ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ

প্রকাশিত: ০৯:২৯, ২২ ডিসেম্বর ২০১৯

রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ

রাষ্ট্রের নাগরিকদের কল্যাণের বিষয়টিই সর্বাধিক গুরুত্ব পাবে রাষ্ট্রপতির কাছে, এমনটিই স্বাভাবিক। মহামান্য রাষ্ট্রপতি সাধারণ মানুষের দুর্দশা ও বিপন্নতার বিষয়ে যে সম্পূর্ণ অবগত ও সচেতন, সেটি আরও একবার দেশবাসী অনুধাবন করলেন। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ কার্ডিয়াক সোসাইটি আয়োজিত আন্তর্জাতিক কার্ডিওভাসকুলার কনফারেন্স ‘বাংলাকার্ডিও-২০১৯’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডাক্তার-রোগীর আস্থার সম্পর্ক বিষয়ে খোলামেলা বক্তব্য দেন রাষ্ট্রপতি। একজন সুস্থ মানুষ রোগগ্রস্ত হলে সবার আগে তার সুচিকিৎসা জরুরী হয়ে ওঠে। আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে রোগ নির্ণয়ের জন্য নানা ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ রয়েছে। এই সুযোগটিকেই পুঁজি করে এক শ্রেণীর মুনাফালোভী ব্যক্তি রোগীদের হয়রানি করেন, তার পকেট কাটার সুযোগ তৈরি করেন। এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতি সুস্পষ্টভাবেই বলেছেন, রোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষায় কাউকে যেন হয়রানি করা না হয় সেদিকে সজাগ থাকতে হবে। এ ধরনের কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি যথার্থই বলেছেন, চিকিৎসকদের আরও একটা বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে, যাতে ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বাজারে আসতে না পারে। এই জরুরী মানবিক বক্তব্য ও দিকনির্দেশনা দেয়ার জন্য আমরা রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানাই। একই সঙ্গে আমাদের প্রত্যাশা, রাষ্ট্রপতির সদিচ্ছা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষই আন্তরিকভাবে সক্রিয় হবেন। রোগশোক বলে কয়ে আসে না, ব্যাধি মানে না শ্রেণী-পেশা। কারও হয়তো ব্যাঙ্কক, সিঙ্গাপুরে গিয়ে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য আছে। আবার কারও সরকারী হাসপাতালে বিনামূল্যের বেডে থেকেও ওষুধপথ্য কেনার আর্থিক সামর্থ্য থাকে না। এটাই বাস্তবতা। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের একটা দায়িত্ব আছে। বর্তমান সরকার জনগণের সরকার, জনতার কল্যাণের সরকার। তাই প্রতিটি মৌলিক মানবিক প্রয়োজন মেটানোর সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গৃহীত হতে দেখছে দেশবাসী। এই ধারাতেই সর্বশেষ সংযোজন ত্রিশ হাজার দরিদ্র রোগীর জন্য অর্ধ লাখ টাকার চিকিৎসা সহায়তা প্রদানের পরিকল্পনা। সরকারের এই উদ্যোগ সাধুবাদযোগ্য। অনেক বেসরকারী হাসপাতাল ও ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অনুমোদন পাওয়ার পর শর্ত ভঙ্গ, অব্যবস্থাপনা ও ভুল চিকিৎসা প্রদানের অভিযোগ উঠে থাকে। এসব অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত একের পর এক বেসরকারী হাসপাতাল ও ক্লিনিককে জেল-জরিমানাও করেছে। ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের (আইসিইউ) নামে উচ্চ চিকিৎসা ফি আদায় করছে অনেক হাসপাতাল। রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে দেশের অবৈধ ও প্রশ্নবিদ্ধ বেসরকারী ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো। বার বার ঘোষণা দিয়েও দেশব্যাপী কার্যকর অভিযান অব্যাহত রাখতে পারেনি স্বাস্থ্য অধিদফতর। বরং অধিদফতরের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা আর্থিক সুবিধা নিয়ে ওই সব অবৈধ ডায়াগনস্টিক সেন্টার লালন পালন করে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ আছে। র‌্যাবের অভিযান প্রশংসিত হলেও ঘন ঘন অভিযান চালানো তাদের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। ফলে দেশজুড়ে অবৈধ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ছড়াছড়ি। অনেক সেন্টারের নেই সরকারী অনুমোদনও। মানুষের দুঃখকষ্টকে পুঁজি করে আর কত মুনাফা লুটবে এসব অর্থলোভী বেসরকারী ক্লিনিক-হাসপাতাল! সব কিছুরই নৈতিক একটা দিক রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের দাবি, বেসরকারী ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলোর সেবার মান ও নানা অনিয়ম মনিটর করে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হোক।
×