ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদে বাড়ি ফেরা

প্রকাশিত: ১১:৩৭, ৮ আগস্ট ২০১৯

ঈদে বাড়ি ফেরা

ঈদ মানেই উৎসব আর আনন্দ। নাড়ির টানে গ্রামে ফিরে যাবারও এক পুলকিত অনুভব। শহরের কর্ম-কোলাহলের জীবন থেকে সাময়িক বিরতিতে ছায়াঘন পল্লী জননীর স্নিগ্ধ পরশ এক অনাবিল স্বস্তি। উৎসবপ্রিয় জাতি আমরা। তাই সাড়ম্বরে, আয়োজনে নতুন উদ্দীপনায় ধর্মীয় অনুষ্ঠান থেকে আরম্ভ করে জাতীয় দিবসগুলোও পালন করতে ভালবাসি। ঈদের আনন্দ তেমনই এক উৎসবমুখর আয়োজন। ঈদ-উল-আজহার ধর্মীয় আবহ পশু কোরবানিকে কেন্দ্র করে। ফলে নতুন কাপড় কেনার চাইতেও বেশি ধুম পড়ে যায় গরু-ছাগল-দুম্বা ইত্যাদি ক্রয়-বিক্রয়ের মহাসমারোহে। এ তো গেল ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা। তাকে সামলাতে মানুষ যখন গ্রামের বাড়িতে আনন্দ মেলায় শরিক হয়, তেমন খুশির আমেজ সবাইকে শেকড়ের গভীরে নিয়ে যায়। গ্রামে গিয়ে কোরবানি দেয়া, নিকট আত্মীয়ের সঙ্গে একাত্ম হওয়া, তার চেয়েও বেশি সবাইকে নিয়ে উৎসব-আয়োজনকে সফল করে তোলা এক মনোজ্ঞ পরিবেশ। তবে এমন যাত্রা সব সময় নির্বিঘœ ও নিরাপদ হয় না। প্রথমত দেশের বাড়িতে যাওয়ার জন্য টিকেট কেনার একটি ঝক্কি ঝামেলা তো থাকেই। সোজা পথে টিকেট পাওয়াটা অনেক কঠিন, বরং কালো পথে বেশি দামে কেনাটা ততটাই সহজ। সিংহভাগ ঘরমুখো মনুষকে এভাবেই টিকেট সংগ্রহ করতে হয়। তারপরেও যাত্রাপথে কত ভোগান্তি পোহাতে হয়। কতিপয় অঞ্চল এখন বন্যার পানিতে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। অবিরাম বর্ষণ, নদীর পানি আর প্রবল বন্যায় সড়ক-মহাসড়কের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। সড়ক পরিবহন অধিদফতর উদ্যোগ নিয়ে বেহাল অবস্থাকে সামলানোর চেষ্টা করে। তবে বন্যার কারণে পরিস্থিতির খুব বেশি উন্নতি হয়নি। এমন বিপন্ন অবস্থায় দেশ আরও এক দুর্যোগ মোকাবেলা করছে। এই মুহূর্তে ডেঙ্গুর প্রকোপে সারাদেশ আতঙ্কিত। ডেঙ্গুজ্বরের ভয়াবহতায় ঈদের আনন্দ এবং যাত্রা দুটোকেই নানাভাবে ম্লান করে দিচ্ছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে রাজধানী ঢাকা থেকে আক্রান্ত রোগীরা যদি গ্রামে-গঞ্জে যায় তাহলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়বে। এসব ব্যাপারে গণসচেতনতা অত্যন্ত জরুরী। বলা হচ্ছে গণপরিবহন বাস, ট্রেন, লঞ্চে মশক নিধন ওষুধ ছিটানো হবে। এসব করেও কতখানি পার পাওয়া যাবে বলা মুশকিল। সতর্কতা আর সাবধানতার কোন বিকল্প নেই। সবাইকে নিজ দায়িত্বে ঈদের আনন্দ যাত্রাকে মোকাবেলা করতে হবে। সামান্য অনিয়ম পরিস্থিতি বিপরীত দিকে মোড় নিতে সময় নেবে না। দুঃসময়কে আমলে নিতে না পারলে আনন্দ আয়োজন সুখকর এবং স্বস্তিদায়ক হবে না। এমন সচেতনতায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অস্থির সময়ের ক্রান্তিকাল পার করতে হবে। উৎসব আর আয়োজন বছরের বিশেষ কয়েকটা দিনকে কেন্দ্র করেই গণমানুষের মধ্যে সাড়া জাগায়। ঈদ আনন্দ কারও যেন কোন বিপত্তির কারণ না হয়, এই প্রত্যাশাও থাকল প্রত্যেকের জন্য।
×