ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম

সঙ্কটের সমাধান সাত দিনের মধ্যে না হলে বৃহত্তর আন্দোলন

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ৯ নভেম্বর ২০১৮

সঙ্কটের সমাধান সাত দিনের মধ্যে না হলে বৃহত্তর আন্দোলন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী সাত দিনের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের ফল বিপর্যয়ের জটিলতা নিরসনের আল্টিমেটাম দিয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। খাতা মূল্যায়নের গাফিলতিতেই ফল এমন বিপর্যয় অভিযোগ এনে তারা বলেছে, অধিকাংশ বিভাগে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী ফেল করেছে। গণহারে এই ফেল কোনভাবেই কাম্য নয়। সাত দিনের মধ্যে সঙ্কটের গ্রহণযোগ্য সমাধান না হলে বৃহত্তর কর্মসূচীর হুঁশিয়ারিও দিয়েছে তারা। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন থেকে শিক্ষার্থীরা এ হুঁশিয়ারি দেয়। তবে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান বলেছেন, হ্যাঁ, তারা পুনর্মূল্যালয়নের আবেদন করতেই পারে। তারা যদি আবেদন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিবিধান অনুসারে অবশ্যই পদক্ষেপ দেয়া হবে। বিধিবিধান মেনে আবেদন করলে নিয়ম অনুসারে সংশ্লিষ্ট শাখা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বিষয়টি দেখবেন। প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরা অংশ নেয়। কলেজগুলো হলোÑ ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারী শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারী কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারী মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারী বাঙলা কলেজ ও সরকারী তিতুমীর কলেজ। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা রাজধানীর সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। কর্মসূচীতে শিক্ষার্থীরা বলেছে, গণহারে ফেল করায় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না। উত্তরপত্র সঠিক মূল্যায়নের দাবিতে অভিযোগ করলেও এ বিষয়ে পরীক্ষা কমিটি কোন সাড়া দেননি। তাই ফল বিপর্যয়ের একটি সমাধান করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে এবং ফল বিপর্যয়ের শিকার পরীক্ষার্থীদের মাস্টার্স ভর্তির সুযোগ দিতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। তারা আরও বলেন, আমাদের কলেজ থেকে ২৫ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেই। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য ২৫ জনের একজনও পাস করেনি। একই হলের এক রুমে আমরা বসেছিলাম, তাদের সবাই অকৃতকার্য। আমরা আবারও খাতার পুনর্মূল্যায়ন চাই। শিক্ষার্থীরা বলছেন, ২০১২-১৩ সেশনের শিক্ষার্থীদের চতুর্থ বর্ষের সমাপনী পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। তবে দুঃখজনক হলেও আমাদের অধিকাংশ বিভাগে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী ফেল করেছেন। গণহারে এই ফেল করা কোনভাবেই কাম্য নয়। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আসিফুর ইসলাম মনি জানান, আমাদের এই ফল বিপর্যয়ের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেছি। পরীক্ষার খাতার সঠিক মূল্যায়নের আবেদন করেও সাড়া পাইনি। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা উত্তরপত্রের যথাযথ পুনর্মূল্যায়ন ও পুনর্বিবেচনা করে শিক্ষার্থীদের মাস্টার্সে ভর্তির সুযোগ ও সাত দিনের মধ্যে ফল বিপর্যয়ের সমাধান দেয়ার দাবি জানান। মানববন্ধনে বদরুন্নেসা কলেজের শিক্ষার্থী ফাহমিদা বলেন, আমাদের কলেজ থেকে ২৫ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেই। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য ২৫ জনের একজনও পাস করেনি। একই হলের এক রুমে আমরা যারা বসেছিলাম তাদের সবাই অকৃতকার্য হয়েছে আমরা আবারও খাতার পুনর্মূল্যায়ন চাই। ৭ দিনের মধ্যে সমাধান চাই। কর্মসূচীতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন কলেজের ফলে চিত্র তুলে ধরে। তাতে দেখা যায়, সরকারী বাঙলা কলেজ থেকে ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে ৩৬০ পরীক্ষায় অংশ নেয়। সেখান থেকে মাত্র ৭ জন পাস করেছে বাকিরা অকৃতকার্য। ঢাকা কলেজে বাংলা বিভাগ থেকে ১১৩ জনের মধ্যে মাত্র ১২, দর্শন বিভাগে ১১৬ জনের মধ্যে ২৮ জন, ইতিহাস বিভাগে ১৪২ জনের মধ্যে ৭১ এবং ইংরেজী বিভাগে ১২৬ জনের মধ্যে মাত্র ১৪ জন পাস করেছে। প্রায় একই অবস্থা ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারী শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারী কলেজসহ সাত কলেজেরই।
×