ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মোস্তাফা জব্বার

জেনেভায় বিশ্ব তথ্য সমাজসংঘ

প্রকাশিত: ০৮:১১, ২৮ অক্টোবর ২০১৯

জেনেভায় বিশ্ব তথ্য সমাজসংঘ

আমার নিজের জীবনটার চৌহদ্দি নিজের দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বা ডিজিটাল প্রযুক্তি জগতে ৮৭ সাল থেকেই ব্যাপকভাবে যুক্ত। বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি গড়ে তোলা, বেসিস প্রতিষ্ঠা করা এবং সরকারের এই বিষয়ক প্রায় সকল কাজেই যুক্ত থেকেছি। এমনকি বিএনপি সরকার বা তত্ত্বাধায়ক সরকারের আমলেও আমি এই ক্ষেত্রে প্রবল ভূমিকা পালন করতে পেরেছি। এর সর্বোচ্চ সুফল পেলাম মন্ত্রিত্ব পেয়ে। ১৮ ও ১৯ সালে মন্ত্রী হিসেবে বিশ্ব মোবাইল কংগ্রেস, ইনফোকম জাপান আইটি উইক ইত্যাদিতে যোগ দিয়ে অসাধারণ সম্মান অর্জন করেছি। তবে মুকুটে সবচেয়ে সম্মানজনক পালকটি ছিল বিশ্ব তথ্য সমাজসংঘের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া। ১৯ সালে এপ্রিলে আমরা একটি প্রতিনিধি দল সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এই সম্মেলনে যোগ দিই। এই সম্মেলন আমাকে যা দেয় তার কোন তুলনা নেই। বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ থেকে পায়ে কাদামাটি মাখা অবস্থাতেই এমন একটি সংস্থার চেয়ারম্যান হতে পারাটা আমার জন্য ছিল অসাধারণ এক অর্জন। হাউলিন ঝাউয়ের সঙ্গে বৈঠক : জেনেভা পৌঁছেই প্রথমে আমি আন্তর্জাতিক টেলিকম ইউনিয়নের মহাসচিব হাউলিন ঝাউয়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করি। ৮ এপ্রিল ২০১৯ আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের মহাসচিব হাউলিন ঝাউয়ের সঙ্গে আমার দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের শুরুতেই বাংলাদেশ এই ফোরামের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় আমি তাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করি। হাউলিন ঝাউয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের শুরুতেই বলা হয়, বাংলাদেশের এই চেয়ারম্যানশিপকে তারা বেশ গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ যে উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে সেখান হতে অনেক দেশের অনেক কিছু শেখার আছে মর্মে সভায় তিনি জানান। এটি বাংলাদেশের সম্মান অনেক উজ্জ্বল করেছে এবং সদস্য দেশগুলোর কাছে এই বিষয়টা পৌঁছে গেছে। বৈঠকে আমি বাংলাদেশের টেলিঘনত্ব ও ইন্টারনেট ঘনত্বের দ্রুত প্রসার, তৃণমূল জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় তথ্যপ্রযুক্তি সেবা পৌঁছে দেয়া, ডিজিটাল সরকার, ডিজিটাল কমার্সসহ ডিজিটাল অবকাঠামো সম্প্রসারণের মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের বিভিন্ন কর্মসূচি ও অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরি। তাছাড়া ইউনিয়ন পর্যায়ে কানেক্টিভিটি, এসএমই, স্টার্টআপ কোম্পানিদের প্ল্যাটফর্ম তৈরিতে বাংলাদেশ কীভাবে এগিয়ে গেছে সেগুলো আইটিইউয়ের কাছে অবহিত করি। বাংলাদেশ পোস্ট অফিসের ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস এবং ডিজিটাল লেনদেনে কীভাবে পরিবর্তিত হয়েছে সে বিষয়গুলোও উল্লেখ করা হয়। সভায় আইটিইউ মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর