ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

সৈয়দ আশরাফের মরদেহ এলো

‘এমন জীবন তুমি করিবে গঠন/মরণে হাসিবে তুমি কাঁদিবে ভুবন’

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ৬ জানুয়ারি ২০১৯

‘এমন জীবন তুমি করিবে গঠন/মরণে হাসিবে তুমি কাঁদিবে ভুবন’

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ একজন পরিচ্ছন্ন, শুদ্ধ মানুষের নাম সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন- ‘জীবন বলে আমি তোমার মরণ তরী বাই’। সেই তরীর যাত্রী হয়ে অজানা-অচেনা এক জগতে পাড়ি দেয়া সৈয়দ আশরাফ শুধু একটি নাম নয়, একটি প্রতিষ্ঠানও বটে। তার জীবনগল্প থেকে যে কেউ রাজনীতি, আদর্শ, সততা ও নৈতিকতার শিক্ষা সহজেই পাঠ করতে পারেন। ছোটবেলায় বাবা-মা, শিক্ষক সবাইকে শেখাতেন ‘এমন জীবন তুমি করিবে গঠন/মরণে হাসিবে তুমি কাঁদিবে ভুবন।’ সততার মূর্ত প্রতীক এই ক্ষণজন্মা রাজনীতিকের অকাল প্রয়াণে সত্যিই আজ দেশের মানুষের চোখে জল। সবাইকে কাঁদাতেই শনিবার সন্ধ্যায় জাতীয় পতাকায় মোড়ানো কফিনে শুয়ে প্রিয় মাতৃভূমিতে ফিরলেন সৈয়দ আশরাফ। বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের সন্তান সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বাবার পথেই হেঁটেছেন রাজনীতির দীর্ঘ সময়। অথচ এত সমৃদ্ধময় জীবনগল্পে আত্মঅহমিকার লেশমাত্র ছিল না। বিনয়ী, মৃদুভাষী, সততা, আদর্শিক দৃঢ়তা আর বিচক্ষণতার মধ্য দিয়েই তিনি সকলের ‘আশরাফ ভাই’ বলে পরিচিতি পান। সকল মহলে অসম্ভব জনপ্রিয় আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে একটু চোখের দেখা দেখতে এবং শ্রদ্ধা জানাতে বিমানবন্দরে শোকার্ত মানুষের ঢল তা আবারও প্রমাণ করেছে। থাইল্যান্ডের ব্যাঙ্কক থেকে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মরদেহ নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ‘মেঘদূত’ উড়োজাহাজ সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামে। উড়োজাহাজ থেকে নামানোর পর মরদেহ গ্রহণ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও সৈয়দ আশরাফের ভাই সাফায়েত উল ইসলাম। এ সময় জাতীয় পতাকা ও আওয়ামী লীগের দলীয় পতাকায় তার কফিন মোড়ানো হয়। মরদেহের সঙ্গে তার পরিবারের সদস্যরাও দেশে ফিরেছেন। সেখানে শোকার্ত নেতাকর্মীরা তার কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান এবং রুহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করেন। বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে তার মরদেহ পূর্ণ প্রটোকল দিয়ে নেয়া হয় ২১ বেইলী রোডে তার সরকারী বাসভবনে। আজ রবিবার রাষ্ট্রীয় মর্যাায় রণাঙ্গনের এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে। সৈয়দ আশরাফের মরদেহ বিমানবন্দরে পৌঁছলে সেখানে নেমে আসে শোকের ছায়া। রাজনীতির বাতিঘর সৈয়দ আশরাফের মৃত্যু যেন কেউই মেনে নিতে পারেননি। সবার চোখেই ছিল স্বজন হারানোর অশ্রু। এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছাড়াও কেন্দ্রীয় নেতা আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, বেগম মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, ড. আবদুর রাজ্জাক, রমেশ চন্দ্র সেন, আবদুল মতিন খসরু, মাহবুবউল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, ডাঃ দীপু মনি, আবদুর রহমান, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এনামুল হক শামীম, ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান নওফেল, ড. হাছান মাহমুদ, হাবিবুর রহমান সিরাজ, সুজিত রায় নন্দী, দেলোয়ার হোসেন, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, মন্ত্রী আনিসুল হক, নুরুল ইসলাম নাহিদ, মুজিবুল হক, শাজাহান খান, এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, সংসদ সদস্য শেখ হেলাল, একেএম রহমতুল্লাহ, সাদেক খান, পংকজ দেবনাথ, আসলামুল হকসহ অগণিত নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এ সময় সবার চোখেই ছিল বেদনাশ্রু। বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে একটি এ্যাম্বুলেন্সে সৈয়দ আশরাফের মরদেহ রাজধানীর বেইলী রোডে সৈয়দ আশরাফের সরকারী বাসভবনে নেয়া হয়। সন্ধ্যা সাতটার দিকে বেইলী রোডের দীর্ঘদিনের সেই পরিচিত বাসায় ফেরেন কফিনে বন্দী হয়ে। সে সময় শোকার্ত মানুষের কান্নায় পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। সেখানে একটি শোক বই খোলা হয়েছে। শোকার্ত মানুষের ঢল থাকায় তার লাশ নামানো সম্ভব হয়নি। দীর্ঘ সময় ধরে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং শ্রেণী-পেশার অজস্র মানুষ বেইলী রোডের বাসভবনে গিয়ে প্রয়াত এ নেতার গাড়িতে থাকা কফিনে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, গণফোরামের মোস্তফা মহসিন মন্টুসহ শীর্ষ সকল নেতাই ছিলেন শোকে মুহ্যমান। পরে তার নিথর দেহ রাখা হয় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) হিমঘরে। আজ রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় একাধিকবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে তার বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। এর পর হেলিকপ্টারযোগে মরদেহ তার নির্বাচনী এলাকা কিশোরগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হবে। দুপুর ১২টায় দেশের বৃহত্তম শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে দ্বিতীয় দফা জানাজা এবং দুপুর ২টায় ময়মনসিংহ আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে তৃতীয় দফা জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এর পর মরদেহ ঢাকায় এনে বাদ আছর বনানী কবরস্থানে সৈয়দ আশরাফকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৯টায় ব্যাঙ্ককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ফুুসফুসের ক্যান্সারে ভুগছিলেন তিনি। বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে এক নক্ষত্রের নাম সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। একজন পরিচ্ছন্ন, সৎ রাজনীতিবিদ, নির্ভেজাল ও নির্লোভ মানুষ ছিলেন তিনি। দৃঢ়চিত্তের অধিকারী এই নেতা ছিলেন দেশ ও দলের দুঃসময়ে কা-ারি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ¯েœহভাজন। দলমত নির্বিশেষে ছিলেন সবার আস্থাভাজন। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ানো অকৃত্রিম বন্ধু। বিচক্ষণতা, অবিচল আস্থা, নির্লোভ ও সৎ রাজনীতির অনন্য প্রতীক। রাজনীতির সততায় জীবন গড়েছিলেন তিনি। তার মৃত্যুতে দেশ হারিয়েছে ক্ষণজন্মা এক রাজনীতিবিদকে। আওয়ামী লীগ হারিয়েছে দলের একজন সততার মূর্ত প্রতীক নিবেদিতপ্রাণ নেতাকে। সৈয়দ আশরাফের মৃত্যুতে শোকে মুহ্যমান গোটা জাতি। কেননা, দলীয় রাজনীতির গ-ি পেরিয়ে অনেক আগেই তিনি মিশে গিয়েছিলেন সাধারণ মানুষের মধ্যে। একজন অসাধারণ মানুষ হয়েও তিনি সাধারণ জীবনযাপন করতেন। তার মতো ত্যাগী, দূরদর্শী ও সজ্জন রাজনীতিক সচরাচর দেখা যায় না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত আস্থাভাজন ছিলেন তিনি। এ কারণে শেষদিকে অসুস্থ থাকার পরও তাকে ছাড়েননি প্রধানমন্ত্রী। একাদশ জাতীয় নির্বাচনে তার অনুপস্থিতিতেই দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয় সৈয়দ আশরাফকে। বিপুল ভোটে বিজয়ী করে কিশোরগঞ্জবাসী জানিয়ে দেন, সৈয়দ আশরাফ রয়েছেন তাদের মণিকোঠায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেশে ফিরে তার শপথ নেয়া হলো না। সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন না-ফেরার দেশে, অনন্তলোকে। বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর সৈয়দ নজরুল ইসলামের যোগ্য সন্তান ছিলেন সৈয়দ আশরাফ। মুক্তিযুদ্ধের সময় যেমন বাবা হাল ধরেছিলেন মুজিবনগর সরকারের তেমনি ২০০৭ সালের ওয়ান-ইলেভেনের সময় বিরাজনীতিকরণের বিরুদ্ধে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে দলীয় রাজনীতির হাল ধরেছিলেন সৈয়দ আশরাফ। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জরুরী অবস্থার সময় শেখ হাসিনা গ্রেফতার হলে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান ও সৈয়দ আশরাফের বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল বর্ণনাতীত। বিশ্লেষকরা মনে করেন, ওই সময় সৈয়দ আশরাফের প্রতিটি কথা ও কর্মকা-ের মধ্যে বিচক্ষণতা, প্রজ্ঞা, দলের প্রতি প্রবল আনুগত্য ও দূরদর্শিতা প্রকাশ পায়। যে কারণে ওই সময়ের ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলা বাস্তবায়ন করতে পারেনি তৎকালীন সেনা সমর্থিত সরকার। দলের অখ-তাও ধরে রাখা সম্ভব হয় তার কারণে। আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারি ময়মনসিংহ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। একাত্তরের রণাঙ্গনের যোদ্ধা ছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের পর সৈয়দ আশরাফ বৃহত্তর ময়মনসিংহ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় সহপ্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালের ৩ নবেম্বর কারাগারে বাবা সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর তিনি যুক্তরাজ্যে চলে যান। সেখানে তিনি আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। নীতি ও আদর্শের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত সৈয়দ আশরাফ ১৯৯৬ সালে দেশে ফিরে আসেন। ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগ সরকারের ওই মেয়াদে বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০০১ সালেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৭ সালের সেনা সমর্থিত শাসনের সময় আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন সৈয়দ আশরাফ। ২০০৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে পুনরায় বিজয়ী হয়ে সৈয়দ আশরাফ দক্ষতার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ সালের ৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে দফতরবিহীন মন্ত্রী করেন। এর এক মাস এক সপ্তাহ পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হন সৈয়দ আশরাফ। