ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও সম্মাননা নজরুলজয়ন্তী উদযাপন

প্রকাশিত: ১০:৩৮, ১৫ জুন ২০১৯

 সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও সম্মাননা  নজরুলজয়ন্তী উদযাপন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জীবনের প্রতিটি মুহূর্তেই প্রেরণার উৎস মানবতাবাদী কবি নজরুল। বাংলা সাহিত্য ও শিল্পের বহুমাত্রিকতায় বাঙালীর নিত্যদিনের সাথী হয়ে ওঠেন জাতীয় কবি। শোষণের বিরুদ্ধে তার কবিতা ও গানে মেলে দ্রোহের সন্ধান। তেমনি মানবিকতার অন্বেষণে তার সৃষ্টির আলোয় জেগে ওঠে স্বপ্ন, প্রেম কিংবা সৌন্দর্যবোধ। সেই কৃতজ্ঞতাবোধে শুক্রবার ছুটির দিনে স্মরণ করা হলো কাজী নজরুল ইসলামকে। তারই গানের সুরে, কবিতার পঙ্ক্তিমালায় জানানো হলো শ্রদ্ধাঞ্জলি। উদ্্যাপিত হলো কবির ১২০তম জন্মবার্ষিকী। এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কবি নজরুল ইনস্টিটিউট। বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আলোচনায় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও নজরুল পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে সাজানো হয় অনুষ্ঠান। নজরুলসঙ্গীত প্রচার, প্রসার ও স্বরলিপি প্রণয়নে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দুই নজরুল সঙ্গীতশিল্পী সেলিনা হোসেন ও যোসেফ কমল রড্রিক্সকে প্রদান করা হয় নজরুল পুরস্কার। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। আলোচনায় অংশ নেন কবিপৌত্রী ও ইনস্টিটিউটের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য খিলখিল কাজী। ইনস্টিটিউটের সাবেক নির্বাহী পরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার পক্ষে স্মারক বক্তৃতা পাঠ করেন তার ছেলে মুসা হুদা। ইনস্টিটিউটের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মোঃ আব্দুর রাজ্জাক ভূঞা। বক্তব্যে জাতীয় জাদুঘরে ‘নজরুল কর্নার’ পুনঃস্থাপনের প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করে কে এম খালিদ বলেন, আগে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে ‘নজরুল কর্নার’ ছিল বলে শোনা যায়। সম্ভবত স্থান সংকুলান বা অন্য কোন কারণে বর্তমানে সেটি নেই। তবে কারণ যাই হোক না কেন, শীঘ্রই জাতীয় জাদুঘরে ‘নজরুল কর্নার’ পুনঃস্থাপন ও পুনরুদ্ধার করা হবে। এর মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম নজরুলের সাহিত্য ও সৃষ্টিকর্ম সম্পর্কে ভালভাবে জানতে পারবে এবং নজরুল চর্চা আরও গতিময় হবে। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন নক্সা অনুযায়ী ঢাকার নজরুল ইনস্টিটিউটের নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ দ্রুত শুরু করা হবে। নজরুল পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পীদ্বয়কে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, নজরুল পুরস্কার প্রদান কোন অনুদান বা সহমর্মিতা নয়, এটি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পীদের প্রাপ্য সম্মান ও অর্জন। আলোচনা শেষে ছিল নজরুলের সৃষ্টির ঐশ্বর্যে গাঁথা সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী শিল্পীরা। উচ্চতর বিভাগের শিল্পীরা গেয়ে শোনায় ‘এ কি অপরূপ রূপে মা তোমায় হেরিনু পল্লী জননী’, ও ‘দুর্গম গিরি কান্তার মরু দুস্তর পারাবার হে’ শিরোনামের দুটি গান। সম্মেলক কণ্ঠে শিশু বিভাগের শিল্পীরা পরিবেশন করে ‘জয় হোক জয় হোক’। সুরেলা কণ্ঠে শ্রোতার হৃদয় রাঙিয়ে ইয়াসমিন মুশতারি গেয়ে শোনান ‘তুমি কোন্ পথে এলে হে মায়াবি কবি’ ও ‘ এ নহে বিলাস’ শীর্ষক নজরুল সঙ্গীত। এছাড়া একক কণ্ঠে সঙ্গীত পরিবেশন করেন ইয়াকুব আলী খান, সুমন চৌধুরী, জান্নাত-এ-ফেরদৌসী ও রেহানা মশিউর রহমান। মুদ্রার সঙ্গে অভিব্যক্তির সম্মিলনে নজরুলের গানের সুরে নৃত্য পরিবেশন করেন ওয়ার্দা রিহাব ও তার দল। নজরুলের কবিতা আবৃত্তি করেন নিরঞ্জন অধিকারী।
×