ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রার্থীরা বাড়িতে বসে দলীয় কর্মীদের করণীয় বোঝালেন

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮

 প্রার্থীরা বাড়িতে বসে দলীয় কর্মীদের করণীয় বোঝালেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নির্বাচনী প্রচার শেষে প্রার্থীরা বাড়িতে বসে পোলিং এজেন্ট নিয়োগ দেয়ার পাশাপাশি দলীয় কর্মীদের ভোটের দিনের করণীয় সম্পর্কে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রচারের শেষ দিনে জুমার নামাজ পড়তে গিয়ে ভোটারদের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি ভোটও চেয়েছেন তারা। নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী ৪৮ ঘণ্টা আগে সব ধরনের প্রচার বন্ধের নিয়ম রয়েছে। এতে করে শুক্রবার সকাল আটটার পর নির্বাচনী প্রচার বন্ধ করে দেন প্রার্থীরা। নির্বাচনী প্রচার বন্ধ হলেও প্রার্থীরা এই সময় নিজেদের বাড়িতে বসেই নির্বাচনের দিন কার কি করণীয় তা নেতাকর্মীদের বুঝিয়ে দিয়েছেন। এছাড়া কোন কেন্দ্রে কোন পোলিং এজেন্ট কাজ করবে তার তালিকাও চূড়ান্ত করেছেন। শুক্রবার ঢাকার চিত্র একেবারেই অন্যরূপ ধারণ করে। নির্বাচন কেন্দ্র করে গত ১৮ দিন ঢাকার পাড়া মহল্লায় প্রার্থীরা সরব ছিলেন। সাদা-কালো পোস্টারে পোস্টারে রাস্তা সাজানোর পাশাপাশি রাস্তার মোড়ে মোড়ে খোলা হয়েছিল নির্বাচনী অফিস। শুক্রবার কিছু নির্বাচনী অফিসে বসে প্রার্থীর সমর্থকরা ভোটারেদের কেন্দ্র অনুসন্ধানে সহায়তা করেছেন। তবে অধিকাংশ নির্বাচনী কার্যালয়ে কেউ ছিল না। গত ১৮ দিন ধরে এসব অফিসে নির্বাচনী সঙ্গীতের আয়োজন থাকলেও শুক্রবার ছিল একেবারে নীরব। তবে প্রচারের শেষ দিন হওয়াতে বৃহস্পতিবার রাতেই নতুন করে পোস্টার লাগানো হয়েছে প্রায় সব রাস্তায়। তবে অন্য দলের পোস্টার চোখে পড়লেও ধানের শীষের পোস্টার একেবারেই দেখা যায়নি। সানজিদা খানম এমপি ও ড. আওলাদ হোসেনকে সঙ্গে দোলাইপাড়ের আমির টাওয়ারে প্রধান নির্বাচনী অফিসে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে ঘরোয়া বৈঠক করেছেন ঢাকা-৪ আসনের মহাজোটের প্রার্থী সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা। শুক্রবার বিকেলে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে বাবলা ভোটারদের মাঝে ভোটার সিøপ পৌঁছেছে কিনা জানতে চান। বৈঠকে নির্বাচনের দিন যেন পোলিং এজেন্টরা তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে তার নির্দেশনা দেন। নেতাদের উদ্দেশে বাবলা বলেন, ভোট প্রতিটি নাগরিকের অধিকার। কোন ভোটার যেন ভোট না দিয়ে ফিরে না যায়। কেন্দ্রের বাইরে আমাদের যারা এজেন্ট থাকবেন তারা ভোটারদের আইডি কার্ড নং এবং কেন্দ্রের ভেতরে কোন বুথে ভোট দিবেন সে বিষয়ে সহযোগিতা করবেন। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বাবলা পতœী সালমা হোসেন, নির্বাচনী এলাকার কাউন্সিলর কাজী হাবিবুর রহমান হাবু, নাসির ভূইয়া, হাজী মাসুদ, মোহাম্মদ নাসিম, তোফাজ্জল হোসেন, তাজুল ইসলাম তাজু, মোবারক হোসেন, আকাশ ভৌমিক, ইব্রাহীম খলিল মারুফ প্রমুখ। ঢাকা-৮ আসনে বিএনপির প্রর্থী মির্জা আব্বাস এবং ঢাকা-৯ এর প্রার্থী আফরোজা আব্বাস সকাল থেকেই শাজাহানপুরে নিজের বাসায় সময় কাটান। এ সময় তারা নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। ভোটকেন্দ্রে এজেন্ট হিসেবে কারা কাজ করবেন সেই তালিকা চূড়ান্ত করেছেন। এ সময় বাসায় আসা কর্মীদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিয়েছেন তারা। তারা ভোটের দিন এলাকার সব নেতা কর্মীকে কেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। স্থানীয় শাহজাহানপুর মসজিদে মির্জা আব্বাস জুম্মার নামাজ আদায় করেছেন। আফরোজা আব্বাস সন্ধ্যায় বলেন, তিনি সারা দিন পোলিং এজেন্ট হিসেবে কাদের নিয়োগ করবেন তা ঠিক করেছেন। তবে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, পোলিং এজেন্টরা ঠিক মতো কাজ করতে পারবেন কি না সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। তিনি জানান, শুক্রবার তার বাসা থেকে বের হলে আট জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঢাকা-৮ এ মহাজোট প্রার্থী রাশেদ খান মেননও দিনভর ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। নির্বাচনে পোলিং এজেন্ট এবং ভোটের দিন কারা কেন্দ্রর বাইরে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করবেন সেই তালিকা ঠিক করেন। তিনি মির্জা আব্বাসকে নিয়ে আশঙ্কার মধ্যে রয়েছে জানিয়ে বলেন, মির্জা আব্বাসের নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। তারা ভোটে প্রভাব বিস্তারের জন্য ত্রাস সৃষ্টি করতে পারেন বলে মনে করেন তিনি। ঢাকা-৯ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাবের হোসেন চৌধুরী সকালের দিকে তার বাসায় সময় কাটান। সেখানে নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠকের পর শহীদবাগ নির্বাচনী কার্যালয়ে আসেন। শহীদ বাগে সাবের হোসেন চৌধুরীও পোলিং এজেন্ট নিয়োগ নিয়ে কাজ করেন। ঢাকা-১০ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস সময় কাটিয়েছেন নেতাকর্মীদের সঙ্গে। তিনি দুপুরে ঝিগাতলা ট্যানারি মোড়ে একটি জানাজায় অংশ নেন। এরপর নিজ কার্যালয়ে নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক কাজগুলো শেষ কারতে যান। এসময় তিনি ভোটের দিন স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেয়ার পাশাপাশি কারা পোলিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করবেন তাদের তালিকা তৈরিতে তদারকি করেন। আসনটিতে ব্যারিস্টার তাপসের জনপ্রিয়তার ধারে কাছেও নেই বিএনপি প্রার্থী আবদুল মান্নান। শুক্রবারও তিনি কি করছেন জানা যায়নি। তবে দলের নেতাকর্মীরা বলেছেন তিনি বাসাতেই রয়েছেন। ভোটারদের কাছে পাঠানো এসএমএসকেই আব্দুল মান্নান শেষ ভরসা বলে মনে করছেন।
×