ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ার ভেলুরপাড়া রেল স্টেশন দশ বছর ধরে বন্ধ

প্রকাশিত: ১০:০৮, ৯ মে ২০১৯

 বগুড়ার ভেলুরপাড়া রেল  স্টেশন দশ বছর  ধরে বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ লালমনিরহাট সেকশনের বগুড়ার ভেলুরপাড়া রেলস্টেশন প্রায় দশ বছর ধরে বন্ধ। রেল কর্তৃপক্ষের কথা, লোকবলের অভাবে দেশের অনেক স্টেশন বন্ধ করা হয়েছে। ভেলুরপাড়া তার একটি। কবে চালু হবে তার নিশ্চয়তা দিতে পারছে না রেল বিভাগ। বলা হয় স্টেশন মাস্টার, সহকারী স্টেশন মাস্টার, পয়েন্টসম্যান, সিগনালম্যান, টিকেট বিক্রেতার পদে লোক নিয়োগ দেয়া হলেই স্টেশনটি চালু করা সম্ভব। এদিকে রেল স্টেশন কার্যক্রম বন্ধ হলেও লোকাল ট্রেন থামে। যাত্রীরা বেসরকারী ট্রেন পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের নিয়োজিত দুই ব্যক্তির কাছ থেকে টিকেট কিনে ট্রেনে ওঠেন। তবে এক্সপ্রেস ও মেল ট্রেন থামে না। কখনও এক্সপ্রেস ট্রেন ধীরগতিতে চললে যাত্রীরা ওঠে। কখনও শিকল (চেন) টেনে কেউ ট্রেন থামালে সুযোগসন্ধানের যাত্রীরা ট্রেনে ওঠে। কেউ টিকেট কালেক্টরের কাছে থেকে টিকেট কেনে। কেউ বিনা টিকেটে ভ্রমণ করে। অনেকেই ওঠে ট্রেনের ছাদে। বগুড়ার ওপর দিয়ে (সান্তাহার-লালমনিরহাট/সান্তাহার-বোনারপাড়া সেকশন) প্রতিদিন আপ ও ডাউন ১৬টি ট্রেন চলাচল করে। যার মধ্যে আছে ঢাকা-বগুড়া-ঢাকা দুটি আন্তঃনগর ট্রেন লালমনি এক্সপ্রেস ও রংপুর এক্সপ্রেস। এ ছাড়া করতোয়া দোলনচাঁপা,পদ্মরাগ এক্সপ্রেস, উত্তরবঙ্গ মেইলসহ চারটি লোকাল ট্রেন। আন্তঃনগর ট্রেন ছাড়া অন্য ট্রেনগুলোর স্টপেজ ছিল ভেলুরপাড়া রেল স্টেশনে। বন্ধ হওয়ার পরও কিছুদিন সিগনালম্যান, পয়েন্টসম্যান ট্রেন থামাত। সূত্র জানায়, ভেলুরপাড়া রেল স্টেশনে টিকেট বিক্রি ও মালবাহী ট্রেনের জন্য পণ্য বুকিং ছিল লাভজনক। বগুড়া থেকে লালমনিরহাট যাওয়ার দিকে তিনটি স্টেশন পরই ভেলুরপাড়া রেল স্টেশন। পঞ্চাশের দশকের শেষে স্টেশনটি স্থাপিত হয় সুখানপুকুর ও সোনাতলা স্টেশনের মধ্যবর্তী স্থানে। স্টেশনটি যাত্রীদের কাছে পরিচিত হয়ে ওঠে। যাত্রী সংখ্যা বেড়ে যায়। যদিও এই স্টেশনে ট্রেন ক্রসিংয়ের ব্যবস্থা ছিল না। তারপরও উন্নত স্টেশন হওয়ায় একজন স্টেশন মাস্টারের সঙ্গে একজন সহকারী স্টেশন মাস্টার, ২ সিগনালম্যান, ২ পয়েন্টসম্যান, একজন গেটকীপার ছিলেন। বর্তমানে স্টেশনটির অবস্থা একেবারেই বেহাল। স্টেশন ভবনের পলেস্তারা খসে পড়েছে। টেলিফোন ও সিগনাল ডিপার্চার টোকেন টেলিফোন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আসবাবপত্রে ঘুণ পোকা ধরেছে। সিগনাল কেবিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সন্ধ্যার পর স্টেশন ভবন ও আশপাশের এলাকা মাদক ও অসামাজিক কার্যকলাপের আখড়া হয়ে ওঠে। তারপরও দিনেরবেলায় ট্রেনের সময় অনেক সুযোগসন্ধানী যাত্রী জটলা পেকে থাকে। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো : মাঝেমধ্যে ট্রেনগুলো হেঁটে চলার গতিতে অথবা তারচেয়ে কম গতিতে চললে যাত্রীরা ট্রেনে উঠে বসে। একটা সময় যে স্টেশন ছিল জমজমাট তা এখন আর নেই। তবু লোকজন আসে। খোঁজখবর নেয় কবে চালু হবে। এভাবেই দিন, মাস, বছর চলে যায়....।
×