ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

যুবসংহতির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সমাবেশ

জাতীয় পার্টিতে কোন বিভক্তি নেই, দাবি রওশনের

প্রকাশিত: ১১:৩৯, ৩ এপ্রিল ২০১৯

জাতীয় পার্টিতে কোন বিভক্তি নেই, দাবি রওশনের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দলের কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে যখন মনগড়া অভিযোগে একের পর এক বিভিন্ন দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হচ্ছে ঠিক তখন বিরোধী দলের উপ-নেতা রওশন এরশাদ বলেছেন, জাতীয় পার্টিতে কোন বিভক্তি নেই। মঙ্গলবার রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয় যুবসংহতির ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে রওশন বলেন, দলের চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদের সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাদের মধ্যে কোন বিভেদ নেই। উনার যে কোন সিদ্ধান্ত পার্টির সবাই মেনে নেন। সম্প্রতি জাপার বিভেদ নিয়ে মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদকে ভিত্তিহীন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। দীর্ঘদিন দেশের বাইরে চিকিৎসা শেষে ফিরেই দলের কো-চেয়ারম্যানের পদ থেকে ভাই জিএম কাদেরকে সরিয়ে দেন এরশাদ। ঠিক এর পরের দিন বিরোধী দলের উপনেতার পদ থেকেও সরিয়ে দেয়া হয় সাবেক মন্ত্রী জিএম কাদেরকে। এ পদে নতুন করে এরশাদ দায়িত্ব দেন স্ত্রী রওশনকে। এ ঘটনার পর থেকেই দলে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। রংপুর বিভাগের সকল নেতাকর্মী সংবাদ সম্মেলন করে জিএম কাদেরের সকল দায়িত্ব ফিরিয়ে দিতে এরশাদকে আল্টিমেটাম দিয়েছেন। অন্যাথায় সকলেই দল থেকে পদত্যাগের হুমকি দিয়েছেন। অন্যদিকে জিএম কাদেরকে খোঁড়া অজুহাতে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির পেছনে রওশনই কলকাঠি নেড়েছেন একথা নেতাকর্মীদের মুখে মুখে। অবশ্য জিএম কাদের গণমাধ্যমে বলেছেন, দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার পর এরশাদের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন তিনি। এরশাদ অব্যাহতির কারণ সম্পর্কে কিছু বলেননি। তবে বলেছেন, দায়িত্ব ফিরিয়ে দেয়া যায়। দলের শীর্ষ নেতাদের অনেকেই জানিয়েছেন, রওশনপন্থীদের চাপের মুখেই ভাইয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়েছেন এরশাদ। যে কোন সময় জাপা মহাসচিব পদেও পরিবর্তন আসতে পারে বলেও আভাস দিয়েছেন অনেকেই। এরশাদের মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে সমাবেশে রওশন বলেন, এরশাদের বিরুদ্ধে সব মামলা রাজনৈতিক। তিনি দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তাই তাকে মামলা দিয়ে দমিয়ে রাখা হয়েছে, যাতে তিনি মাথা উঁচু করে রাজনীতি করতে না পারেন। রওশন বলেন, এরশাদের শাসনামলেই দেশে প্রকৃত উন্নয়ন হয়েছে। তার আমলেই মানুষ স্বাধীনতার সুফল ভোগ করেছে। তিনি উপজেলা ব্যবস্থা প্রবর্তন ও প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে উন্নয়নকে গ্রাম পর্যায়ে নিয়ে যেতে পেরেছিলেন। তিনি বলেন, দেশে অধিক শিল্পায়ন না হলে কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে না। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রক্রিয়ার বিষয়েও আমরা সংসদে কথা বলব। যুবসংহতির সভাপতি আলমগীর সিকদার লোটনের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক ফকরুল আহসান শাহাজাদার সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিএম কাদের, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, মুজিবুল হক চুন্নু, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, রেজাউল ইসলাম ভূইয়া প্রমুখ। সাম্প্রতিক সময়ের অগ্নিদুর্ঘটনা প্রসঙ্গে রওশন এরশাদ বলেন, সরকারকেই আগুনের প্রকৃত কারণ খতিয়ে দেখতে হবে এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতেও সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। জাতীয় পার্টির নয় বছরের শাসনামলের কথা উল্লেখ করে রওশন বলেন, বঙ্গবন্ধু একটি স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছেন। আর দেশের মানুষের কাছে স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ তুলে দিয়েছেন এরশাদ। বেকারত্ব দূর করতে চাকরির বয়সসীমা ৩৫ বছর করা, ব্যাপক শিল্প বিকাশের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এছাড়া গ্যাসের দাম কমানোর দাবিও জানান রওশন। প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, দেশের মানুষ এরশাদের শাসনামলে ফিরে যেতে চায়।
×