ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

স্কুলে বাবা-মাকে অপমান করায় ভিকারুননিসা ছাত্রীর আত্মহত্যা

প্রকাশিত: ০৭:২২, ৪ ডিসেম্বর ২০১৮

স্কুলে বাবা-মাকে অপমান করায় ভিকারুননিসা ছাত্রীর আত্মহত্যা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভিকারুননিসা নূন স্কুল এ্যান্ড কলেজের এক ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, স্কুলে নকলের অভিযোগে অপমানের জের ধরে সে আত্মহত্যা করেছে। সোমবার রাজধানীর শান্তিনগরে এ ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া ওই ছাত্রীর নাম অরিত্রি অধিকারী (১৫)। সে ভিকারুননিসায় নবম শ্রেণীতে পড়ত। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) চিকিৎসকরা অরিত্রিকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই ছাত্রীর গ্রামের বাড়ি বরগুনা সদরে। অরিত্রির বাবা দিলীপ অধিকারী বলেন, মেয়ের পরীক্ষা চলছে। গত রবিবার পরীক্ষা চলাকালে শিক্ষক অরিত্রির কাছে মোবাইল ফোন পায়। মোবাইলে নকল করছে- এমন অভিযোগে অরিত্রিকে সোমবার তার বাবা-মাকে নিয়ে স্কুলে যেতে বলা হয়। দিলীপ অধিকারী অভিযোগ করেন, সোমবার তিনি স্ত্রী ও অরিত্রিকে নিয়ে স্কুলে যান। তার ছোট মেয়েও একই স্কুলে পড়ে। তারা প্রথমে ভাইস প্রিন্সিপালের কক্ষে যান। কিন্তু ভাইস প্রিন্সিপাল তাদের অপমান করে কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। একই সঙ্গে আজ (মঙ্গলবার) মেয়ের টিসি (স্কুল থেকে দেয়া ছাড়পত্র) নিয়ে যেতেও বলা হয়। দিলীপ অধিকারী বলেন, এরপর তিনি প্রিন্সিপালের কক্ষে যান। প্রিন্সিপালও ভাইস প্রিন্সিপালের মতো আচরণ করেন। দিলীপ অধিকারী বলেন, এ সময় অরিত্রি দ্রæত প্রিন্সিপালের কক্ষ থেকে বের হয়ে যায়। পরে স্ত্রীসহ তিনি বাড়ি গিয়ে দেখেন অরিত্রি তার কক্ষে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়নায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় ঝুলছে। অরিত্রিকে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেন তারা। পরে ঢাকা মেডিক্যালে নেয়া হয়। পল্টন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আতাউর রহমান বলেন, সুরতহাল করে অরিত্রির লাশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর তার মৃত্যু কারণ জানা যাবে। ময়নাতদন্ত শেষে ঢামেকের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক সোহেল মাহমুদ জানান, প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে মেয়েটি গলায় ফাঁস দিয়েছে। তার গলায় দাগ ছিল। তার নেক টিস্যু সংগ্রহ করা হয়েছে, তা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। এদিকে অরিত্রির মৃত্যুর সংবাদ শুনে সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান ভিকারুননিসার প্রিন্সিপাল নাজনীন ফেরদৌস। সেখানে তিনি অরিত্রির স্বজনদের তোপের মুখে পড়েন। এ সময় তারা প্রিন্সিপালের গাড়ি ঘিরে রাখেন। কিছুক্ষণ পর তিনি দ্রæত হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান। তবে ভিকারুননিসা নূন স্কুল এ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপাল নাজনীন ফেরদৌসের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রবিবার সমাজ পরীক্ষা ছিল। অরিত্রি মোবাইল ফোনে নকল নিয়ে টেবিলে রেখে লিখছিল। কর্তব্যরত শিক্ষক তা ধরে ফেলেন। বোর্ডের নিয়মানুযায়ী নকল ধরার পর আর পরীক্ষা দেয়ার বিধান নেই।
×