জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ চট্টগ্রামের সীতাকু-ে মাদ্রাসা শিক্ষক, কিশোরগঞ্জে ছাত্র ও বৃদ্ধ মা, কুড়িগ্রামে চালক, জামালপুরে দোকান কর্মচারী, বরিশালে যুবক এবং বরগুনার পাথরঘাটায় বৃদ্ধ খুন হয়েছেন। খবর স্টাফ রিপোর্টার ,নিজস্ব সংবাদদাতা ও সংবাদদাতাদের পাঠানো।
সীতাকুণ্ড
চট্টগ্রামের সীতাকু-ে দুর্বৃত্ত দলের ছুরিকাঘাতে মোঃ ইমরান হোসেন রিয়াদ (৩৪) নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষক নিহত হয়েছে। সোমবার রাত সাড়ে ১২ টায় উপজেলার বাড়বকুণ্ড সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন রেলওয়ে কলোনিতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ইমরান ফেনী জেলার লেমুয়া এলাকার রেলওয়ের সাবেক কর্মচারী সরোয়ার হোসেনের পুত্র এবং সীতাকুণ্ড আলিয়া মাদ্রাসার খ-কালীন ইংরেজী শিক্ষক।
জানা যায়, গভীর রাতে ৬/৭ মুখোশধারী দুর্বৃত্তের দল কলোনিতে ঢুকে শিক্ষক ইমরানের ঘরের বাইরের লাইট ভেঙ্গে দেয়। এ সময় ভাংচুরের শব্দে ঘরের বাইরে ইমরান ও তার পিতা বেরিয়ে এলে দুবৃর্ত্তরা তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকালে দুর্বৃত্তদের বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে তারা ইমরানের পেটে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর কলোনির লোকজন আহত ইমরানকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
কিশোরগঞ্জ
কিশোরগঞ্জে সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বের জেরে মেহেদী হাসান জয় (১৬) নামে এক এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতে ও পাকুন্দিয়ায় ছেলের হাতে বৃদ্ধা মা হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ছাত্র হত্যার ঘটনায় এখলাস উদ্দিন (২৬) নামে বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকও আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে সদরের আউলিয়াপাড়ায় আবদুল গণি কারিগরি স্কুল এ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে এ হত্যাকা-ের ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ তারেক নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে। তবে মূল অভিযুক্ত বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র সাব্বির হোসেন ও তার অপর সহযোগী রিয়েল পলাতক রয়েছে।
পুলিশ ও সংশ্লিষ্টরা জানায়, সদরের বিন্নাটি আতকাপাড়া গ্রামের ট্রাকচালক কাঞ্চন মিয়ার ছেলে মেহেদী হাসান জয়কে কয়েকদিন আগে নাম ধরে ডাক দেয়। সাব্বিরকে জয় নাম ধরে ডাকতে নিষেধ করে। এ নিয়ে দু’জনের মাঝে বিরোধের সৃষ্টি হয়। সোমবার এ নিয়ে দু’জনের মাঝে ঝগড়াও হয়। মঙ্গলবার সকালে জয় বিদ্যালয়ে প্রাইভেট পড়তে যায়। সকাল ৮টা থেকে জয়দের ব্যাচ শুরু হয়। সকাল ৭টার ব্যাচ শেষ না হওয়ায় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণেই জয় এবং অন্যরা অপেক্ষা করছিল। এ সময় বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র সাব্বির হোসেন তার এক সহযোগীকে নিয়ে সেখানে গিয়ে জয়কে একটু আড়ালে ডেকে নেয়। পরে সাব্বির তার দুই সহযোগী রিয়েল ও তারেক জয়ের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে জয়ের বুকে সাব্বির ধারালো চাকু ঢুকিয়ে দেয়। এ সময় বিদ্যালয়ের শিক্ষক এখলাস উদ্দিন জয়কে রক্ষা করতে গেলে তাকেও চাকু দিয়ে আঘাত করে সাব্বিরসহ অন্যরা পালিয়ে যায়। চাকুর আঘাতে শিক্ষকের নাকের নিচের অনেকটা অংশ কেটে যায়। পরে সহপাঠী ও অন্যরা মিলে আহত মেহেদী হাসান জয়কে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জয়কে মৃত ঘোষণা করেন।