বহু দেশের কাছে রোল মডেল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মন্ত্রীদের কাছে বাংলাদেশের সাফল্যের চিত্রকে তুলে ধরবেন মর্মে তিনি জানান। ডব্লিউএসআইএসের এক্সিবিশন উদ্বোধন : ৮ এপ্রিল ২০১৯ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পরপরই ডব্লিউএসআইএসের এক্সিবিশন উদ্বোধন করি ফোরামের চেয়ারম্যান হিসেবে আমি এবং কো-চেয়ারম্যান আইটিইউ মহাসচিব হাউলিন ঝাউ। এই এক্সিবিশনে বিভিন্ন দেশের সার্ভিসগুলো তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে বেশ ইনোভেটিভ কিছু আইডিয়াও ছিল। এক্সিবিশন উদ্বোধনে শিশু-কিশোরদের নিয়ে অনুষ্ঠান হয়েছে। ডব্লিউএসআইএস ফোরামের চেয়ারম্যানশিপ : ৯ এপ্রিল ২০১৯ সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানস্থলে আনুষ্ঠানিকভাবে ডব্লিউএসআইএস ফোরাম-১৯-এর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করি। জেনেভা কনভেনশন সেন্টারে উদ্বোধনের শুরুতে ডব্লিউএসআইএস ফোরামের আয়োজক হিসেবে ইউনেস্কো, ইউএনডিপি, ইউএনসিটিএডিসহ জাতিসংঘের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন। এরপর আইটিইউ মহাসচিব হাউলিন ঝাউ আনুষ্ঠানিকভাবে এবারের ফোরামের চেয়ারম্যান হিসেবে আমার নাম ঘোষণা করেন। এ সময় দর্শক সারিতে থাকা বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী ও পলিসি মেকাররাসহ সবাই করতালি দিয়ে অভিনন্দন জানান। দায়িত্ব নিয়ে আমি বলেছি, ডব্লিউএসআইএসের এজেন্ডা হলো ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন করা। বাংলাদেশের এখন মাথাপিছু আয়, শিক্ষার হার, জিডিপির যে অগ্রগতি তা প্রমাণ করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ ভিশন কতটা সুদূরপ্রসারী ছিল। তলাহীন দেশ থেকে আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরের মূল শক্তি যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব সেটিও আমি উল্লেখ করি। বিশ^সভায় আমি এই সময় বাংলাদেশের জাতির পিতার প্রতিও শ্রদ্ধা নিবেদন করি। ডব্লিউএসআইএসের এজেন্ডা এবং এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা প্রসঙ্গে আমি বলেছি, পৃথিবীর সব দেশ একইভাবে চলছে না। আজ যেটি আফ্রিকার সমস্যা, যেটি বাংলাদেশের সমস্যা অথবা উন্নত দেশের যে সমস্যা- সবগুলো এক রকম নয়। এগুলোকে কাস্টমাইজড করতে হবে প্রতিটি দেশের নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী। ডিজিটাল নিরাপত্তা বিষয়ে আমি বলেছি, এখন যেভাবে ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে সেখানে নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে সবাইকে পারস্পরিক সহযোগিতার মধ্যে থাকতে হবে। ডব্লিউএসআইএসের ‘মিনিস্ট্রিয়াল রাউন্ডটেবিল’ পরিচালনা : ডব্লিউএসআইএস ফোরামের চেয়ারম্যান হিসেবে আমি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ‘মিনিস্ট্রিয়াল রাউন্ডটেবিল’ প্রোগ্রামে মডারেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। এই রাউন্ডটেবিল বৈঠকে ২০টি দেশের মন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। আইটিইউ মহাসচিব হাউলিন ঝাউ এই সেশনে কো-চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। গোলটেবিলে প্রতিটি দেশের