ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর

মার্ক টোয়েনের সমাধির পরে গোর্কির কথা

প্রকাশিত: ০৯:০০, ৩ মে ২০১৯

মার্ক টোয়েনের সমাধির পরে গোর্কির কথা

১৯৮১ সালে বস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিসন্দর্ভ লেখার সময়ে ক্যামব্রিজে এক সন্ধ্যায় আমাদের বাসায় এসেছিলেন উপমহাদেশের বিখ্যাত গায়ক ভূপেন হাজারিকা। অন্যদের মধ্যে সবান্ধবী উপস্থিত ছিলেন এখনকার সুগায়ক ফেরদৌস ওয়াহিদের বড় ভাই আমাদের বন্ধু কামাল ওয়াহিদ। বাঁ হাতে পানের পাত্র ধরে চোখ দুটি বন্ধ করে ভূপেন গাইলেন তার হৃদয় নিংড়ানো যাযাবর গাঁথা- ‘আমি এক যাযাবর...’। গাওয়ার ক্রমে দুবার গাইলেন- যাযাবরের পৃথিবীব্যাপী ঘুরে বেড়ানোর এক কৃত্য আমি মার্ক টোয়েনের সমাধি পরে গোর্কির কথা বলেছি। তারপর জিজ্ঞেস করলেন হাটফোর্ডে মার্ক টোয়েনের বাড়ি আর জাদুঘর দেখেছেন? বস্টন থেকে হাটফোর্ড সড়ক ধরে ২ ঘণ্টার পথ। সে সময় সেখানে যাওয়ার সুযোগ কিংবা সময় হয়নি। ১৯৮১-এ ঢাকার বনানীতে আমাদের বাড়িতে এক সন্ধ্যায় সেই গান পানের পাত্র বা হাতে ধরে স্বভাব সুলভ চোখ দুটি বন্ধ করে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ভূপেন গেয়েছিলেন সেই যাযাবর গাঁথা- কেন জানি আগের মতোই দু’বার গাইলেন সেই কলি : আমি মার্ক টোয়েনের সমাধি পরে গোর্কির কথা বলেছি। এ সময়েও উপস্থিত ছিলেন কামাল ওয়াহিদ ও তার আরেক সঙ্গীনি। আমি ও স্ত্রী সিতারা ম্লান মুখেই স্বীকার করেছি- আমরা তখনও মার্ক টোয়েনের বাড়ি আর জাদুঘর দেখিনি- দেখার সুযোগ হয়নি। সুযোগ হলো এবার-২০১৯ এর মার্চের শেষে। সিতারা, আমি, আমাদের ছেলে জয়, বউমা হিমি, নাতি অনিম ও অর্ন আর নাতনি অড়িকে নিয়ে ম্যাসাচুসেটসের ওয়েল্যান্ড থেকে কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যের হাটফোর্ডে একদিন ও এক রাত্রি থেকে মার্ক টোয়েনের বাড়ি ও জাদুঘর ঘুরে ঘুরে দেখেছি। ফিরে আসার পর আবার দেখেছি কামাল ওয়াহিদকে- টরন্টো থেকে এসেছেন আমাদের দেখতে, টোয়েন আর ভূপেনের কথা বলতে। ভুলে গিয়েছি মার্ক টোয়েনের পথ ধরে ভূপেন হাজারিকা অনেক আগেই গতায়ু। মার্ক টোয়েনের আসল নাম স্যামুয়েল লংহরন ক্লিমেন্স। মার্ক টোয়েন তার ছদ্মনাম। মিসিসিপি নদীতে তখনকার দিনে বাষ্প চালিত নৌযান অজরিপকৃত পথ ধরে পানির গভীরতা মেপে মেপে চলত। কমসে কম দুই ফ্যাদম বা ১২ ফুট গভীরতা এসব নৌযান চলার জন্য নিরাপদ ছিল। নদী এলাকার শ্রমিকদের ও নৌযানের মাল্লাদের ভাষায় টুকে টোয়েন বলে উচ্চারণ করা হতো আর টোয়েনের মার্ক বা নিশানার গভীরতা নৌযানের নিরাপদে চলার পথ নির্দেশ করত। এই টুয়ের অপভ্রংশ টোয়েন মার্ক শব্দের সঙ্গে নিরাপদ গভীরতার দ্যোতক হয়ে নৌযান চালক শ্রমিক মাল্লাদের মুখে বার বার উচ্চারিত হতো। ক্লিমেন্স যৌবনে মিসিসিপি নদীর নৌযানে কাজ করতেন। