ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গা সঙ্কটের শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১১:০২, ১ অক্টোবর ২০১৯

রোহিঙ্গা সঙ্কটের শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই ॥ প্রধানমন্ত্রী

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি রোহিঙ্গা ইস্যুতে কারও সঙ্গে লড়াই করতে চান না। তিনি এই সঙ্কটের শান্তিপূর্ণ সমাধান চান। সোমবার ওয়াশিংটন পোস্টের সাপ্তাহিক সাময়িকী টুডে’স ওয়ার্ল্ডভিউকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে একথা বলেন। তিনি বলেন, আমি কারও সঙ্গে লড়াইয়ে জড়াতে চাই না। আমি এই পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ একটি সমাধান চাই। কারণ, তারা (মিয়ানমার) আমার নিকটতম প্রতিবেশী। খবর বাসসর। টুডে’স ওয়ার্ল্ডভিউয়ের বৈদেশিক নীতিবিষয়ক সাংবাদিক ঈশান থারুর লিখিত ‘রোহিঙ্গা সঙ্কট বাংলাদেশের বোঝা হয়ে থাকতে পারে না: বলেন প্রধানমন্ত্রী’ শিরোনামে সাক্ষাতকারটি প্রকাশিত হয়। এতে শেখ হাসিনার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, কিন্তু যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মনে করে, মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞায় কাজ হবে, তাহলে তো খুবই চমৎকার। তবে, আমি এই পরামর্শ দিতে পারি না। শেখ হাসিনা জানান, তিনি এই ইস্যুটি নিয়ে মিয়ানমারের কার্যত বেসামরিক নেতা নোবেল বিজয়ী আউং সান সুচির সঙ্গেও আলোচনা করেছেন। তিনি (সুচি) এই পরিস্থিতির জন্য দেশটির সামরিক বাহিনীকে দায়ী করেন। তিনি আমাকে বলেছেন, সেনাবাহিনী তার কথা খুব একটা শোনে না। ভারতে ২০১৬ সালে আয়োজিত আন্তর্জাতিক শীর্ষ সম্মেলনকালে তাদের মধ্যে ওই বৈঠকটি হয়। এরপর থেকে সুচি দেশটির সামরিক বাহিনীর সিদ্ধান্তকেই সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন এবং এমনকি তিনি জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীকে বোঝাতে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটিও উচ্চারণ করেন না। শেখ হাসিনা ওই সাক্ষাতকারে বলেন, এখন আমি দেখতে পাচ্ছি যে তিনি (সুচি) তার অবস্থান থেকে সরে এসেছেন। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চুক্তি মেনে চলা উচিতÑওয়ালস্ট্রীট জার্নালকে প্রধানমন্ত্রী ॥ এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ইতোপূর্বে সম্পাদিত চুক্তি বাস্তবায়ন করতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সাইড লাইনে চলতি সপ্তাহে নিউইয়র্কের ওয়ালস্ট্রীট জার্নালের সাংবাদিক ড্যান কিলেরকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যেতে বাধ্য করার বিষয়ে তিনি বিবেচনা করবেন কিনা জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী ওয়ালস্ট্রীট জার্নালকে বলেন, অবশ্যই তাদের নিজ দেশে তাদেরকে ফিরে যেতে হবে। ওয়ালস্ট্রীট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়, তবে, বাংলাদেশ সেটা করতে বল প্রয়োগ করবে, তা তিনি (শেখ হাসিনা) মনে করেন না। তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দৃশ্যত রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার বিষয়ে মিয়ানমারকে রাজি করাতে ব্যর্থ হচ্ছে। কিন্তু, আমি কাউকে এজন্য দোষারোপ করতে পারি না, কেননা, মিয়ানমার কারও কথাই শুনছে না। ওয়ালস্ট্রীট জার্নালের প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে জানায়, বাংলাদেশ উদ্বাস্তুদের রাখবে কিন্তু তাদের উপস্থিতি বাংলাদেশের জন্য ক্ষতির কারণ হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ভূখ- মাত্র ১ লাখ ৪৭ হাজার বর্গকিলোমিটারের এবং আমাদের ১৬ কোটি জনসংখ্যা রয়েছে, কাজেই এই বিপুল মানুষকে কিভাবে আমরা দীর্ঘ সময় ধরে আশ্রয় দিয়ে রাখতে পারি? আমাদের স্থানীয় জনগণের কষ্ট হচ্ছে, তারা যেখানে বাস করছে সেখানে আমাদের বনভূমির একটি বড় অংশ ইতোমধ্যে উজাড় হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে বর্তমানে যে ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা আশ্রয় গ্রহণ করেছে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন বলে ওয়ালস্ট্রীট জার্নালের ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের বিষয়ে মিয়ানমারের কাছ থেকে আরও বেশি সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন’ শীর্ষক প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়। নিবন্ধে বলা হয়, শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের দুরবস্থার প্রতি সহানুভূতিশীল।
×