ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

পরীক্ষায় আলামত মিলেছে

চাকরির প্রলোভনে ধর্ষণ, রিহ্যাবের দুই পরিচালক কারাগারে

প্রকাশিত: ১১:১৭, ১ অক্টোবর ২০১৯

চাকরির প্রলোভনে ধর্ষণ, রিহ্যাবের দুই পরিচালক কারাগারে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর ধানম-িতে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত রিহ্যাবের দুই পরিচালক শাকিল কামাল চৌধুরী ও ইঞ্জিনিয়ার মহিউদ্দিন সিকদারকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সোমবার আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ধানম-ি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ আশফাক রাজীব হাসান মামলার তদন্ত শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত গ্রেফতারকৃত শাকিল ও মহিউদ্দিনকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। অপরদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাস চন্দ্র অধিকারী জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারের পাঠানো আদেশ দেন। এদিকে সোমবার সকালে পুলিশ ওই নারীর ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠান। ফরেনসিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে বলে ঢামেক হাসপাতালের ওসিসির সমন্বয়কারী চিকিৎসক ডাঃ বিলকিস বেগম জানান। দুপুরে তিনি জানান, ওই নারীর ফরেনসিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। পুলিশ ডিএনএ টেস্টের জন্য পরণের কাপড় দিয়েছে। সেগুলোর ডিএনএ পরীক্ষাও করা হবে। প্রতিবেদনগুলো পেলে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেয়া হবে। তবে ওই নারীর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ধানম-ি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ আশফাক রাজীব হাসান জানান, রবিবার রাতে ভুক্তভোগী ওই নারী ধানম-ি থানায় মামলা করলে রাতেই পুলিশ ধানম-ির ১৩ নম্বর রোডের ৮ নম্বর বাড়ির ই ১/বি নম্বর ফ্ল্যাটের থেকে রিহ্যাবের পরিচালক শাকিল কামাল চৌধুরী ও ইঞ্জিনিয়ার মহিউদ্দিন সিকদারকে গ্রেফতার করা হয়। মামলায় ওই তরুণী অভিযোগ করেন, রবিবার রাতে চাকরির জন্য ধানম-ি ১৩ নম্বর রোডের ওই বাড়িতে তাকে ডেকে নেয়া হয়। পরে সেখানে যাওয়ার পর তাকে ওই দু’জন ধর্ষণ করেন। মামলার আবেদনে বলা হয়, আসামি শাকিল কামাল চৌধুরীর সঙ্গে ভিকটিমের ৭/৮ মাস আগে ফেসবুকে পরিচয় হয়। ভিকটিমকে চাকরি দেয়ার কথা বলে আসামি তাকে ঢাকায় আসতে বলে। গত ২৬ সেপ্টেম্বর ওই তরুণীর সঙ্গে আসামি শাকিল দেখা করে। এর দু’দিন পর তরুণীর ভাইয়ের নম্বরে কল দিয়ে তাকে অফিসে ডেকে পাঠান শাকিল। পরে ওই তরুণী শাকিলের অফিসে পৌঁছালে সে ও ইঞ্জিনিয়ার মহিউদ্দিন সিকদার মিলে তাকে ধর্ষণ করে। পরে আসামিরা বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য ভয়ভীতি দেখান ও হুমকি দেন। ধানম-ির থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোঃ পারভেজ ইসলাম জনকণ্ঠকে জানান, রবিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চাকরির কথা বলে ওই তরুণীকে ধানম-ির ১৩ নম্বর রোডের ওই বাড়িতে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে রিহ্যাবের দুই পরিচালক শাকিল কামাল চৌধুরী ও ইঞ্জিনিয়ার মহিউদ্দিন সিকদার মিলে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন। পরে সন্ধ্যার দিকে ওই তরুণী ওই ভবন থেকে বের হয়ে ধানম-ি থানায় এসে অভিযোগ করেন। পরে রাতে পুলিশ সেখানে থেকে রিহ্যাবের দুই পরিচালককে আটক করা হয়। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীও দিয়েছেন। এদিকে ধানম-ির ওই ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা জানান, ধানম-ির ওই ফ্ল্যাটের ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, বোরকা পড়া ওই তরুণী ওই ফ্ল্যাটে প্রবেশ করেন। এর কিছুক্ষণ পর বের হয়ে যান। এরপর তরুণী পুলিশ নিয়ে ওই ফ্ল্যাটে ঢুকে র‌্যাহাবের দুই পরিচালক গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যান। গ্রেফতারকৃত রিহ্যাবের দুই কর্মকর্তার পরিবার জানান, রাতে ওই তরুণী ওই ফ্ল্যাটে কেন একা গিয়েছিল? পুলিশ সঠিক তদন্ত করলে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসতে পারে।
×