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে লেখক হিসেবে তিনি মার্ক টোয়েন নামটি গ্রহণ করেন। মার্ক টোয়েন স্যামুয়েল লংহর্ন ক্লিমেন্স নাম নিয়ে জন্ম নেন মিসোরি অঙ্গরাজ্যের ফ্লোরিডাতে, ১৮৩৫ সালের ৩০ নভেম্বরে। মিসোরীর হানিবল জনপদে তিনি তার শৈশব কাটান। মাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি স্কুল ছেড়ে জীবিকা হিসাবে মুদ্রাক্ষরের চাকরি নিয়ে তার বড় ভাইয়ের হানিবল জর্নালে নিবন্ধ ও হাস্যরসাত্মক রচনা লেখা শুরু করেন। পরে তিনি নিউইয়র্কে, ফিলাডেলকিয়া, সেন্ট লুই, সিনসিনাটিতে মুদ্রক হিসেবে কাজ করেন এবং সেসব শহরের গণগ্রন্থাগারে পড়াশোনা করতে থাকেন। পরে তিনি নিউঅর্লিন্স ও সেন্ট লুই শহরের মাঝে চলাচলরত নৌযানে মিসিসিপি নদীর পাইলট হিসেবে কাজ করেন। তার জীবন প্রবাহ তাকে একে একে সানফ্রান্সিসকোতে নিয়ে যায়, ইউরোপ ভ্রমণের সুযোগ দেয়, অলিভিয়া লেংডন নামের এক ধনাঢ্য মহিলার সঙ্গে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হয়ে কানেকটিকাটের হাটফোর্ডে স্ত্রীর অর্থানুকূল্যে থিঁতু হয়ে লেখায় মনোনিবেশ করার পরিবেশ সৃষ্টি করে। হাটফোর্ডে একটি ছোট টিলার ওপর টোয়েনের ৩ তলার সংরক্ষিত নিবাস ঘুরে ঘুরে এসব জেনেছি আমরা। তার এই নিবাস তখনকার এক নামী স্থপতির নকশা অনুযায়ী নির্মিত। টিলার ঢালে সবুজ ঘাসে মোড়া মাঠটি আলো আর অভিজ্ঞানের তন্ময়তা মনে ধরিয়ে দেয়। তার বসার, খাওয়ার, লেখার, বিলিয়ার্ড খেলার কামড়াসমূহ, তাদের ও তাদের কন্যা এবং অতিথিদের শোয়ার ঘর তখনকার আসবাবপত্রসহ এখনও নিখুঁতভাবে সাজানো আছে। তার লেখার কাগজ, কয়েকটি কলম, রান্নার তৈজসপত্র, চা কফির পেয়ালা পিরিচ, খাবার টেবিল ও বাসনপত্র তেমনি সাজানো অবস্থায় তার জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছে। তার নিরবচ্ছিন্ন সিগার খাওয়ার নিশানা হিসাবে এখনও সাজানো রয়েছে ধূমপানের জন্য তখনকার দিনের ব্যবহার্য ছোটখাটো জিনিসপত্র। তাদের সেবার জন্য পরিচারকদের রান্নাঘর থেকে ভিন্নতর সিঁড়ি ধরে খাবার, বসার ও শোয়ার ঘরে যাওয়া আসার সিঁড়ি ও পথ দেখে তখনকার শ্রেণী বৈষম্য আমাদের চোখে প্রকটভাবে ধরা পড়েছে। সবচেয়ে আকর্ষণীয় লেগেছে ভাবনা জাগানো তার লেখা ও ভাবার জন্য তৈরি সূর্যের আলোয় ভরানো এবং ছোট গাছ-গাছালির সান্নিধ্যে নিরন্তর, অক্লান্ত এবং বিঘ্ন বিহীন চর্চার নিলয় হিসাবে কাঁচ ঘেরা কামরাটি। আর চোখে লেগে মনের ভাবান্তরে এসেছে এসব ঘরের দেয়ালজুড়ে রাখা তার বই ও জর্নালে প্রকাশিত নিবন্ধাদির সংরক্ষণ দেখে। তার এই গৃহের দেয়ালে হাতে আঁকা প্যানেল, ভারত থেকে আনা অগ্নিআধার বা ফায়ার প্লেস, ছাপ দেয়া দেয়ালপত্র ও স্কটল্যান্ডের পাত্র ও প্রতীকাদি সকল দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার মতো সাজানো রয়েছে এই নিবাসে। টোয়েন হাটফোর্ডের এই বাড়িতে ১৭ বছর (১৮৭৪-১৮৯১) থেকে তার নামকরা বইগুলো লিখে গেছেন। এসবের মধ্যে সবচেয়ে