ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া হাইভোল্টেজ সেমিফাইনাল আজ

প্রকাশিত: ১০:২৮, ১১ জুলাই ২০১৯

 ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া হাইভোল্টেজ সেমিফাইনাল আজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অস্ট্রেলিয়া সর্বশেষ যে সাত বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলেছে সেখানে কখনই হারেনি তারা। আগের এগারো বিশ্বকাপে পাঁচবারের শিরোপজয়ী অসিরা ‘ডিফেন্ডিং’ চ্যাম্পিয়ন। বড় মঞ্চে স্নায়ুর চাপ সামলে কিভাবে সাফল্য তুলে নিতে হয় সেই মন্ত্র ভালই জানা তাদের। শেষ পর্যন্ত হাল ছেড়ে না দেয়ার মানসিকতার জন্য যারা ‘অদম্য’ হিসেবে পরিচিত। সেই তাদের সঙ্গে কি আজ পারবে ইংল্যান্ড? প্রশ্নটা অমূলক নয়। যেখানে তিনবার ফাইনাল আর দুইবার সেমিফাইনালে উঠে একবারও শিরোপা ছোঁয়া হয়নি কুলিন দেশটির। সর্বশেষ ১৯৯২ সালের পর সেমিতে ওঠা দলটি এবার দীর্ঘ ২৮ বছরে ইতিহাস গড়ার স্বপ্ন দেখছে। সাম্প্রতিক ফর্ম এবং একঝাঁক পাওয়ার ক্রিকেটে ঠাসা ইংলিশদের সাফল্য সেই স্বপ্নকে আরও উস্কে দিচ্ছে। ঘরের মাটিতে দুরন্ত-দুর্বার ছন্দে ইয়ন মরগান পাচ্ছেন জেসন রয়, জো রুট, বেন স্টোকস, জোফরা আরচারদের মতো তুখোড় সব পারফর্মার। সবমিলিয়ে ১২তম ওয়ানডে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আজ লড়াইটা হতে পারে জমজমাট। এজবাস্টনে খেলা শুরু বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে তিনটায়। সেই ১৯৭১ থেকে এ পর্যন্ত মুখোমুখি ১৪৮ ওয়ানডের ৮২টিতে জয় অস্ট্রেলিয়ার। ইংল্যান্ডের জয় ৬১। টাই ২ ও পরিত্যক্ত ৩। আর বিশ্বকাপে ৮ দেখায় ৬ জয় অস্ট্রেলিয়ার। ১৯৯২ সালের পর বিশ্বকাপে কখনই অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে পারেনি ইংল্যান্ড। এবার ইতিহাসের সেরা দল নিয়ে মরগানবাহিনী কী পারবে অসিদের থামাতে? সেটিই দেখার অপেক্ষা। ২০১৫ বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর বদলে যাওয়া ইংল্যান্ড ছিল এবারের আসরে হট ফেবারিট। গত চার বছরে পাওয়ার ক্রিকেটের পসরা সাজিয়ে একের পর এক সাফল্য তুলে ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বরে উঠে এসেছিল ইয়ন মরগানের দল। উদ্বোধনী ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে উড়িয়ে দিয়ে তাদের শুরুটাও ছিল প্রত্যাশিত। কিন্তু পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মতো হিসেবের বাইরে থাকা দুটি দলের কাছে হারের পর লীগপর্বের মধ্যপর্যায়ে বদলে গিয়েছিল সমীকরণ। সেমির স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল পাকিস্তান ও বাংলাদেশ। কিন্তু শেষদিকে ভারত ও নিউজিল্যান্ডের মতো শক্তিশালী দুটি দলকে হারিয়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় মরগানবাহিনী। দীর্ঘ ২৭ বছর পর সেমিফাইনালে উঠে আসে ইংলিশরা। মজার বিষয়, ১৯৯২ সালে সর্বশেষ যখন তারা ফাইনাল খেলেছিল সেবারও এবারের ফরমেটে সব দল সব দলের মুখোমুখি হয়েছিল। সেবার ফাইনালে হারতে হয়েছিল ইমরান খানের পাকিস্তানের কাছে। এবার তাদের জন্য কাজটা আরও বেশি কঠিন। সেমিতে আজ ‘ডিফেন্ডিং’ চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এ্যারন ফিঞ্চের নেতৃত্বে প্রত্যাশিত ক্রিকেট শৈলী উপহার দিয়ে সবার আগে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা দলটি অবশ্য লীগপর্বে আনুষ্ঠানিকতার শেষ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে মাত্র ১০ রানে হেরে বসে! ওল্ডট্র্যাফোর্ডে পরশু ভেস্তে যায় ডেভিড ওয়ার্নারের (১২২) দুর্দান্ত সেঞ্চুরি। প্রেটিয়াদের ৫ উইকেটে ৩২৫ রানের জবাবে ১ বল আগে ৩১৫ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। একে তো প্রতিপক্ষ আয়োজক ইংল্যান্ড, তার ওপর সেমি নিশ্চিত হওয়ার পর সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ওই হারের পর কিছুটা হলেও দুশ্চিন্তায় থাকবে অস্ট্রেলিয়া। কারণ শেষদিকে ভারত আর নিউজিল্যান্ডের মতো সেরা চারে থাকা দুটি দলকে হারিয়ে সেমিতে উঠে এসেছে ইংলিশরা। এটি হতে পারে এবারের বিশ্বকাপে আগুনে উত্তাপ ছড়ানো দ্বৈরথ। এখন পর্যন্ত একবারই সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল দু’দল। হেডিংলিতে ১৯৭৫-এ প্রথম বিশ্বকাপে সেমিতে এই অসিদের কাছে নাস্তানাবুদ হয়েছিল ইংলিশরা। তবে আধুনিক সময়ে এবারের মতো এত ভাল দল ইংল্যান্ডের আর কখনই ছিল না। জেসন রয়, জনি বেয়ারস্টো, জস বাটলার, বেন স্টোকস, জোফরা আরচার, লিয়াম প্লাঙ্কেট, মার্ক উডদের নিয়ে পাওয়ার ক্রিকেটের পসরা সাজিয়ে আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর দল হিসেবে ঘরের মাটিতে বিশ্বকাপ খেলছে মরগানের দল। এই ইংল্যান্ডকে হারাতে হলে অস্ট্রেলিয়ার সব বিভাগকেই জ্বলে উঠতে হবে। আসরে ডেভিড ওয়ার্নার, এ্যারন ফিঞ্চ ব্যাট হাতে ছন্দে আছেন। মিডলঅর্ডারে ইনজুরিতে বাদ পড়া উসমান খাজার স্থলে আজ বড় ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপে অভিষেক হচ্ছে পিটার হ্যান্ডসকম্বের। ব্যাটিংয়ে নিষ্প্রভ স্টিভেন স্মিথকেও জ্বলে উঠতে হবে। মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স, জ্যাসন বেহেডর্ফকে নিয়ে চ্যাম্পিয়নদের পেস আক্রমণ অনেক শক্তিশালী। সুস্থ হয়ে ওঠা অলরাউন্ডার মার্কাস স্টয়নিস আজ খেলবেন বলে জানানো হয়েছে। দলের একমাত্র স্পিনিং অলরাউন্ডার হিসেবে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের দায়িত্বও অনেক।
×