ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিদেশীদের কাছে নালিশ করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই বিএনপির ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ৬ জানুয়ারি ২০১৯

বিদেশীদের কাছে নালিশ করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই বিএনপির ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আন্দোলন ও নির্বাচনে ব্যর্থ হয়েছে বিএনপি। বিদেশীদের কাছে নালিশ করা ছাড়া এখন আর কোন উপায় নেই তাদের। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যেসব কথাবার্তা বলছেন, এটা আন্দোলন ও নির্বাচনে ব্যর্থ একজন রাজনীতিকের অসংলগ্ন সংলাপ ছাড়া আর কিছুই নয়। শনিবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যৌথসভাপূর্ব সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। যৌথসভায় আওয়ামী লীগের সম্পাদকম-লীর সদস্য, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সহযোগী সংগঠনগুলোর সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ঢাকার আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন। গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে। এই বিজয় উদ্যাপনের জন্য আগামী ১৯ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। মহাসমাবেশের প্রস্তুতি নিতেই যৌথসভার আয়োজন করা হয়। কর্মসূচী সফল করতে বৈঠকে আগামী ১৩ জানুয়ারি রবিবার সকাল ১১টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঢাকা জেলা ও পার্শ্ববর্তী গাজীপুর, গাজীপুর মহানগর, নারায়ণগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ মহানগর, মুন্সীগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, দলীয় সংসদ সদস্যগণ, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং এসব জেলার সকল উপজেলা, থানা ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়রদের এক যৌথসভা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেতারা দেশের লোকের কাছে তো অনেক বলেছে, এখন বিদেশীদের কাছে নালিশ করে যাচ্ছে। সেটা তাদের পুরনো অভ্যাস, পুরনো অভ্যাসের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। এখানে আমাদের কি বলার আছে। অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ দাবি করে তিনি বলেন, একটি উদাহরণ দিয়ে বলি। শুধু হাতিয়ার দিকে দেখুন। যেখানে বার বার আমরা চেষ্টা করেও নেতাদের এক করতে পারিনি। অনেক চেষ্টা হয়েছে সেখানে সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য, বার বার চেষ্টা করেছি। এবার কঠিন ঐক্য ছিল। হাতিয়া সবার আগে ঐক্যবদ্ধ ছিল। এক মঞ্চে সবাই। নির্বাচনের পরেও তারা ঐক্যবদ্ধ আছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিল ১৭ জন। শেষ পর্যন্ত কিন্তু থাকেনি। আমাদের নেতৃবৃন্দের প্রয়াসে আমরা বিদ্রোহকে প্রশমিত করতে পেরেছি। দৃশ্যমান তেমন কোন বিদ্রোহ আমাদের পরিলক্ষিত হয়নি। এটাই আওয়ামী লীগের বিজয়ের প্রথম সোপান। আমরা ১৯ জানুয়ারি মহাসমাবেশের মাধ্যমে বিজয় উৎসব পালন করব। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ে বাংলাদেশের জনগণ, নির্বাচন কমিশনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান তিনি। প্রয়াত সৈয়দ আশরাফের স্মৃতিচারণ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, সৈয়দ আশরাফ ছিলেন একজন সৎ, পরিচ্ছন্ন, সফল রাজনীতিক। তিনি তার সততা, যোগ্যতা, দক্ষতা ও মেধা দিয়ে তা প্রমাণ করে গেছেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি আওয়ামী লীগের বাইরেও অন্য রাজনৈতিক দল ও শ্রেণী-পেশার সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে স্থান করে নিয়েছিলেন। বৈঠকের শুরুতে প্রয়াত আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। যৌথসভায় মহাসমাবেশে যার যার সাধ্যানুযায়ী লোক সমাগমের মাধ্যমে জনসমুদ্রে পরিণত করতে প্রয়োজনীয় দায়িত্ব ভাগ করে দেয়া হয়। সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য সৈয়দ আশরাফের মরদেহ শহীদ মিনারে নিয়ে যাওয়ার কোন কর্মসূচী কেন নেই জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ব্যাপারটা আমাদের ওপর ছেড়ে দিন। নিশ্চয়ই আমাদের চেয়ে বেশি দরদ আপনাদের নেই। আমরা একসঙ্গে ছিলাম, একসঙ্গে আছি, আমাদের নেতাকর্মীদেরও এখানে অনুভূতি আছে। কিন্তু চিন্তা করতে হবে। তিনি কতদিন ধরে একটা হাসপাতালের বেডে অসুস্থ ছিলেন। শরীরের যে অবস্থাটা হয়েছে, এ ধরনের কঠিন ব্যাধির পর সেখানে তাকে এতদিকে টানাহেঁচড়া করা, এমনিতেই কিশোরগঞ্জ নিতে হবে, ময়মনসিংহ নিতে হবে। এতদিকে টানাহেঁচড়া করাটা বোধহয় মৃতদেহটার জন্য একটু বেশিই হয়ে যাবে। এসব কিছু বিবেচনা করেই প্রোগ্রামটা আমাদের সভাপতি, সৈয়দ আশরাফেরই যিনি রাজনৈতিক অভিভাবক তিনি প্রোগ্রামটা সাজিয়ে দিয়েছেন এবং সেভাবেই আমরা প্রোগ্রাম করতে যাচ্ছি। এখানে সৈয়দ আশরাফের প্রতি শ্রদ্ধার কোন কমতি কারও নেই। এ সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, ডাঃ দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিএম মোজাম্মেল হক, এনামুল হক শামীম, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপদফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য এসএম কামাল হোসেন, আনোয়ার হোসেনসহ মহানগর ও সহযোগী সংগঠনের নেতাগণ উপস্থিত ছিলেন।
×