নামকরা হয়েছে, এ্যাডভেঞ্জারস অব টম সয়ার (১৮৭৬), দি প্রিন্স এ্যান্ড দি পপার (১৮৮১), লাইফ অন দি মিসিসিপি (১৮৮৩), এ্যাডভেঞ্জারস অব হাকেলবারী ফিন (১৮৮৫) ও এ কানেকটিকাট ইয়াঙ্কি ইন কিং আরর্থাস কোর্ট (১৮৮৯)। এর মধ্যে এ্যাডভেঞ্জারস অব টম সয়ার ও এ্যাডভেঞ্জারস অব হাকলবারী ফিন আমি বার বার পড়েছি। নোবেল জয়ী উইলিয়াম ফকনার টোয়েনকে আমেরিকান সাহিত্যের পিতা হিসেবে মূল্যায়িত করেছেন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ১৯০৭ এ তাকে সম্মানসূচক সাহিত্যাচার্য উপাধি দিয়েছে। তার লেখা বই পড়া বেশ কঠিন। কারণ দুটি। এক. তিনি তার বইয়ের কুশীলবদিগকে তাদের সমসাময়িক আমেরিকার মধ্য দক্ষিণ এলাকার কথ্য ভাষায় ফুটিয়ে তুলেছেন। যাদের ইংরেজী মাতৃভাষা নয় তাদের এরূপ কথ্য ভাষা পড়তে এবং বুঝতে বার বার হোঁচট খেতে হয়। দুই. তখনকার যুক্তরাষ্ট্রের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, গণ ও শ্রেণী মানস বিষয়ে প্রাক-জ্ঞান না থাকলে বিভিন্ন ঘটনার বিষয়ে কুশীলবদের কথায় তিনি কি বলতে চাইছেন তা বোঝা সময় সাপেক্ষ। এতদ্বসত্ত্বেও ও তার এই উপন্যাস দুটিতে সাধারণ মানুষের আশা-আকাক্সক্ষা ধ্বনিত, বৈষম্যবিহীন মানব সমাজ প্রতিষ্ঠা ও রক্ষা করার বাসনা প্রতিফলিত হয়েছে এবং তখনকার আনুষ্ঠানিক শিক্ষার প্রক্রিয়াকে অধিকতর জীবনাশ্রয়ী অনুশীলনে উত্তরণ করার প্রয়োজন তুলে ধরেছে। টোয়েনের লেখায় তার রাজনৈতিক ও সামাজিক মতামত তখনকার সমাজ ও জীবন প্রবাহের পরিপ্রেক্ষিতে অনেকাংশে চরমপন্থীদের ভাবধারা প্রতিফলিত করেছে। তিনি সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক হাওয়াই ও ফিলিপিন্সের বিরুদ্ধে সে সময়কার অভিযানের প্রতিবাদ করেছেন ধারাল ভাষায়। ১৯০১ থেকে আমৃত্যু তিনি আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী লীগের সহসভাপতি হিসেবে ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদের, বিশেষত বেলজিয়ামের নৃপতি লিওপোন্ডের তীব্র সমালোচনা করেছেন। একই ভাব ধারায় প্রভাবিত থেকে তিনি আমেরিকার দাস প্রথাকে অসমর্থনীয় বলে গেছেন, বলেছেন যে যুক্তরাষ্ট্রে অশ্বেতাঙ্গদের জন্য কোন ন্যায়বিচার নেই। অবশ্য লোহিত ভারতীয়দের প্রতি তিনি তেমন সহানুভূতিশীল ছিলেন না। নারী অধিকার তিনি কড়া ভাষায় সমর্থন করে গেছেন, তাদের ভোটাধিকারের অনুকূলে তিনি জোরালো লেখা ও বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। তেমনি তিনি শ্রমিকদের অধিকারের অনুকূলে তার অবস্থান সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন। সাহিত্যাচার্য এলিজাবেথ বয়েল মাকলান বলেছেন, মার্ক টোয়েনের উপন্যাস ও অন্যান্য লেখা পড়ে ও বুঝে জানতে পারা যায় কিভাবে সে সময়ে মার্কিন জাতি ও সমাজ বেড়ে উঠেছে এবং তার প্রতীতি অনুযায়ী সকলকে প্রগতি, বিবর্তনের উপকরণ ও অংশ হিসাবে ভূমিকা রাখতে