ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

কুড়িগ্রামে বাঁধ সংস্কার না করায় হুমকিতে ৪০ গ্রাম

প্রকাশিত: ০৯:০২, ২৮ এপ্রিল ২০১৯

কুড়িগ্রামে বাঁধ সংস্কার না করায় হুমকিতে ৪০ গ্রাম

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ সদর উপজেলার সারডোব এলাকায় বন্যায় ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ মেরামত না হওয়ায় আসন্ন বর্ষা মৌসুমে ৪০ গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বাঁধের ভাঙ্গা অংশ দিয়ে পানি ঢুকে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি ফসলহানি ও নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ার আশঙ্কা করছেন নদী তীরের মানুষ। এলাকাবাসী বর্ষার আগেই বাঁধ মেরামতের দাবি জানালেও কর্তৃপক্ষ বলছে, অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় মেরামত বিলম্বিত হচ্ছে। সরেজমিন জানা গেছে, গত দুবছরের বন্যায় ধরলা নদীর তীরবতী সারডোব ও বড়ভিটা এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কয়েকটি স্থানে ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। গত বছর গ্রামবাসীর উদ্যোগে বাঁধ মেরামত করে কোনমতে চলাচল উপযোগী করা হয় বাঁধের ওপরের গুরুত্বপূর্ণ কুড়িগ্রাম-ফুলবাড়ী সড়কটি। বাঁধের রাস্তার অর্ধেক অংশ নদীতে বিলীন হওয়ায় বাকি অংশে বাঁশের পাইলিং দিয়ে ভাঙ্গন রোধের চেষ্টা করা হয়। গ্রামবাসী চাঁদা তুলে এই কাজ শুরু করে। পরে পানি উন্নয়ন বোর্ড বালির বস্তা দিয়ে সহায়তা করে। তবে এত কিছুর পরও রক্ষা পায়নি গুরুত্বপূর্ণ এই বাঁধটি। বাঁধের অনেক অংশ প্রায় উন্মুক্ত হয়ে রয়েছে। শুকনো মৌসুমে বাঁধ মেরামত না হওয়ায় চিন্তিত এলাকাবাসী। সংলগ্ন হলোখানা, রাঙ্গামাটি, চর কাগজিপাড়া, ভাঙ্গামোড়, খোঁচাবাড়ি, চর বড়াইবাড়ি, লক্ষ্মীকান্ত, দ: রাঙ্গামটি, ম-লপাড়াসহ প্রায় ৪০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ আশঙ্কা করছে বন্যা ও ভাঙ্গনের কবলে পড়ার। আর এতে ফসলহানির পাশাপাশি বালু জমে আবাদি জমি অনাবাদি হওয়ার আশঙ্কা করছে এলাকার মানুষ। সারডোব গ্রামের বাসিন্দা এনামুল হক ও ফিরোজ মিয়া জানান, ২০১৭ সালের বন্যায় জমির ওপর ব্যাপকহারে বালু পরে জমি অনাবাদি হয়ে যায়। এখনও অনেক জমি থেকে ৪-৫ ফুট বালুতে ঢেকে আছে। নতুন করে এবার প্লাবিত হলেও আবাদযোগ্য জমিই থাকবে কিনা সন্দেহ। হলোখানা গ্রামের কৃষক একরামুল ও আজিজুর রহমান জানান, বন্যার পানিতে ফসল ডুবে যাবার পাশাপাশি পরিবার পরিজন নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে ওঠার মতো উঁচু স্থানও নেই। এবার বাঁধটি ভেঙ্গে গেলে তারা কোথায় যাবেন তা চিন্তিত। বাঁধটি বিলীন হলে ব্যাপক ভাঙ্গনে বসতভিটা, স্কুল, রাস্তাসহ গ্রামটি পুরোপুরি বিলীনের আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। ছাটকালুয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল গফুর বলেন, ‘স্কুলটি এ বছর ভেঙ্গে গেলে আড়াইশ শিক্ষার্থীর লেখাপড়া অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।’ গত দুবছরে তারা মানববন্ধন ও সমাবেশসহ অনেক দেন দরবার করলেও বাঁধ ও সড়ক মেরামত না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছে। তারা দাবি করেছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড বারবার বাঁধটি রক্ষার আশ^াস দিলেও বরাদ্দ না পাবার কারণে কাজ করতে পারছে না। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আরিফুল ইসলাম জানিয়েছেন, সারডোবের বাঁধ মেরামতে অস্থায়ী প্রতিরক্ষার কাজ করতে ৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকার বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পেলে তারা ভাঙ্গন রোধে পদক্ষেপ নেয়ার আশা করছেন। বর্ষার আগে বরাদ্দ পেলে বাঁধ মেরামত সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
×