ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

দ্বিতীয় মেয়াদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন মোদি

প্রকাশিত: ০৯:৩৮, ৩১ মে ২০১৯

 দ্বিতীয় মেয়াদে ভারতের  প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন মোদি

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ দ্বিতীয় মেয়াদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। আমন্ত্রিত রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদসহ ৮ হাজার দেশী-বিদেশী অতিথির উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটায় নয়াদিল্লীতে রাষ্ট্রপতি ভবনের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে মোদি ও তার মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ নেন। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান ছাড়াও আট হাজার অতিথি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও এনডিটিভি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্বিতীয় মেয়াদের মন্ত্রিসভায় বেশ কিছু নতুন মুখ ঠাঁই পেয়েছেন। নির্বাচনে বিজেপির বিশাল জয়ের পর বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ নেন। এর কিছুক্ষণ আগেই নতুন মন্ত্রিসভায় কারা থাকছেন, তার একটি তালিকা অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে। রাষ্ট্রপতি ভবনে উপস্থিত হওয়ার আগে বিকেল পাঁচটায় নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা নরেন্দ্র মোদির বাসভবনে হাজির হন। বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ তাদের মোদির বাসভবনে আমন্ত্রণ জানান। ২৩ মে ভারতের ১৭তম লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোটের বিজয় নিশ্চিত হওয়ার পর দ্বিতীয় মেয়াদে এনডিএ জোট সরকারের মন্ত্রিসভা চূড়ান্ত করতে মঙ্গলবার দীর্ঘ বৈঠক করেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ ও নরেন্দ্র মোদি। পাঁচ ঘণ্টার এই বৈঠকে নতুন মন্ত্রিসভার সম্ভাব্য সদস্যদের বিষয়ে আলাপ হয়। মন্ত্রিসভার তালিকায় যাদের নাম আছে তারা হলেন অমিত শাহ, রবি শঙ্কর প্রসাদ, পিযূষ গয়াল, স্মৃতি ইরানি, নির্মলা সীতারমণ, কিরেন রিজিজু, সুষমা স্বরাজ, রাজনাথ সিং, নিতীন গড়কড়ি, ধর্মেন্দ্র প্রধান, ড. হর্ষবর্ধন, কৃষাণ পাল গুরজার, শ্রীপাদ নায়েক, নরেন্দ্র সিং ঠমার, সুরেশ প্রভু, রাও ইন্দ্রজিত সিং, ভিকে সিং, অর্জুন রাম মেগওয়াল, রাম বিলাস পাসওয়ান, হারশিমরাত কাউর, ডিভি সদানন্দ গৌড়, বাবুল সুপ্রিয়, প্রকাশ জাভাদেকার, রামদাস আদাভালে, জিতেন্দর সিং, নিরঞ্জন জ্যোতি, পারশোত্তম রুপালা, তাওয়ার চান্দ গেহলত, রত্তন লাল কাটারিয়া (প্রথমবার মন্ত্রী), রমেশ ফকিরিয়াল নিশাঙ্ক (প্রথমবার মন্ত্রী), আরসিপি সিং (প্রথমবার মন্ত্রী), জি কিষাণ রেড্ডি (প্রথমবার মন্ত্রী), সুলেশ আঙ্গাদি (প্রথমবার মন্ত্রী), এ রবিন্দ্রনাথ, কৈলাশ চৌধুরী (প্রথমবার মন্ত্রী), প্রহলাদ জোশি (প্রথমবার মন্ত্রী), সোম প্রকাশ (প্রথমবার মন্ত্রী), রামেশ্বর তেলি (প্রথমবার মন্ত্রী),সুব্রাত পাঠক (প্রথমবার মন্ত্রী), দেবশ্রী চৌধুরী (প্রথমবার মন্ত্রী), রিতা বহুগুনা জোসি (প্রথমবার মন্ত্রী)। বুধবার থেকে মোদি ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ দফায় দফায় একাধিকবার বৈঠক করেন। নতুন মন্ত্রিসভায় বিজেপি সভাপতি অমিত শাহও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় পেতে পারেন বলে কথা শোনা যায়। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি কেবিনেটে যোগ দেননি। সন্ধ্যা ৭টায় শপথ অনুষ্ঠানের আগে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয় নয়াদিল্লীতে অবস্থিত রাষ্ট্রপতি ভবন। অনুষ্ঠানে প্রায় আট হাজার অতিথি উপস্থিত থাকবেন। শপথ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, নেপাল ও ভুটান সরকারের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। ভারতের গণমাধ্যম ও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আগের সরকারের বেশিরভাগ মন্ত্রী নতুন মেয়াদে নিজ নিজ পদে বহাল থাকবেন। তবে পশ্চিমবঙ্গ থেকে মন্ত্রিসভায় নতুন একজন যোগ দিয়েছেন। এবারের নির্বাচনে বিজেপির অন্যতম সেরা চমক এ রাজ্যেই। একই সঙ্গে বিজেপির নতুন জায়গা করে নেয়া উড়িষ্যা ও উত্তর-পূর্বের মতো অঞ্চলগুলো থেকে প্রতিনিধি সংযোজন হবে। এছাড়া স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র এবং জেটলি সত্যিই না থাকলে অর্থ মন্ত্রণালয়ে রদবদল আসতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মন্ত্রিসভার কিছু পরিবর্তন মূলত আনা হবে জোটের কয়েকজনকে জায়গা করে দেয়ার জন্য; যেমন, নিতিশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেড এবং আকেলি দল রয়েছে এ তালিকায়। বিহারে বিজেপির শক্তিশালী মিত্র নিতিশ কুমার ওই রাজ্যে দলটিকে বিরাট বিজয় অর্জন করতে ভূমিকা রাখেন। সেই অধিকারে তিনি মন্ত্রিসভায় দুটো পদ চেয়েছেন। বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ এবার মন্ত্রিসভায় আসতে যাচ্ছেন, নির্বাচনে জয়ের পর থেকে এ পর্যন্তু বহুবার এমন গুজব শোনা গেছে। তবে বিজেপির দাবি, দল তার সাংগঠনিক স্তম্ভকে হারাতে রাজি নয়। রাজ্যের ভোটে জয়লাভ করতে ও রাজ্যসভায় তাদের সদস্য সংখ্যা বাড়াতে সংগঠনকে শক্তিশালী রাখা দরকার বলে মনে করছে দলীয় নেতৃত্ব। এজন্য অমিত শাহকে একান্তভাবেই শুধু দলের দায়িত্বে থাকতে হবে। শপথ গ্রহণকে সামনে রেখে নরেন্দ্র মোদি বৃহস্পতিবার সকালে মহাত্মা গান্ধী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির প্রতি শ্রদ্ধা জানান। নয়াদিল্লী ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালেও শ্রদ্ধা জানান তিনি। এবারের শপথ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদসহ প্রতিবেশী দেশের সরকারপ্রধান ও দেশ-বিদেশের বিশিষ্টজনসহ রেকর্ড ৮ হাজার অতিথির যোগ দেয়ার কথা রয়েছে। কংগ্রেস প্রধান রাহুল গান্ধী, ইউপিএ’র চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধী এবং নয়াদিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী আম আদমি পার্টির অরবিন্দ কেজরিওয়ালেরও শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে। প্রথমে থাকার কথা বললেও নির্বাচনী সহিংসতার অভিযোগ এনে শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেননি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
×