দিয়েছে। মার্ক টোয়েন ১৯১০ সালে ২ এপ্রিল কানেকটিকাটের রেডিংয়ে মারা যান। যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম টাফট তাকে আমেরিকান সাহিত্যের অমোচনীয় অংশ হিসেবে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। নিউইয়র্কের এলমিররের উডল্যান্ডে তিনি সমাহিত হন। তার সমাধির ওপর ১২ ফুট উঁচু (মার্ক টোয়েন অর্থাৎ ১২ ফুট) একটি স্মৃতিফলক তার একমাত্র তখনও জীবিত কন্যা ক্লারার ইচ্ছা অনুযায়ী স্থাপিত রয়েছে। আামদের বন্ধু ভূপেন হাজারিকা সম্ভবত সেই সমাধির স্মৃতিফলক দেখেছিলেন এবং সেভাবে দেখেই সে কথা তার মনকাড়া গানের কলি হিসেবে আমাদের জন্য রেখে গেছেন। আমরা এখন পর্যন্ত তা দেখার সুযোগ পাইনি। ভূপেন হাজারিকা পৃথিবী থেকে চলে যাওয়ার খবর শুনে আমি ও সিতারা ম্যাকসিম গোর্কির সঙ্গে মার্ক টোয়েনের মানসের মিলের কথা ভেবেছি। মার্ক টোয়েনের মতোই আলেকসী ম্যাকসিমভিচ পেশকভের ছদ্ম নাম ম্যাকসিম গোর্কি। গোর্কি তার লেখায় সাধারণ মানুষের কথা, দুঃখ-দারিদ্র, হতাশা, অধিকার ও আশা-আকাক্সক্ষার কথা বলে গেছেন। গোর্কির অবিস্মরণীয় সৃষ্টি ‘মা’ (উপন্যাস) ও ‘মানুষের জন্ম’ (বড় গল্প), ‘সূর্যের সন্তান’ (কল্পকাহিনী) যখনই পড়েছি তখনই মানুষের মর্যাদা, সম্মান ও আশা-আকাক্সক্ষাকে সর্বজনীন ও চিরন্তন বলে বোধ করেছি। ১৯০৬ সালে গোর্কি যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছিলেন, নিউইয়র্কের উত্তর এলাকায় আডিরনডন পর্বতমালা ঘুরে দেখার সময় অবিস্মরণীয় উপন্যাস ‘মা’ লিখেছিলেন। দু’যুগ আগে সিরাকিউজ থেকে সেন্টলরেন্স শহর পেরিয়ে সেখানে পাঠরত আমাদের বড় ছেলে শুভকে তুলে আডিরনডন পর্বতমালার মাঝখান দিয়ে সড়ক পথে গাড়ি চালিয়ে আমি ও সিতারা এই বিরলপ্রজ এলাকার প্রকৃতির অবারিত দান দেখে আভিভূত হয়েছি, ‘মা’ উপন্যাসের প্রাকৃতিক পটভূমির সাযুজ্য খুঁজে পেয়েছি। মার্ক টোয়েন তার লেখায় গোর্কির মতো তেমনি সকল কিছু ছাড়িয়ে সাধারণ মানুষের কথা ও কাহিনীর পটে তাদের সমতা স্থাপন ও অধিকার অর্জন এবং সমুন্নত রাখার ডাক দিয়ে গেছেন। প্রকৃতিকে মানুষের সৃষ্টিশীলতার প্রেক্ষিত হিসেবে রূপ দিয়েছেন। ১৯৮০-তে মস্কোতে গোর্কি জাদুঘর দেখার সুযোগ হয়েছিল আমার। গোর্কি মারা যান ১৯৩৪ এ, মার্ক টোয়েনের মারা যাওয়ার ২৪ বছর পরে। মতবিরোধ থাকা সত্ত্বেও তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের একচ্ছত্র শাসক যোশেফ স্টালিন তার শবধার বহনে শরিক হয়েছিলেন। মার্ক টোয়েনের কোন লেখা গোর্কি পড়েছেন কিনা জানা যায়নি। তথাপি মার্ক টোয়েনের সমাধির পরে গোর্কির কথার সেই কলি মানবতাবাদী সকল সৃজনশীল লেখকদের একাত্ববোধের প্রতি সকলের সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ জাগরিত রাখার ডাক হিসেবেই আমাদের কাছে চিরদিন বার বার ধ্বনিত হবে। লেখক : সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী
×