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ছিলেন তিনি। ব্যক্তিগত জীবনে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ব্রিটিশ ভারতীয় বংশোদ্ভূত শীলা ইসলামকে বিয়ে করেন। শীলা লন্ডনে শিক্ষকতা পেশায় জড়িত ছিলেন। ২০১৭ সালের ২৩ অক্টোবর তিনি মারা গেলে সৈয়দ আশরাফ অনেকটা নিভৃত জীবনের দিকে ঝুঁকে পড়েন। তাদের একমাত্র কন্যা রীমা ইসলাম লন্ডনের এইচএসবিসি ব্যাংকে চাকরি করেন। কিশোরগঞ্জে শোকের ছায়া ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে সর্বত্র শোকাবহ পরিবেশ বিরাজ করছে। রবিবার বেলা ১২টায় ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে হেলিকপ্টারযোগে সৈয়দ আশরাফের মরদেহ তার নির্বাচনী এলাকা কিশোরগঞ্জে নিয়ে আসা হবে। পরে লাশবাহী এ্যাম্বুলেন্সে করে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে। সেখানে স্থানীয় প্রশাসন, আওয়ামী লীগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। বিভিন্ন সংগঠনের শোক ॥ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তরের নেতৃবৃন্দ। এছাড়া শোক প্রকাশ করেছেন গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী এবং ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের নেতৃবৃন্দ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নক্ষত্র সমতুল্য নেতা সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর পরিবার গভীরভাবে শোকাহত। মরহুমের মৃত্যুতে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তরের সভাপতি একে এম রহমতুল্লাহ, এমপি এবং সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাদেক খান, এমপি গভীর শোক প্রকাশ করেন। তারা মরহুমের রুহের মাগফিরাত এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন। গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ ॥ সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে সভা করেছে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি চৌধুরী এমদাদুল হকের সভাপতিত্বে দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় মরহুমের আত্মার শান্তি কামনায় ১ মিনিট নীরবতা পালন এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়। সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান বলেছেন, আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের পরীক্ষিত নেতার মৃত্যুতে গভীর শূন্যতার সৃষ্টি হলো; যা অপূরণীয়। তার চলে যাওয়ায় আওয়ামী পরিবারের অনেক ক্ষতি হলো; যা সহজে পূরণ হওয়ার নয়। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শেখ রুহুল আমীন ও আব্দুল হালিম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী খসরুল আলম, দপ্তর সম্পাদক ইলিয়াস হক, কাজী হারুনার রশি মিরণ, জেলা যুবলীগ সভাপতি জি এম সাহাবুদ্দিন আজম, সাহাবুদ্দিন হিটুসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সভায় উপস্থিত ছিলেন। আইইবি কেন্দ্রীয় কাউন্সিল ॥ মুজিব নগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি, কারাগারে নিহত জাতীয় চার নেতার অন্যতম সৈয়দ নজরুল ইসলামের জ্যেষ্ঠ পুত্র বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর অন্যতম সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-এর কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের পক্ষ থেকে আইইবি’র প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মোঃ আবদুস সবুর এবং সম্মানী সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী খন্দকার মনজুর মোর্শেদ গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। মুন্সীগঞ্জে স্মরণসভা ॥ স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ থেকে জানান , মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী ও লৌহজংয়ে সৈয়দ আশরাফের স্মরণসভা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় টঙ্গীবাড়ী উপজেলা পরিষদ মিলনায়নে এই স্মরণসভা হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এই স্মরণসভায় প্রধান অতিথির ভাষণ দেন অধ্যাপিকা সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জগলুল হালদার ভুতুর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ শেখ লুৎফর রহমান, টঙ্গীবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার কাজী ওয়াহিদ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজ আল আসাদ বারেক। এর আগে দুপুরে লৌহজংয়ের ঘোরদৌড় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এই স্মরণসভায় প্রধান অতিথির ভাষণ দেন মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের নব নির্বাচিত সাংসদ অধ্যাপিকা সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান ওসমান গনি তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল রশিদ শিকদার। দু’টি স্মরণসভায়ই সৈয়দ আশরাফের বিদেহী আত্মার জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
×