অপরদিকে পাকুন্দিয়ায় ছেলের হাতে সুফিয়া খাতুন (৭০) নামে এক মা খুন হয়েছেন। এ ঘটনায় ঘাতক ছেলে আজিজুর রহমান ওরফে সুলমান মিয়াকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সূত্র জানায়, উপজেলার বুরুদিয়া কাগারচর গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের স্ত্রী সুফিয়া খাতুন তার বড় ছেলে আজিজুর রহমান ওরফে সুলমান মিয়াকে নিয়ে বসবাস করতেন। তার দুই ছেলের মধ্যে ছোট ছেলে বিদেশে থাকে। বড় ছেলে আজিজুর রহমান ওরফে সুলমান মিয়া বখাটে। কোন কাজকর্ম করে না। বেকার ও বখাটে সুলমান মিয়া প্রায়ই মায়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে খরচ করে। সোমবার সন্ধ্যার দিকে মায়ের কাছে টাকা চেয়ে না পেয়ে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে সুলমান। পরে রাতেই সুফিয়া খাতুনের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ঘাতক সুলমানকে গ্রেফতার করে।
কুড়িগ্রাম
ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় আবদুল মজিদ ওরফে মজু পাগলা (৫০) নামে এক ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা চালককে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এসময় তার অটোরিক্সা নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত আবদুল মজিদ ওরফে মজু পাগলা ভুরুঙ্গামারী উপজেলার খামার আন্ধারীঝাড় গ্রামের মৃত ময়েজ উদ্দিনের ছেলে। মঙ্গলবার দুপুরে খামার আন্ধারীঝাড় ইউনিয়নের বীর-ধাউরারকুটি গ্রামের বড়ইতলা ব্রিজের নিচ থেকে গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পু।
স্থানীয়দের ধারণা অটোক্সা চালক আবদুল মজিদ মজুকে গলা কেটে হত্যা করে বড়ইতলা ব্রিজের নিচে পানিতে ফেলে নতুন অটোরিক্সাটি নিয়ে গেছে হত্যাকারীরা। মজু পেশায় একজন রিক্সাচালক, সে গত পাঁচ দিন আগে নতুন অটোরিক্সা কিনেছিল।
বরিশাল
নিখোঁজের ১৩ দিন পর গিয়াস উদ্দিন সরদার (৩০) নামের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত গিয়াস উদ্দিন জেলার মুলাদী উপজেলার চর মহেষপুর গ্রামের লাল মিয়া সরদারের পুত্র। মঙ্গলবার সকালে নিহতের লাশের ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত গিয়াস উদ্দিনের মামা মোঃ মহসিন বলেন, তিন বছর আগে গিয়াস কোরিয়া থেকে দেশে এসে ঢাকায় বসবাস করে। গিয়াস আবারও কোরিয়া যাওয়ার জন্য টাকা জমা দেয়ার পর সম্প্রতি তার ভিসা আসে। এজন্য গিয়াস গত ২৫ ডিসেম্বর তার দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসে। ওইদিন সন্ধ্যায় সেলিমপুর গ্রামের বাসিন্দা মোঃ আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে ১০/১২ জনে গিয়াসকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর থেকে গিয়াস নিখোঁজ ছিল।
পাথরঘাটা, বরগুনা
পাথরঘাটার কাঁঠালতলী থেকে আইয়ুব আলী হাওলাদার (৭৫) নামে এক বৃদ্ধের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নের কাঁঠালতলীর একটি খাল থেকে তার দেহটি উদ্ধার করা হয়।
আইয়ুব আলীর স্ত্রী হাওয়া বেগম জানান, সোমবার রাত নয়টার দিকে বাড়ি থেকে বের হন আইয়ুব আলী। রাতে আর ফেরেননি তিনি। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার সকালে আইয়ুব আলীর ছেলে বাড়ির পাশের খালে তার মৃতদেহ দেখে চিৎকার দিলে স্থানীয়রা এসে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: