ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

হৃদয় জাগে শীতের ছোঁয়ায়

প্রকাশিত: ০৩:৪৬, ৩ জানুয়ারি ২০১৯

হৃদয় জাগে শীতের ছোঁয়ায়

শীত কুয়াশার চাদর/দেয় এঁকে সে মেঠো পথে/শিশির বিন্দুর আদর। কি মনোরম দেখতে! পথের ধারে নাম না জানা কত গাছে কত ফুলের বাহার! সত্যিই তাই, ষড়ঋতুর অপূর্ব সমাহারে ভরপুর আমাদের এই বাংলাদেশ। আর শীত ঋতু আসে অপূর্ব সাজে সেজে। মাঠের পর মাঠ সরষে ফুলের হলুদ ছোঁয়া মনকে রাঙিয়ে দেয়, ভরিয়ে দেয় মন চারদিকে গাছে গাছে ফুটে থাকা নানান ফুলের সৌরভে। বিভিন্ন জলাশয়ে জমে ওঠে দেশ-বিদেশী পাখিদের মিলনমেলা। মৌমাছিরা প্রকৃতির সম্ভার থেকে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। নবান্নের পথ ধরেই শীতকাল ভর চলে পিঠা-পুলির আয়োজন। চিড়া-মুড়ি-খই ভাজার পড়ে মহা ধুম। শীত জুড়েই খেঁজুর রসের ম ম গন্ধ ভেসে বেড়ায় বাতাসে। নানান সবজির দেখা মেলে শীত এলে। একটা সময় ছিল এই শীত মৌসুমে গাঁয়ে গাঁয়ে পুঁথি পাঠের আসর জমত। একের পর এক চলত যাত্রাপালা। কালের বিবর্তনে পুঁথিপাঠ এখন আর নেই। যাত্রাপালাও হারিয়ে যেতে বসেছে, সার্কাসও তেমন দেখা যায় না, তবে আনন্দ আয়োজন কমেনি। ঝড়-বৃষ্টি, কাদা-পানির ঝামেলা থেকে মুক্ত শুষ্ক শীত মৌসুমটা আনন্দের বার্তা হয়ে আসে প্রকৃতির সৌন্দর্যের ছোঁয়ায়। বিয়ে থেকে শুরু করে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উৎসবগুলো অনুষ্ঠিত হয় এই শীতেই। গ্রাম কিবা শহর, আনন্দপ্রিয় বাঙালী, কুয়াশা উপেক্ষা করে রাত জেগে আনন্দ উপভোগ করে সবাই। আনন্দ মানুষকে স্বস্তি দেয়, ক্লান্তি দূর করে, মনকে প্রফুল্ল করে, নতুন কাজের গতি আনে। চিরাচরিত বাংলার জনপদে সেই আনন্দ-উৎসবের চিত্র ভেসে উঠে এই শীত এলে। বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানও অনুষ্ঠিত হয় এ সময়ে। ইছালে সওয়াব, দোয়া ও ওয়াজ মাহফিলে, ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা রাতের পর রাত জেগে ধর্মীয় বয়ান শোনেন। এ যেন এক অন্য জগতের আহ্বান। ক্লান্তি ঝেড়ে নব উদ্যোমে জেগে ওঠে বাঙালী, নতুন রূপে সাজে, বাংলার মাঠ, ঘাট, প্রান্তর। শীত জুড়েই চলে এলাকায় এলাকায় ব্যাট মিন্টন খেলা। এ সুযোগ যেন কেউ হাতছাড়া করতে চায় না। মহা আনন্দে উপভোগ করে শীতের আগমন। শীতের নিমন্ত্রণ, আনে আনন্দের ঢেউ, ভাগাভাগি করে আনন্দ তাই, বাকি রয় না কেউ। ফতুল্লা, নারায়ণগঞ্জ থেকে
×