মন্ত্রীরা নিজেদের দেশের ভাবনার কথা বলেছেন, তাদের বর্তমান অবস্থান, পলিসি, স্ট্র্যাটেজি, এসডিজির সঙ্গে কানেক্টিভিটি এবং ডব্লিউএসআইএসের অবজেক্টিভগুলোর সম্পৃক্ততা নিয়ে কথা বলেছেন। আলোচনায় মন্ত্রীরা তাদের সব মন্ত্রণালয় ও দফতরগুলোর সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তির সংযোগ তৈরি করার বিষয়টিকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করেন। রাউন্ডটেবিল বৈঠকে ডিজিটাল নিরাপত্তা, ডিজিটাল সংযুক্তির প্রসার, ডিজিটাল সরকার প্রতিষ্ঠা, পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ, ডিজিটাল ডিভাইড দূর করা, ফাইভজি, আইওটি, এআই, ব্লক চেনের মতো প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ নিয়ে দেশগুলো তাদের ভাবনায় সম্ভাবনা ও উদ্বেগগুলো তুলে ধরেন। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক বাংলাদেশের পক্ষে ডিজিটাল বাংলাদেশের চারটি পিলারের বিবরণসহ তিনটি প্রস্তাব রাখেন। প্রথমত, আইটিইউয়ের উদ্যোগে একটি ‘সেন্টার ফর সাইবার সিকিউরিটি’ স্থাপন করা; দ্বিতীয়ত, সেন্টার অব এক্সিলেন্স ফর ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি স্থাপন এবং তৃতীয়ত, এসডিজি ট্র্যাকার সিস্টেম বাস্তবায়ন, যেটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালীন উদ্বোধন করেছিলেন। আমি আমার বক্তব্যে বলেছি, তথ্যপ্রযুক্তির সমস্যা, সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ সবকিছু নিয়ে দেশগুলোর একসঙ্গে কাজ করার কার্যকর প্ল্যাটফর্ম হতে পারে ডব্লিউএসআইএস। ওয়াইপো মহাসচিবের সঙ্গে সভা : ১০ এপ্রিল ১৯ সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বিশ্ব মেধাসম্পদ সংস্থার সদর দফতরে আমি ওয়াইপোর মহাপরিচালক ফ্রান্সিস গ্যারির সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হই। বৈঠকে ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি অর্গানাইজেশন বা ওয়াইপো ফ্রান্সিস গ্যারি বাংলাদেশে মেধাস্বত্ব একাডেমি স্থাপনের সহযোগিতা করবে মর্মে জানান। বৈঠকে বলেছি, নতুন প্রযুক্তির বিশ্বে মেধাসম্পদ রক্ষা একটি নতুন চ্যালেঞ্জ। নতুন যে টেকনোলজি রয়েছে সেগুলোর ক্ষেত্রে পলিসি কেমন হবে তা নিয়ে আলোচনা করেন ফ্রান্সিস গ্যারি। ইন্ডাস্ট্রি ৪.০, বিগডেটা, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মতো প্রযুক্তির সমান্তরালে ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টির রাইটস নিয়ে পলিসির কথা বলেন তিনি, যা জাতিসংঘের সভায় পেশ করা হবে বলে উল্লেখ করেন। সংস্থাটির মহাপরিচালক বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোর মেধাসম্পদ সংরক্ষণে ওয়াইপোর নেয়া পদক্ষেপগুলোর কথা বলেন। ওয়াইপো মহাপরিচালককে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে আমি বাংলাদেশের কপিরাইট আইন, পেটেন্ট ও ডিজাইন আইন, ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য নিবন্ধন ও সুরক্ষা আইন যুগোপযোগী করা হবে মর্মে জানাই। বিশেষ করে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য নিবন্ধন ও সুরক্ষা আইন তৈরির সময় ওয়াইপোর পরামর্শের কথা স্মরণ করা হয়। আমি ২০১০ সালে ওয়াইপো মহাপরিচালক যখন বাংলাদেশে আসেন তখন আইপি একাডেমি