ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর কাছে মাথা গোঁজার ঠাঁই চান মুক্তিযোদ্ধা আনু

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ৩ নভেম্বর ২০১৮

 প্রধানমন্ত্রীর কাছে মাথা গোঁজার ঠাঁই চান মুক্তিযোদ্ধা আনু

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ মাথা গোঁজার একটু ঠাঁই চান মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার ব্যাপারী ওরফে আনু ব্যাপারী (৭১)। ত্রিশ বছর আগে নদী ভাঙ্গনে সব হারিয়েছেন। কিন্তু থেমে যাননি। যুদ্ধের দুটি হাতকে সম্বল করে জীবন সংগ্রামে নেমে পড়েছেন। যতদিন শরীরে জোর ছিল, পেছনে ফিরে তাকাননি। কিন্তু এখন শেষ প্রান্তে এসে জীবনের সব হিসেব আর মেলে না। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আনু ব্যাপারীর আকুতি, না চাইতেই প্রধানমন্ত্রী অনেক দিয়েছেন। এখন একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই চান তিনি। মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার ব্যাপারী ওরফে আনু ব্যাপারী (৭১)। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ভাড়া থাকেন যশোর উপশহরের ২নং সেক্টরের মনিরুল শেখের বাড়িতে। তার জন্মস্থান মাদারীপুরের শিবপুর উপজেলার শিরুয়াইল গ্রামে। পিতা মৃত কচির উদ্দিন ব্যাপারী ও মাতা মৃত সাজু বিবি। তার মুক্তিযোদ্ধা সনদ নং- ০১১০০৩০৩৪৬। আনু ব্যাপারী যুদ্ধদিনের স্মৃতিচারণ করে জানান, একাত্তরে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে ভারতে চলে যান। বিহারে একমাস ট্রেনিং নিয়ে শিবচরে ফিরে আসেন। থানা কমান্ডার লতিফের নেতৃত্বে তিনিসহ সালাম, কালাম, মতি, সুনীল পালসহ অনেকে যুদ্ধ করেছেন। নিজ এলাকাকে শত্রুমুক্ত করেছেন। আনু ব্যাপারী বলেন, দেশ স্বাধীন হলে আবার ফিরে গেছেন চাষবাসের জীবনে। ছোট্ট একটু ভিটেবাড়িতে থেকে পরের জমি চাষাবাদ করে জীবন কেটে যাচ্ছিল আনু ব্যাপারীর পরিবারের। কিন্তু দেশ স্বাধীনের যুদ্ধে জয়ী হলেও নদী ভাঙনের কাছে হার মানেন তিনি। প্রায় ত্রিশ বছর আগে আড়িয়াল খাঁ’র ভাঙ্গনে চার কাঠার ভিটে বাড়ি নদীর পেটে চলে যায়। এরপর শুরু হয় উদ্বাস্তু জীবন। চলে আসেন যশোরে। ঠাঁই নেন উপশহরে। এই এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে ভাড়া থেকে ভাঙাড়ি (পরিত্যক্ত টিন, প্লাস্টিকসহ বিভিন্ন ধাতব বস্তু) খুটে জীবনযাপন শুরু করেন। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে আর কাজ করতে পারেন না তিনি। আনু ব্যাপারী আরও জানান, মুক্তিযোদ্ধার ভাতা দিয়ে কোনভাবে জীবন চলে তাদের। তিন মেয়ে লেখাপড়া করে। আরেক মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। এক ছেলে একটি দোকানের কর্মচারী। ছয়জনের সংসার কোনভাবে চলে যাচ্ছে। আনু ব্যাপারীর আকুতি, প্রধানমন্ত্রী অনেক দিয়েছেন। তার কাছে আর চাওয়ার কিছু নেই। তবে শেষ বয়সে এসে তার একটু স্ত্রী, সন্তান নিয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই দরকার।
×