ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

ফুটপাথে ব্যবসা করার দাবিতে হকারদের সড়ক অবরোধ

প্রকাশিত: ১১:১১, ৮ মে ২০১৯

ফুটপাথে ব্যবসা করার দাবিতে হকারদের সড়ক অবরোধ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হলিডে মার্কেট নয়। ফুটপাথে ব্যবসা করার দাবিতে রাজধানীর ব্যস্ততম সড়ক গুলিস্তানের গোলাপ শাহ মাজার এলাকার সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন হকাররা। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেন ভাসমান হকাররা। এতে গুলিস্তান ও আশপাশের এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ৫ ঘণ্টা ধরে সড়ক অবরোধের ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে রোজার প্রথম দিনই অফিস শেষে বাড়ি ফেরার পথে ভোগান্তির শিকার হন তারা। দূর-দূরান্ত থেকে আসা অনেক বাস এসব এলাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে দেখা গেছে। মতিঝিলে এডিসি এসএম শিবলী নোমান জনকণ্ঠকে জানান, বিকেল ৪টায় হকাররা সড়ক থেকে সরে যাওয়া যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যায়। এছাড়া বকেয়া বেতনের দাবিতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও ডেমরায় পাটকল শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ ও কয়েকটি গাড়ি ভাঙ্গচুর চালিয়েছে। পুলিশ জানায়, হকাররা বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নগর ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। পরে তারা গোলাপ শাহ মাজারের সামনে নর্থ সাউথ রোড বন্ধ করে দেয়। এরপর বেলা ১টার দিকে পাশে গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু স্কয়ারের সামনের সড়কও অবরোধ করে। তারা এতে পল্টন থেকে ফুলবাড়িয়া হয়ে সদরঘাট, গুলিস্তান থেকে মতিঝিল পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরের হকাররা জিরো পয়েন্ট থেকে সচিবালয়মুখী আব্দুল গণি রোডের খে ওয়াসার পয়ঃনিষ্কাশনের বড় বড় পাইপ ফেলে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে দেখা যায়। এতে সচিবালয়সহ আশপাশের জিপি ও বায়তুল মোকাররম, মতিঝিল পাতাল মার্কেট রোড প্রায় সব কয়েকটি সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অনেক যান বাহন এসব রাস্তা দিয়ে আসার পর আটকে পড়ে। বিশেষ করে রাজধানীর বিভিন্ন রুটের বাস এই গুলিস্তান হয়ে যায় বলে অবরোধের কারণে বহু যানবাহন গুলিস্তানের আশপাশের সড়কে আটকা পড়ে। কলাবাগান থেকে ভুলতাগামী মেঘলা পরিবহনের বাসের কয়েক চালক ও হেলপার জানান, দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা ধইরা তারা জিপিও, মতিঝিল পাতাল সড়কের সামনে ও বঙ্গভবনের সামনে বইয়া রইছি। গাড়ি এক চুলও লড়ে নাই। এখন সড়ক ছেড়ে দেয়ায় আস্তে আস্তে বাস চলছে। কবে নাগাদ যাত্রী নিয়ে গন্তব্য পৌঁছবেন। তা আল্লাহ জানেন। এদিকে বিকেলে সাড়ে ৩টায় অফিস ছুটি হলে ঘরমুখো মানুষ পড়ে চরম বিড়ম্বনায়। মতিঝিল ও পল্টন চারপাশ ঘিরে যান চলাচল বন্ধ থাকায় ঘরমুখী অফিস কর্মকর্তা ও কর্মচারী চরম ভোগান্তিতে পড়েন। উপায়ান্তর না দেখে হেঁটেই রওনা হতে হয় তাদের গন্তব্যস্থল পারিবারিক বন্ধন নিজ বাড়িতে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মতিঝিল ট্রাফিক জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) এসএম বজলুর রশিদ জানান, ফুটপাথ এবং সড়ক বেদখলের কারণে নাগরিক দুর্ভোগ হয়। সেজন্য ফুটপাথমুক্ত রাখি আমরা। এজন্য কিছু দিন আগে গুলিস্তান এলাকার ফুটপাথের সকল হকারকে সরিয়ে দিয়েছি। এখন তাদের যদি কোন দাবি থাকে সেটি সিটি কর্পোরেশনের কাছে করতে পারে। কিন্তু রাস্তা বন্ধ করে দিয়েও তা করতে পারে না। তাই আমরা তাদের বুঝানোর চেষ্টা করছি। পরে তাদের বুঝিয়ে বিকেল ৪টার দিকে সড়ক ছেড়ে দিলে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়। এর আগে শাহবাগ থানার পরিদর্শক (পেট্রোল) আবুল বাশার জানান, গুলিস্তান গোলাপ শাহ মাজারের চারদিক দিয়ে রাস্তা বন্ধ রেখেছে হকারা। গোলাপ শাহ মাজারের কোন পাশ দিয়েই কোন যানবাহন চলাচল করছে না। তিনি জানান, অফিস ছুটি হওয়ার পর রাস্তা বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষ কষ্টে পড়ছে। আমরা হকারদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। যাত্রাবাড়ী ও ডেমরায় সড়ক অবরোধ ও গাড়ি ভাংচুর ॥ বকেয়া বেতনের দাবিতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও ডেমরায় কাঠে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ বিক্ষোভ মিছিল করেছে পাটকল শ্রমিকরা। মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে ঢাকার লতিফ বাওয়ানী মিল ও করিম জুট মিলের কয়েকশ’ শ্রমিক এসব সড়কে অবস্থান নেন। সেখানে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ডেমরা চৌরাস্তা এবং স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে এবং দোকানপাটে হামলা চালায়। পরে পুলিশ কাদুনে গ্যাস ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ডেমরা থানার ওসি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, কিছুটা উত্তেজনা তৈরি হলেও আমরা পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে করে যানচলাচল স্বাভাবিক করে দেই।
×