ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীর গ্রামে প্রতারণার ফাঁদ

প্রকাশিত: ০৮:৩৭, ১৫ মে ২০১৯

রাজশাহীর গ্রামে প্রতারণার ফাঁদ

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ সহজ শর্তে ঋণের প্রলোভন দেখিয়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে চার প্রতারক উধাও হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এই কাণ্ড ঘটেছে বাগমারা উপজেলায়। উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়নের শীতলাই গ্রামে ‘জনকল্যাণ সংস্থা’ নামে ‘চার প্রতারকের’ খোলা প্রতিষ্ঠানটি এখন বন্ধ। এতে বিপাকে পড়েছেন এখানে অর্থ লগ্নিকারীরা। ভুক্তভোগীরা জানান, সম্প্রতি দুই ব্যক্তি এলাকায় নিজেদের ‘জনকল্যাণ সংস্থা’ নামে একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা পরিচয় দেন। এই পরিচয়ে তারা শীতলাই গ্রামের সাইদুর রহমানের বাড়ি ভাড়া নেন। কথা ছিল তারা সাইদুরকে পাঁচ লাখ টাকা এবং মাসিক ১০ হাজার টাকা ভাড়া দেবেন। এ নিয়ে একটি চুক্তিও করেন প্রতারকরা। গত রবিবার সাইদুরকে সব টাকা পরিশোধ করার কথা ছিল। জানা গেছে, বাড়ি ভাড়া নিয়ে এক সপ্তাহ আগে প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর আগের দুজনের সঙ্গে যুক্ত হন আরও দুজন। এই চারজন মিলে উপজেলার মাড়িয়া, গোয়ালকান্দি ও হামিরকুৎসা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা থেকে দুই শতাধিক গ্রাহক সংগ্রহ করেন। সহজ শর্তে ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা ঋণ দেয়ার প্রলোভন দেখান ওই চারজন। এ জন্য গ্রাহকের কাছে প্রতি লাখের জন্য ১০ হাজার ২০০ টাকা করে জামানত দিয়ে প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট ফরম পূরণের কথা বলেন। রবিবার তাদের ঋণ দেয়ার কথা ছিল। গ্রাহকদের জানানো হয়েছিল, ঋণ দেয়ার সময় তারা জামানতের টাকাও ফেরত পাবেন। আর এই ফাঁদে পড়েন এলাকার দুই শতাধিক গ্রাহক। তাদের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা এখন জড়িতরা। প্রতারণার শিকার গ্রাহকদের ভাষ্য, রবিবার সকালে ঋণ নেয়ার জন্য তারা সংস্থার অফিসে গিয়েছিলেন। কিন্তু গিয়ে দেখতে পান তালা ঝোলানো। অর্থ আদায়কারী চার ব্যক্তির হদিস নেই। এই খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে প্রতারিত লোকজন ভিড় করেন। ওই বাড়ির মালিক সাইদুর রহমান বলেন, কখন ভাড়াটিয়ারা চলে গেছেন, তিনি টের পাননি। তারা এমন প্রতারক কোনভাবেই বুঝতে পারেননি তিনি। উপজেলার কাঁঠালবাড়ি গ্রামের গিয়াস উদ্দিন সমিতিতে জামানত দিয়েছিলেন। প্রতারিত হয়ে তিনি বলেন, লোভে পড়েই প্রতারিত হয়েছেন তারা। অনেকেই নিজের এমনকি পরিবার পরিজনের নামেও বিপুল অংকের জামানত দিয়ে প্রতারিত হয়েছেন। মাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবদুল আজিজ জানান, বাড়ির মালিক তাকে সংস্থার বিষয়ে জানিয়েছিলেন। সংস্থার সঙ্গে মালিকের যে চুক্তি হওয়ার কথা ছিল সেখানে তারও হাজির থাকার কথা ছিল। এই বিষয়ে কথিত জনকল্যাণ সংস্থার কর্মকর্তাদের দেয়া পাঁচটি মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তার সবই বন্ধ পাওয়া যায়। এদিকে জনকল্যাণ সংস্থা নামে কোন এনজিও বা প্রতিষ্ঠানের বাগমারায় কাজ করার বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের জানা নেই বলে জানান বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিউল ইসলাম। তিনি বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানটির কোন কাগজপত্র তার দফতরে নেই। প্রতারিত হওয়া ব্যক্তি ও সংস্থাটির কাজ করার বিষয়ে কেউ আগে জানায়নি। তবে তিনি খোঁজ নিয়ে আইনত ব্যবস্থা নেবেন।
×