ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই তরুণ নিহত

প্রকাশিত: ১০:১৪, ৮ জুন ২০১৯

 রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই তরুণ নিহত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এবারের ঈদের ছুটিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। তিনদিনের এই ছুটিতে রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই তরুণ নিহত হয়েছে। এ সময় অন্তত পক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। এছাড়া বনানীতে ছাদ থেকে পড়ে এক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। মিরপুর কালশী রোডে খাল সংস্কার কাজের গর্তে পড়ে এক নারী মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ঈদের পরেরদিন বৃহস্পতিবার ছুটির দিনে ঢাকার হানিফ ফ্লাইওভারে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। এতে ৫ জন আহত হয়েছে। পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘণ্টাখানেকের ব্যবধানে এই দুর্ঘটনা দুটি ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ঈদের পরেরদিন বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে হানিফ ফ্লাইওভারের সালাউদ্দিন হাসপাতালের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তিন আরোহীসহ একটি মোটরসাইকেল ফ্লাইওভারের রেলিংয়ের সঙ্গে ধাক্কা লেগে রাস্তা ছিটকে পড়েন তারা। এতে পেছনে থাকা ইমন (২০) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহীর মাথা রেলিংয়ের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে ঘটনাস্থলে তিনি মারা যান। নিহত ইমন রাজধানী সিদ্ধেশ্বরী ডিগ্রী কলেজের অনার্সের ছাত্র ছিলেন। তিনি রাজধানীর শনিরআখড়ার শেখদী বটতলা এলাকায় থাকতেন। এ সময় মোটরসাইকেলে তার সঙ্গী নাসিম (২০) ও সোহাগ (১৯) নামে তার সমবয়সী দুই তরুণ আহত হন। তাদের ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ডিএমপি ওয়ারী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নয়ন কুমার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে তিনজন বন্ধু একটি মোটরসাইকেলে করে যাত্রাবাড়ীর শেখদী বটতলা এলাকার বাসা থেকে যাত্রাবাড়ী মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার দিয়ে শহীদ মিনারে যাচ্ছিলেন। এ সময় সালাউদ্দিন হাসপাতালের কাছে মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফ্লাইওভারের রেলিংয়ের সঙ্গে ধাক্কা লেগে তারা ছিটকে পড়েন। এতে পেছনে থাকা ইমনের মাথা রেলিংয়ের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলে ইমনের মৃত্যু হয়। এদিকে এর প্রায় এক ঘণ্টা পর একইদিন বিকেলে হানিফ ফ্লাইওভারের সায়েদাবাদের দিকের ঢালে অপর একটি মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে গেলে রিয়াজ আহমেদ কাউসার (১৮) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তার বন্ধু তৌহিদুল ইসলাম (১৮) আহত হয়েছেন। নিহতের বাবার নাম আব্দুল লতিফ। গ্রামের বাড়ি কাউসার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের ঝালকুড়িতে। নিহতের বড় ভাই ফরিদ আহমেদ রিপন জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে কাউসার ও তার বন্ধু তৌহিদুল মোটরসাইকেলে করে সায়দাবাদ এলাকায় অতিক্রম করার সময় হানিফ ফ্লাইওভারে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গেলে তারা ছিটকে পড়ে যান। এতে গুরুতর আহত হন তারা। পরে পথচারীরা তাদের উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালের জরুরী বিভাগে আনেন। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক ছোট কাউসারকে মৃত ঘোষণা করেন। ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আব্দুল খান জানান, ময়নাতদন্তের জন্য দু’জনের মরদেহ ঢামেক মর্গে পাঠানো হয়। পরে তাদের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অন্যদিকে একইদিন দুপুরে মিরপুরে সড়কে পাল্লা দেয়ার সময় দুই বাসের চাপায় পড়ে এক সিএনজি ধুমড়ে মুচড়ে যায়। এতে সিএনজি অন্ততপক্ষে ৫ যাত্রী আহত হয়েছে। এতে স্থানীয় জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে বাস দুটি ভাংচুরের পর একটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনে বাংলা স্কুলের সামনের সড়কে পরীস্থান ও খাজাবাবা পরিবহন নামে দুটি বাস বেপরোয়াভাবে পাল্লা দিচ্ছিল। এ সময় একটি আরেকটিকে ওভারটেক করতে গেলে এর নিচে চাপা পড়ে একটি সিএনজি অটোরিক্সা ও একটি রিক্সা ধুমড়ে মুচড়ে যায়। এতে ওই গাড়িগুলো থাকা তিন যাত্রী আহত হয়। আহতদের হাসপাতালে পাঠানোর পর স্থানীয় জনতা বাস দুটি আটকে ভাংচুর শুরু করে। পরে একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা কামরুল হাসান জানান, উত্তেজিত জনতা পরীস্থান বাসে আগুন দিলে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট গিয়ে আগুন নেভায়। ডিএমপির পল্লবী জোনের সহকারী কমিশনার এস এম শামীম জানান, পরীস্থান বাসের চালক মোঃ ইব্রাহিম (৩৫)কে আটক করা হয়েছে। অন্য বাসের চালক পালিয়ে যায়। তাকে আটকের চেষ্টা চলছে। পুলিশ জানায়, ঈদের পরেরদিন বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনে বেপরোয়া দুই বাসের পাল্লাপাল্লিতে দুর্ঘটনার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করেছিল স্থানীয় জনতা। দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে জড়িত বাস চালকদের শাস্তি দাবি করে বিক্ষোভ করছেন তারা। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনকারীরা। অপরদিকে ঈদের দিন বুধবার বিকেলে রাজধানীর বনানীতে একটি বাড়ির ৬ তলা ছাদ থেকে পড়ে ইলোনা তাকওয়া মৃদু (১৮) নামে এক তরুণী মৃত্যু হয়েছে। তিনি সাবেক পুলিশ সুপার কোহিনুর মিয়ার মেয়ে। মৃদু ধানম-ির সানিডেল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এলএলবির শিক্ষার্থী ছিলেন।
×