ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

মোকাব্বিরকে চেম্বার থেকে বের করে দিলেন ড. কামাল

প্রকাশিত: ১০:৪০, ৫ এপ্রিল ২০১৯

মোকাব্বিরকে চেম্বার থেকে বের করে দিলেন ড. কামাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে সাংসদ হিসেবে শপথ নেয়ায় মোকাব্বির খানকে চেম্বার থেকে বের করে দিলেন গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে মতিঝিলে কামাল হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাত করতে যান মোকাব্বির। হঠাৎ করে তাকে দেখে ক্ষেপে ওঠেন ড. কামাল। সঙ্গে সঙ্গে তিনি মোকাব্বিরকে চেম্বার থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। তখন কামাল হোসেনের চেম্বারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টসহ নিজ দলের কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আটজন প্রার্থী বিজয়ী হন। তাদের মধ্যে ছয়জন বিএনপির এবং দুজন গণফোরামের। ওই দুজন হলেন সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও মোকাব্বির খান। আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা সুলতান মনসুর মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে নির্বাচিত হন বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে। আর মোকাব্বির খান সিলেট-২ আসন থেকে নির্বাচিত হন গণফোরামের প্রতীক উদীয়মান সূর্য নিয়ে। তিনিই গণফোরাম থেকে প্রথম নির্বাচিত সাংসদ। ওই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে ফল প্রত্যাখ্যান করে বিএনপি ও গণফোরামসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তবে নানা নাটকীয়তা শেষে গত ৭ মার্চ শপথ নিয়ে সংসদ অধিবেশনে যোগ দেন সুলতান মনসুর। নির্বাচিত বাকিরা শপথ না নিলে আগামী ৩০ এপ্রিলের পর তাদের আসন শূন্য হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যেই শপথ নিলেন মোকাব্বির খান। মঙ্গলবার দুপুরে সংসদ ভবনে স্পীকারের দফতরে শপথ পাঠ করান স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। শপথ নেয়ার পর মোকাব্বির খান বলেছেন, দলীয় সিদ্ধান্তেই তিনি শপথ নিয়েছেন। সংসদের লবিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি সংসদে শতভাগ বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। তবে দলের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে প্যাড চুরির অভিযোগ আনা হয়। এমনকি তাকে দল থেকে বহিষ্কারের কথাও বারবার বলা হচ্ছে। দলের প্যাড চুরির অভিযোগ নাকচ করে মোকাব্বির খান বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে কোন ধরনের বিতর্কের সুযোগ নেই। আমার মনে হয়, বিশেষ কারও এ্যাসাইনমেন্ট বাস্তবায়ন করতে না পেরে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে এটা বলা হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, আমি দল থেকে অনুমতি নিয়েই এখানে এসেছি। আমার ৭ মার্চ শপথ নেয়ার কথা ছিল, কিন্তু দলের প্রেসিডিয়াম সভার সিদ্ধান্ত হয়েছিল ৭ মার্চ বাদে অন্য যে কোন দিন শপথ গ্রহণের। সেই দিনও প্যাডে যে প্রক্রিয়ায় সংসদে চিঠি দিয়েছিলাম, একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে একইভাবে সংসদে চিঠি দিয়ে শপথ গ্রহণ করেছি। শপথ নেয়ার পর দল প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাত করতে যান মোকাব্বির। তাকে দেখে কামাল হোসেন বলেন, তুমি আমার অফিস থেকে বেরিয়ে যাও। কোনদিন বাসা কিংবা অফিসে আসবে না। জীবনে কখনও আমার মুখোমুখি হবে না। তুমি বিশ^াসঘাতক, বেইমান’। এ সময় কামাল হোসেনের চেম্বারে গণফোরাম নেতা সুব্রত চৌধুরী, নুরুল হুদা মিলু চৌধুরী, গণদলের চেয়ারম্যান গোলাম মাওলা চৌধুরীসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। জানতে চাইলে গোলাম মাওলা বলেন, কামাল হোসেন মোকাব্বিরকে যেসব কথা বলেছেন সবই সঠিক। বিশ^াসঘাতকের সঙ্গে এমন আচরণ করাই উচিত। তিনি বলেন, কামাল হোসেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের মধ্য দিয়ে জাতির প্রতি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা তিনি রক্ষা করেছেন। কিন্তু মোকাব্বিররা লোভ-লালসার উর্ধে উঠতে পারেননি।
×