ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

তদন্ত পুলিশ কর্মকর্তারাই ফেঁসে যাচ্ছেন

সম্পত্তি দখলে পুলিশের সহযোগিতায় ইয়াবা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা

প্রকাশিত: ১০:১৯, ২৯ এপ্রিল ২০১৯

  সম্পত্তি দখলে পুলিশের সহযোগিতায় ইয়াবা  মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামে সীতাকুন্ড থানার অফিসার ইনচার্জ ইফতেখার হাসানসহ বর্তমানে জোরারগঞ্জ থানার ওসি, এক এসআই ও এক এএসআই মিলে এক মহিলাকে ইয়াবা মামলায় ফাঁসাতে গিয়ে নিজেরাই ফেঁসে যাচ্ছেন। পিবিআই ও সিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের তদন্তে বিষয়টি উঠে এসেছে। পুলিশের এসব কর্মকর্তার সহযোগিতায় বাদীর প্রথম স্ত্রীর ছেলে প্রথমে সৎমাকে ধর্ষণ, পরে অপহরণ ও সবশেষে অজ্ঞান অবস্থায় ওই মহিলার কোমরে ইয়াবা গুঁজে দেয়ার ঘটনা ঘটিয়েছে। পরে এই নারীকে পুলিশের পিকআপে তুলে দেয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে গত বছরের ২৯ আগস্টে। চার আসামি, অফিসার ইনচার্জসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তার এ অপরাধের তদন্ত করেছে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের এডিসি মাইনুল ইসলাম। পুলিশের প্ররোচনায় সিএমপির হালিশহর থানা এলাকায় স্বামীর বাড়িতে ধর্ষণ, নির্যাতন ও অপহরণ করে সীতাকু-ের কুমিরায় ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়ার এ ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু অপরাধী পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো প্রশ্রয় দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পুলিশের প্ররোচনায় ইয়াবা গুঁজে দেয়ার মামলায় গত ফেব্রুয়ারিতে খালেদা আক্তার জামিনে বেরিয়েছে। দীর্ঘ সাড়ে ৭ মাস পর গত ৩ এপ্রিল চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৬ এর বিচারক মঈন উদ্দিন শুনানি শেষে আসামি আলী শাহ, কামাল উদ্দিন, শাহাব উদ্দিন, নাছর উদ্দিন ও মোহাম্মদ রাকিবকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। এর আগে গত ২০ মার্চ এই মামলায় এসআই সিরাজ মিয়া ও এএসআই জাকির হোসেনসহ ১২ জনের অপরাধ আমলে নিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। মামলার ১২ আসামির মধ্যে ৭ জন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলেও আদালত রোকেয়া বেগম ও শামসুন নাহার নামে দুই আসামিকে জামিন দেয়। চট্টগ্রাম আদালত থেকে সংগৃহীত সিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের এডিসি মাইনুল ইসলামের তদন্ত রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, চাঞ্চল্যকর এ মামলার বিষয়ে গোয়েন্দা বিভাগ যেমন তদন্ত করেছে তেমনি প্রকাশ্যেও তদন্ত করেছে। ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সাক্ষ্য প্রমাণ নিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে তথ্য কালেকশনের পর ঘটনার আগে-পরে মোবাইল কলের প্রযুক্তি বিশ্লেষণ করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। ভিকটিমের জবানবন্দী ও বিবাদী জোবায়েরের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী থেকে তদন্ত কর্মকর্তা প্রমাণ পেয়েছেন যদিও পুলিশ ও অপরাধীরা মিলে ভিকটিম খালেদা আক্তারকে ইয়াবাসহ গ্রেফতার দেখিয়ে কারাবাস করিয়েছে, কিন্তু খালেদা নিরপরাধ যা তদন্তে উঠে এসেছে। ভিকটিমের স্বামীর দায়ের করা মামলায় আসামি কামরুল হাসান প্রকাশ খোকন, রোকেয়া বেগম প্রকাশ রেখা, মিজানুর রহমান প্রকাশ সুমন, শামসুন নাহার প্রকাশ আরজু, রাকিব, আলী শাহ, সাহাবুদ্দিন, কামাল উদ্দিন, নাসির উদ্দিন, জহিরুল আলম ও মোহাম্মদ জোবায়েরসহ অজ্ঞাতনামারা অপরাধের সঙ্গে জড়িত প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব বিবাদী সীতাকুন্ড থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেই মিথ্যা মাদক মামলা দিয়ে খালেদাকে ফাঁসিয়ে সম্পত্তি হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালিয়েছে।
×