স্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শের কথা এ সময় উল্লেখ করি। এর জবাবে ফ্রান্সিস গ্যারি আমাকে আইপি একাডেমি স্থাপনে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তখন একাডেমির রিসোর্সগুলো বাংলায় করার বিষয়ে প্রস্তাব দেই এবং তা সানন্দে গ্রহণ করেন ওয়াইপো মহাপরিচালক। আমি বলেছি, বর্তমান যুগের তথ্যপ্রযুক্তির গতি ও ডাইমেনশনের সমান তালে আইপি পলিসি নতুন করে করতে হবে। নীতিমালাগুলো ঢেলে সাজাতে হবে এবং এই বিষয়ে ওয়াইপো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এ সময় আমি ওয়াইপোর এক্সেস টু বুকস কনসোর্টিয়ামের সহায়তা অব্যাহত রাখার কথা উল্লেখ করি। ডব্লিউএসআইএসে বিশেষ সম্মাননা : বিশ্বব্যাপী জাতিসংঘের বহুমাত্রিক অংশীদারদের প্ল্যাটফর্ম ডব্লিউএসআইএস ফোরামের চেয়ারম্যান হিসেবে আমার বিশেষ সম্মাননা লাভ একটি ঐতিহাসিক অর্জন। এই অর্জন গোটা জাতির অর্জন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের সফলতার অর্জন। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত ডব্লিউএসআইএস ফোরামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হাইলেভেল ট্র্যাক সেশনের সমাপনী অনুষ্ঠানে আইটিইউ মহাসচিব হাউলিন ঝাউ আমার হাতে ‘সার্টিফিকেট অব এক্সিলেন্স’ সম্মাননা তুলে দেন। আমি ডিজিটাল যুগকে সম্ভাবনার ও চ্যালেঞ্জের বিষয় বলে উল্লেখ করে কতগুলো সর্বজনীন বিষয়ের ওপর গুরুত্ব প্রদানের আহ্বান জানাই : - ডিজিটাল রূপান্তরের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ সব দেশের জন্য একই রকম নয়, বরং প্রত্যেক দেশকে নিজের চাহিদা ও প্রয়োজন অনুযায়ী প্রযুক্তিকে ব্যবহার করতে হবে। বিশ্ববাসীকে বুঝতে হবে যে, ডিজিটাল প্রযুক্তি মানুষের জন্য, মানুষ ডিজিটাল প্রযুক্তির জন্য নয়। - ডিজিটাল রূপান্তরের পাশাপাশি যে বিষয়টি সকলের জন্য অনিবার্য তা হলো ডিজিটাল নিরাপত্তা। এই ডিজিটাল নিরাপত্তা কোন দেশ এককভাবে নিশ্চিত করতে পারবে না। সুতরাং ডব্লিউএসআইএস ফোরামকে সকল দেশকে সচেতন করতে হবে এবং এক সঙ্গে কাজ করার জন্য একটি ডিজিটাল নিরাপত্তা প্লাটফর্র্ম গড়ে তুলতে হবে। নিরাপত্তার ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা, প্রযুক্তি ও তথ্য শেয়ারিংয়ের জন্য উইসিস ফোরাম একটি বিশেষায়িত প্ল্যাটফর্র্র্ম গড়ে তুলতে পারে। - ডিজিটাল যুগে মেধাসম্পদ রক্ষা করা বড় চ্যালেঞ্জ। প্রচলিত মেধাসম্পদ ডিজিটাল যুগে রূপ পরিবর্তন করবে। তাই নতুন ধারার মেধাসম্পদের জন্য আইনগত অবকাঠামোসহ সচেতনতার প্রয়োজন হবে। বিশ্বকে সেই অবস্থাগুলোকেও মোকাবেলা করতে হবে এক সঙ্গে। - ডিজিটাল রূপান্তরের ফলে সরকার ব্যবস্থা, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-কলকারখানা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে অভাবনীয় পরিবর্তন হচ্ছে। দুনিয়ার দরকার ডিজিটাল দক্ষতাসম্পন্ন মানুষ। সে কারণে এমন শিক্ষা ব্যবস্থার প্রচলন করতে হবে যা আগামী প্রজন্মকে ডিজিটাল যুগের উপযোগী করে গড়ে তুলতে পারে। যারা এরই মাঝে প্রচলিত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছেন তাদের দিতে হবে ডিজিটাল দক্ষতা। উইসিস ফোরামকে এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালন করতে হবে। CERN (Conseil Europeen Pour