ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভোটকেন্দ্রে ব্যাপক নিরাপত্তা

প্রকাশিত: ০৩:৪৮, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮

ভোটকেন্দ্রে ব্যাপক নিরাপত্তা

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষে বরিশাল জেলার ছয়টি আসনের প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ছয়টি নির্বাচনী এলাকার ৮০৫টি ভোটকেন্দ্রে শনিবার সকাল নয়টা থেকে ভোটগ্রহণের উপকরণ উপজেলা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে পাঠানো হয়েছে। এজন্য সকাল থেকেই ভোটগ্রহণের কাজে নিয়োজিত প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং, পোলিং অফিসার, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা নির্বাচনী উপকরণ নিয়ে নিবিঘ্নে স্ব-স্ব কেন্দ্রে পৌঁছেছেন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভোটগ্রহণের প্রয়োজনীয় মামলামাল তারা কেন্দ্র প্রধানকে বুঝিয়ে দিয়েছেন। অপরদিকে বরিশালের সর্বত্র আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনা ও বিজিবির পাশাপাশি র‌্যাব ও পুলিশ সদস্যরা টহল দিচ্ছেন। এবার বরিশাল জেলার ছয়টি নির্বাচনী আসনের জন্য ২১ প্লাটুন বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ, ছয় শ’ সেনাবাহিনীর সদস্য অইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে রয়েছেন। এরা ৩৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে থাকবেন। এছাড়াও বরিশাল মহানগরীতে ১২৫০ পুলিশ এবং জেলার ১০ উপজেলায় ১৬’শ পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। একইসঙ্গে কেন্দ্রে আনসার সদস্য অস্ত্র ও লাঠি হাতে তাদের দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচন মনিটরিং করতে নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি উপজেলায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, বরিশালের ছয়টি আসনে বর্তমান ভোটার সংখ্যা ১৭ লাখ ৭৮ হাজার ৫৮৫ জন। এর মধ্যে ৮ লাখ ৯৭ হাজার ৯২৩ জন পুরুষ ও ৮ লাখ ৮০ হাজার ৬৬২ জন নারী। ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার জেলায় ১৭৭টি ভোটকেন্দ্র ও ১৩৫টি বুথ বাড়ানো হয়েছে। এবারের নির্বাচনে বরিশালের ছয় আসনে মোট ভোটকেন্দ্র থাকছে ৮০৪টি ও কক্ষ ৪ হাজার ৪৭টি। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনে বর্তমানে মোট ভোটার ২ লাখ ৫৭ হাজার ২২০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ২৯ হাজার ১৭ জন ও ১ লাখ ২৮ হাজার ২০৩ জন নারী ভোটার। বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ১ হাজার ৩৯৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩০৮ জন ও ১ লাখ ৪৮ হাজার ৮৯ জন নারী ভোটার। বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৫৩ হাজার ৪১৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ২৬ হাজার ৯৯৭ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ২৬ হাজার ৪১৭ জন। বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ) আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ২৪ হাজার ১২৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৬৫ হাজার ৪১৭ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৫৮ হাজার ৭১১ জন। বরিশাল-৫ (বরিশাল সদর ও নগর) আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৯৭ হাজার ২৬৭ জন। এর মধ্যে ২ লাখ ৩৯৮ জন পুরুষ ও ১ লাখ ৯৬ হাজার ৮৬৯ জন নারী ভোটার। বরিশাল-৬ (বাকেরগঞ্জ) আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৪৫ হাজার ১৫৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ২২ হাজার ৭৮৬ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ২২ হাজার ৩৭৩ জন। বগুড়া স্টাফ রিপোর্টার বগুড়া অফিস থেকে জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। নিরাপত্তার চাদর বিছিয়ে দেয়া হয়েছে সর্বত্র। শনিবার সকাল থেকে কেন্দ্রে পাঠান শুরু হয়েছে নির্বাচনী সরঞ্জাম। নির্বাচনের সকল প্রস্তুতিও শেষ হয়েছে। এখন শুধু ভোটগ্রহণের অপেক্ষা। জেলার ৭টি আসনে বিভিন্ন রাজনৈতিকদল সহ স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলিয়ে মোট ৪৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সংসদীয় এলাকাগুলোতে নিয়োজিত থাকছেন ২৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। সেনাবাহিনী ও বিজিবি র‌্যাব ছাড়াও নির্বাচনে উপলক্ষে মোতায়েন থাকছে প্রায় ২ হাজার পুলিশ সদস্য। জেলার ৯২৬টি কেন্দ্র ও কেন্দ্র সংলগ্ন এলাকাগুলোতে এই বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকছে সাড়ে ১৩টি টিমে ৬ শতাধিক সেনা সদস্য। আর বিজিবি সদস্য মোতায়েন থাকছে ৩২০ (১৭ প্লাটুন) জন। জেলা রিটার্নিং অফিসার কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। বগুড়ার ৭টি নির্বাচনী আসনে মোট ভোটার ২৫ লাখ ৪৬ হাজার ৯৫৮। আর এই ৭টি আসনের ভোটকেন্দ্রগুলোর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি আসন গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত এসব কেন্দ্রের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক কেন্দ্র রয়েছে বগুড়া-৪ (শেরপুর-ধুনট) আসনে। এখানকার মোট ১৭৯টি কেন্দ্রের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ১২৩টি। এছাড়া বগুড়া-১ আসনে ৯২টি, বগুড়া-২ আসনে ৭০টি, বগুড়া-৩ আসনে ৭৭টি এবং বগুড়া-৭ আসনে ৮৩টি গুরুত্বফূর্ণ কেন্দ্র রয়েছে। জেলার মোট ৯২৬টি কেন্দ্রের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রের সংখ্যা ৫৬০টি এবং বাকি ৩৬৬ সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। মুন্সীগঞ্জ মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল মুন্সীগঞ্জ থেকে জানান, মুন্সীগঞ্জে ৪৬১ কেন্দ্রের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বা ঝঁকিপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ২২৬টি। সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ২৩৫টি। মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে ১৬৭ কেন্দ্রের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ১০৬টি কেন্দ্র। এর মধ্যে শ্রীনগর উপজেলায় ৭৯টি কেন্দ্রের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ৪৫ এবং সাধারণ কেন্দ্র ৩৪টি। সিরাজদিখান উপজেলায় ৮৮ কেন্দ্রের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র চিহ্নিত করা হয়েছে ৬১টি। এই উপজেলায় সাধারণ কেন্দ্র ২৭টি। মুন্সীগঞ্জ-২ আসনে ১২৮টি কেন্দ্রের মধ্যে ৫৭ টি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে টঙ্গীবাড়ি উপজেলায় ৭৫ কেন্দ্রের মধ্যে গুরুপূর্ণ ৩৫টি। সাধারণ কেন্দ্র রয়েছে ৪০টি। লৌহজং উপজেলায় ৫৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ২২টি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র রয়েছে। বাকি ৩১টি কেন্দ্রকে সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে ১৬৬ কেন্দ্রের মধ্যে ৬৩ কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলার ১১৬ কেন্দ্রের মধ্যে ৪২টি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। বাকি ৭৪ কেন্দ্র সাধারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। মেঘনা তীরের গজারিয়া উপজেলার ৫০টি কেন্দ্রের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ২১টি। বাকি ২৯টি কেন্দ্রকেই সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্রগুলোকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে বেশি নিরাপত্তা ছাড়াও কাছাকাছি বেশি মোবাইল টিম রাখা হয়েছে। মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম পিপিএম জানান, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট অনুষ্ঠানে এবং জনগণের সুরক্ষায় পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব ও আনসারের সমন্বয়ে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রত্যেক কেন্দ্রে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রের জন্য পুলিশের দু’জন সদস্য এবং ১২ আনসার সদস্য সর্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া সাধারণ কেন্দ্রেও একজন করে পুলিশ ও ১২ আনসার সর্বক্ষনিক থাকবে। স্ট্রাইকিং ফোর্সের পর্যাপ্ত টিম থাকবে। পুলিশের পৃথক ভ্রাম্যমাণ টিম টহল দেবে। এছাড়া বিজিবি, র‌্যাব, সেনা সদস্যের আলাদা পার্টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করবে বলেও জানান তিনি। মুন্সীগঞ্জের তিনটি আসনে এবার ৫ হাজার ৩৩৩ আনসার দায়িত্ব পালন করবে। ৪৬১টি কেন্দ্রের মধ্যে প্রতিটি কেন্দ্রে ১২জন করে আনসার থাকবে। এর মধ্যে দু’জন অস্ত্রধারী। বাকি ১০ জন লাঠিসহ থাকবে। এর মধ্যে চারজন করে নারী আনসার। এছাড়াও প্রতিটি কেন্দ্রেই পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে। আর মোবাইল ডিউটিতে পুলিশ ছাড়াও থাকবে র‌্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনী।
×