ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

বাগেরহাটে নদী ও খালখেকোরা ধরাছোঁয়ার উর্ধে

প্রকাশিত: ০৯:৩৪, ২৯ জুন ২০১৯

 বাগেরহাটে নদী ও খালখেকোরা ধরাছোঁয়ার উর্ধে

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ প্রভাবশালী একশ্রেণীর লোকজন সরকারী খাল দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে। খালখেকো এসব ব্যক্তির কারণে এবং নাব্য সঙ্কটে মানচিত্র থেকে মুছে যেতে বসেছে এলাকার অনেক নদী-খাল। ফলে কৃষিকাজ ও নৌযোগাযোগে দেখা দিয়েছে চরম দুরবস্থা। বাড়ছে জলাবদ্ধতা ও পরিবেশ দূষণ। সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলার চিতলমারী উপজেলার অধিকাংশ নদী-খাল দখল ও নাব্য সঙ্কটের কারণে অস্তিত্ব এখন বিলীন হতে বসেছে। ফলে কৃষিপ্রধান এ অঞ্চলের নৌযোগাযোগ ও চাষাবাদ চরম হুমকির মুখে। এ অবস্থায় হাজার হাজার চাষী দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। ফলে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী নদী ও খাল পুনঃখননসহ দখল মুক্ত করার জোর দাবি জানিয়েছেন। এলাকাবাসী জানান, গত ৩০ বছরের মধ্যে এ অঞ্চলের নদী ও খাল খনন না করার ফলে এর অধিকাংশ ভরাট হয়ে গেছে। ফলে চিতলমারী সদর বাজারের হক ক্যানেলসহ বেশকিছু স্থানে খালের পাশে বসবাসকারী কয়েক প্রভাবশালী যে যার মতো অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে দখল করে নিচ্ছে সরকারী খাল। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে চিতলমারী সদর বাজারসহ আশপাশ এলাকায় বসবাসকারীদের। উপজেলার বড়বাড়িয়া, কলাতলা, হিজলা, শিবপুর, চিতলমারী সদর, চরবানিয়ারী ও সন্তোষপুরসহ ৭টি ইউনিয়নে প্রধান ৩টি নদী ও প্রায় ৫০টি খাল এবং শতাধিক শাখা খাল রয়েছে। যার অধিকাংশ এখন নাব্যা সঙ্কটে পড়েছে। এক সময়ের মধুমতি, চিত্রা ও বলেশ্বর নদীর অস্তিত্ব এখন বিলীন প্রায়। এসব নদী এখন কালের সাক্ষী মাত্র। এসব নদী থেকে উঠে আসা হক ক্যানেল, পাটনিবাড়ি, পেত্নিমারী, নারায়ণখালী, বাঁশতলী, খাগড়াবুনিয়া, শরৎখালীসহ প্রায় ৫০টি খাল ও শতাধিক শাখা খালের একই অবস্থা। এসব নদী ও খালে নাব্য সঙ্কট দেখা দেয়ায় মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে এর অধিকাংশ ভরাট হয়ে গেছে। ফলে ঠিকমতো জোয়ার-ভাটার পানি ওঠা-নামা না করার ফলে সেচ মৌসুমে চাষীরা ফসলে ঠিকমতো পানি দিতে পারে না। ফলে রবিমৌসুমে চাষাবাদ নিয়ে চিন্তিত এসব চাষী। বিষয়টি যেন দেখার কেউ নেই এমন অভিমত প্রকাশ করলেন সাধারণ লোকজন। চিতলমারী সদর বাজার সংলগ্ন কুরমণি গ্রামের কৃষক রেজাউল দাড়িয়া, হরেকৃষ্ণ বিশ্বাস, বুদ্ধদেব বসুসহ অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, এভাবে খাল দখল হতে থাকলে কিছুদিনের মধ্যে এলাকায় নদী ও খালের কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না এবং চাষাবাদের পানি মিলবে না। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার জানান, যেহেতু ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দিন দিন নিচে নেমে যাচ্ছে সেহেতু নদী ও খালের পানির ওপর এলাকার কৃষিকাজ পুরোপুরি নির্ভরশীল।
×