La Recherche Nucleaire) পরিদর্শন : জেনেভা সফরকালে আমি পৃথিবীর সর্ববৃহৎ Particle Physics Laboratory : European Organi“ation for Nuclear Research (CERN) পরিদর্শন করি। CERN-এর সঙ্গে বাংলাদেশের ইতোপূর্বে স্বাক্ষরিত চুক্তির আলোকে নিউক্লিয়ার গবেষণা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্র বৃদ্ধির লক্ষ্যে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। CERN বাংলদেশে একটি ফিজিক্স সম্মেলন করার প্রস্তাব করেন। বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিশ্বের অন্যতম ডব্লিউএসআইএস পুরস্কারের একটি উইনার এবং ৮টি চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে নিল : তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিশ্বের অন্যতম অবদানের জন্য ডব্লিউএসআইএস ১৮টি উইনার প্রাইজ ও ৭২টি চ্যাম্পিয়ন প্রাইজ সদস্য দেশগুলোর বিভিন্ন সংস্থাকে প্রতিবছর প্রদান করে থাকে। এবার ডব্লিউএসআইএস পুরস্কারের জন্য সারা বিশ্ব হতে ১১৪০টি আবেদন পড়ে। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল বা বিসিসির ‘বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডিজিটাল আর্কিটেকচার এবং ই- গভর্ন্যান্স ইন্টারঅপারেবিলিটি ফ্রেমওয়ার্ক’ প্রকল্প এই উইনার পুরস্কার পায়। এই পুরস্কারটি ছিল ডব্লিউএসআইএস এ্যাকশন লাইন ক্যাটাগরি-৬ এনাব্লিং এনভায়রনমেন্ট ক্যাটাগরিতে। ডব্লিউএসআইএস ফোরাম-১৯ অনুষ্ঠানে উইনার পুরস্কার গ্রহণ করি এবারের ফোরামের চেয়ারম্যান হিসেবে আমি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক। চ্যাম্পিয়ন পুরস্কারগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্যাটাগরি-২ ইনফরমেশন এ্যান্ড কমিউনিকেশন ইনফ্রাস্ট্রাকচারে রয়েছে সরকারের ডেভেলপমেন্ট অব আইসিটি ইনফ্রা-নেটওয়ার্ক অব বাংলাদেশ গবর্নমেন্ট বা ইনফো সরকার প্রকল্প। ক্যাটাগরি-৯-এ ই-লার্নিংয়ে আছে সরকারের শিক্ষক বাতায়ন। ক্যাটাগরি-১২ ই-এনভায়রনমেন্টে আছে ই-ক্লাইমেট জাস্টিস এ্যান্ড রিসাইলেন্স থ্রো কমিউনিটি রেডিও এ্যাট কোস্টাল এরিয়া অব দ্য বে অব বেঙ্গল বাংলাদেশ। এটি বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও এ্যান্ড কমিউনিকেশন (বিএনএনআরসি)-এর প্রকল্প। ক্যাটাগরি-১৩ ই-এগ্রিকালচারে রয়েছে ডিও ডেটা টু কন্ট্রোল লেট ব্লাইট ফাংজাই ডিজিস ইন পটেটো ইন বাংলাদেশ। এটি এমপাওয়ার সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের একটি উদ্যোগ। ক্যাটাগরি-১৫-এ রয়েছে আইটি ফর দ্য ডিফারেন্টলি এ্যাবল প্রজেক্ট। এটি ব্রিজ ফাউন্ডেশনের। ক্যাটাগরি-১৬ মিডিয়া বিভাগে পেয়েছে এ্যাওয়ারনেস অন ই রাইট টু ইনফরমেশন (ই-আরটিআই) থ্রো কমিউনিটি রেডিও। এটি বাংলাদেশ এনজিও নেটওয়ার্ক ফর রেডিও এ্যান্ড কমিউনিকেশন (বিএনএনআরসি)-এর প্রকল্প। ক্যাটাগরি-১৭তে পেয়েছে এ টু আইয়ের মোবাইল বেজড এজ ভেরিফিকেশন বিফোর ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন টু স্টপ চাইল্ড ম্যারিজ। ঢাকা, ২৫ জুলাই ১৮, সর্বশেষ আপডেট ২৫ অক্টোবর ১৯ লেখক : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, কলামিস্ট, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাস-এর চেয়ারম্যান-সাংবাদিক, বিজয় কী-বোর্ড ও সফটওয়্যারের জনক
×