্জা ফখরুল বলেন, সমগ্র জাতির একটা প্রত্যাশা ছিল যে, আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলে হয়তোবা গণতন্ত্র উত্তরণের একটা পথ দেখা যাবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেই পথ দেখাতে পারেনি। একই সঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক উন্নয়ন এবং দেশের সঙ্কট উত্তরণে কোন দিকনির্দেশনা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। যদিও দেশের মানুষ তা আশা করেছিল। ফখরুল বলেন, সংবিধানকে পুরোপুরি উপেক্ষা করে দেশে গণতন্ত্রহীন একটা শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার জন্য আওয়ামী লীগ প্রায় এক দশক ধরে কাজ করছে। আমরা তাদের জাতীয় কাউন্সিলে দেখতে পেলাম সেই কথাগুলোই আবার সামনে এসেছে। ফলে জাতি সম্পূর্ণ হতাশ হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলে শুধু ব্যক্তি ও দলের প্রশংসা করা হয়েছে। যেটাকে আমরা বলি বন্দনা, তাই করা হয়েছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের যে অবস্থান অর্থাৎ একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে তারা এগিয়ে যাচ্ছে এবং জনগণের যে গণতান্ত্রিক আশা-আকাক্সক্ষা সেটা উপেক্ষা করা হচ্ছে। রাজাকারের তালিকায় ভুল-ভ্রান্তির পেছনে বিএনপি ও জামায়াত জড়িত রয়েছে সরকারের কয়েক মন্ত্রীর এমন বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এসব হচ্ছে সব ব্যর্থতার দায় অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়ার পুরনো পদ্ধতি। এটা নতুন কিছু নয়, এটা আওয়ামী লীগের চরিত্র। তারা সব সময় তাদের ব্যর্থতা ও অপরাধ অন্যের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করে। দেশের উন্নয়নে সদ্য প্রয়াত স্যার ফজলে হাসান আবেদের অবদানের কথা স্মরণ করে ফখরুল বলেন, ফজলে হাসান আবেদরা বার বার আসেন না। তার অবদানের কথা মানুষ যুগ যুগ ধরে স্মরণ করবে। তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। জিয়া পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খানের সভাপতিত্বে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, জিয়া পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আবদুল্লাহিল মাসুদ। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডাঃ আব্দুল কুদ্দুস, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, আব্দুস সালাম আজাদ, তাইফুল ইসলাম টিপু, জিয়া পরিষদের নেতা অধ্যাপক এমতাজ হোসেন, অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক আবদুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
×