ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পাঁচ সমস্যা ॥ নানা উদ্যোগেও শৃঙ্খলা ফেরেনি

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ২৬ অক্টোবর ২০১৮

সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পাঁচ সমস্যা ॥ নানা উদ্যোগেও শৃঙ্খলা ফেরেনি

রাজন ভট্টাচার্য ॥ নিরাপদ সড়কের দাবিতে দেশজুড়ে ছাত্র আন্দোলন। পরিস্থিতি উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ১৭ দফা নির্দেশনা। যানজট নিরসন ও দুর্ঘটনা কমাতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহ থেকে পরিকল্পনা গ্রহণ। দেশজুড়ে অভিযান। পাশাপাশি সড়কে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অন্তত ২০টি প্রতিষ্ঠানের তৎপর হয়ে ওঠা। দেশের গুরুত্বপূর্ণ ২২টি মহাসড়কে তিন চাকার পরিবহন চলাচল নিষিদ্ধ করা। তবুও সড়কে শৃঙ্খলা ফেরেনি। কিছুটা উন্নতি হলেও পরিস্থিতি ফিরছে আগের জায়গায়। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন জাগতে পারে কেন শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব হয় না। পরিবহন বিশেষজ্ঞ, পুলিশ ও পরিবহন নেতারা বলছেন, পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ার পেছনে অন্তত প্রধান কারণ পাঁচটি। এর মধ্যে রয়েছে, নিয়মিত তদারকির অভাব, রাজনৈতিক বিবেচনা, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের অভাব, পথচারী-যাত্রী ও চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা ও সরকারী সিদ্ধান্ত তোয়াক্কা না করার কারণে সড়কে শৃঙ্খলা যেমন ফেরানো সম্ভব হচ্ছে না তেমনি নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা চ্যালেঞ্জ হিসেবে সামনে দাঁড়িয়েছে। এমন বাস্তবতায় প্রেক্ষাপটে ‘পথ যেন হয় শান্তির, মৃত্যুর নয়’ স্লোগানে দেশের দ্বিতীয়বারের মতো জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস পালিত হয়েছে। পরিবহন সংশ্লিষ্টদের মতামত, ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ পাল্লা দিয়ে গাড়ি চালানো। চুক্তিতে গাড়ি চালানোর কারণে সড়কে এ অবস্থা দেখা যায়। তাই মালিক সমিতি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল চুক্তিভিত্তিক বাস চালানো বন্ধ করা। নইলে রুট পারমিট বাতিলের সুপারিশ করা হবে। এজন্য মালিক শ্রমিকদের পক্ষ থেকে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছি। প্রায় দুই মাসের বেশি সময়ে এই সিদ্ধান্ত ৫০ ভাগও কার্যকর করা যায়নি বলছে মালিক সমিতির নেতারা। এছাড়া ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে ১৩০টি বাস স্টপেজ সাইনবোর্ড দিয়ে নির্ধারণ করে দেয়া হলেও চালকদের তোয়াক্কা নেই। ইচ্ছামতো এখন গাড়ি থামে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী দরজা বন্ধ রেখে বাস চলাচলের কথা ছিল। জনকণ্ঠের অনুসন্ধানে এই সিদ্ধান্ত বর্তমানে এক ভাগের কম কার্যকর হচ্ছে। সড়কে চলাচল সংকেত ঠিক নেই। ফিটনেসবিহীন যানবাহনও চলছে। চালকের বেপরোয়া মনোভাব বন্ধ হয়নি। বেপরোয়া পথচারীরাও। তবে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে এখনও ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ অনকে সড়কেই জেব্রা ক্রসিং চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া চালকের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে না। পাশাপাশি নগরীর সৌন্দর্য বর্ধনে সব ধরনের গণপরিবহন রং করে চালানোর কথা থাকলেও তা শতভাগ কার্যকর হয়নি। পথ চললে এরকম অসঙ্গতির কথা বলে শেষ করা যাবে না। দুর্ঘটনা থামছে না ॥ গত ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে দুই কলেজ শিক্ষার্থী বাসচাপায় নিহত হওয়ার পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় নামে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। তখন ঢাকাসহ দেশজুড়ে আন্দোলন হয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। সড়কে চলমান বিশৃঙ্খলা আর অনিয়ম বন্ধে নেয়া হয় নানা উদ্যোগ। ছিল নানা প্রতিশ্রুতিও। তবে চোখ খুলে দেয়ার পরও সড়কে দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর মিছিল থামেনি। নিরাপদ সড়ক দিবসের দিনও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। বুয়েটের সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) হিসাবে, চলতি বছরের প্রায় নয় মাসে শুধু রাজধানীতেই দুর্ঘটনা ঘটেছে ২২৪টি। এসব দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে ২১৫ জন। নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলনের হিসাবে, গত জুলাই মাসে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে ২১৩টি। এসব দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায় ২৭৭ জন। আগস্ট মাসে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৬১, দুর্ঘটনা ছিল ৩০০টি। আর সেপ্টেম্বর মাসে ২৮৬টি দুর্ঘটনায় মারা গেছে ৩০৯ জন। অপর বেসরকারী সংগঠন নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি বলছে, চলতি বছরের আট মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ হাজার ২০২ জন নিহত হয়েছে। নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনের পর ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি কমিটি করা হয়। গত ১৬ আগস্ট কমিটি ১৭টি নির্দেশনা জারি করে। পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাতটি নির্দেশনা ছিল দ্রুত কার্যকর করার মতো। এর মধ্যে রয়েছে বাস থেকে যত্রতত্র যাত্রী ওঠানো-নামানো বন্ধ করা। চলাচলের সময় অধিকাংশ বাসের দরজা বন্ধ রাখা। বেপরোয়া রাস্তা পারাপার বন্ধ, জেব্রা ক্রসিং করে দেয়াসহ প্রভৃতি। দেখা গেছে, সরকারী বিভিন্ন দফতরের সিদ্ধান্তের মধ্যে হেলমেট ছাড়া তেল নয় এই সিদ্ধান্ত এখন দৃশ্যমান। অর্থাৎ চালকের নিরাপত্তায় হেলমেট পরার বিষয়টি কার্যকর হয়েছে মাত্র। শুরুতে সড়কে কিছুটা শৃঙ্খলা দেখা গেলেও অভিযান এখন অনেকটাই শিথিল বলা চলে। তাই সবকিছুতেই গা ছাড়া ভাব। এবারের নিরাপদ সড়ক দিবসের অনুষ্ঠানে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত না হওয়ার আক্ষেপ থেকেই অনেক কথাই বলেছেন সড়ক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নিজেও। তিনি বলেন, নিজেকে কেউ সফল মন্ত্রী বলে প্রশংসা করলে মনে মনে সত্যিই কষ্ট পাই। আমি বেদনার অঙ্কুরে বিদ্ধ হই, মনে মনে একটু কষ্ট পাই, সঙ্গে লজ্জাও। কারণ এখনও সড়কে মৃত্যুর কাফেলা থামছে না, অনিয়মের কাফেলা থামছে না, বিশৃঙ্খলার কাফেলা থামছে না। তিনি বলেন, আমরা যত কিছুই করি সচেতনতা বৃদ্ধি করতে না পারলে কোন কাজে আসবে না। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে যতটা ইঞ্জিনিয়ারিং সমস্যা এবং এনফোর্সমেন্টের সমস্যা; তার চেয়ে বেশি সচেতনতা। সচেতনতা বাড়ানোর প্রক্রিয়াটাতে আমরা খুব এগোতে পারিনি। তিনি বলেন, আমাদের রাস্তায় যানজট-জলজট-জনজট এই তিনটি যখন মিলে মিশে একাকার হয়ে যায়, তখন সেই দৃশ্যপটটা অস্বাভাবিক। তিনি বলেন, চোখের সামনে যখন বিশাল একটা যানজট, যখন দেখি এই শহরে যানজটের মধ্যে আটকে আছে নারী, শিশু মুমূর্ষু রোগী তখন লজ্জা পাই। অনেকের হয়তো রাস্তাতেই জীবনের শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করতে হয়, লম্বা যানজটের কারণে। এসব কবে বন্ধ করতে পারব?’ ঢাকার পথচারীদের দখল হওয়া ফুটপাথ ফিরিয়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আসুন ঢাকার মানুষকে ফুটপাথ ফিরিয়ে দেই। তিনি বলেন, দেখা যায় সামান্য একটা গাড়ি এ্যাকসিডেন্ট হয়েছে, সেখানে চালকের দোষ নাকি পথচারীর দোষ সেটা পরে দেখা গেল, কিন্তু হাজার হাজার গাড়ি লম্বা যানজটের সারি। পথে পথে মানুষের কি যে অবর্ণনীয় কষ্ট। ‘সড়কে অনিয়মের কাফেলা চলমান একথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এখানে আমাদের দগদগে ব্যর্থতা। আমি মন্ত্রী, আমি এর দায় এড়াতে পারি না। পুরোপুরি সাফল্যের কৃতিত্বের দাবিদারও আমি নই। আমাদের এত কিছু করার পরও অনেক দূর পথ পাড়ি দিতে হবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, সড়কে-মহাসড়কে থ্রি হুইলার এখনও চলছে। আমরা কন্ট্রোল করতে পারিনি। আমরা ২২টি সড়কে এসব বন্ধের ঘোষণা করার পরও কন্ট্রোল করতে পারিনি। মঞ্চে উপস্থিত নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের প্রতি উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমরা যারা রাজনীতি করি আমরা সচেতন না হলে দেশ সচেতন হবে না। দেশকে বদলাতে হলে, সড়ক পরিবহনের যে বিশৃঙ্খলার ছবি সেটা পরিবর্তন করতে হলে বা বদলাতে হলে আমাদের বদলাতে হবে আগে। আমরা না বদলালে দেশ বদলাবে না। আমরা নিজেরা আইন করি আমরাই আইন ভঙ্গ করি। মোটরসাইকেল সড়কে নতুন আতঙ্ক উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সবার প্রচেষ্টায় একটা চিত্র পাল্টে গেছে। আগে যেখানে একজনও হেলমেট পড়ত না এখন সেখানে মোটরসাইকেলের দু’জনই হেলমেট পড়ছে। আমার মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রত্যেককে একটা করে গোলাপ দিয়ে শুভেচ্ছা জানাই। সড়ক দুর্ঘটনার একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, দুর্ঘটনার জন্য বাস-ট্রাকের চালক যতটা না দায়ী তার চেয়ে বেশি দায়ী মোটারসাইকেল। এই মোটরসাইকেলের কারণেই দুর্ঘটনা বাড়ছে। চলতি বছরের জুন মাসে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে দূরপাল্লার পথে বিকল্প চালক রাখা, মহাসড়কের পাশে চালকদের জন্য বিশ্রামাগার নির্মাণ, পথচারীদের জেব্রা ক্রসিং ব্যবহার নিশ্চিত করাসহ পাঁচ দফা নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে সময় সময় বৈঠক করে বাস্তবায়ন অগ্রগতি দেখার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে আর কোন বৈঠক হয়নি বলে জানা গেছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর সড়ক পরিবহন আইন প্রণয়নই বড় ঘটনা। এর বাইরে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ও ঢাকা মহানগর পুলিশ বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এর বেশির ভাগই মামলা-জরিমানা, কিছু চালককে স্বল্পমেয়াদী প্রশিক্ষণ প্রদান, প্রচারপত্র বিতরণে সীমাবদ্ধ। যেগুলোকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টোটকা, অস্থায়ী উদ্যোগ। একারণে নিরাপদ সড়কের জন্য যারা দীর্ঘ সময় আন্দোলন করে আসছেন তাদের মুখে আছে নানা আক্ষেপের কথা। তারা বলছেন, নিরাপদ সড়কের জন্য এত কিছুর করার পরও পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে না। নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় চালক, পথচারী, মালিক ও প্রভাবশালী সবাই আইন মেনেছে। কারণ তারা তখন বিপদে ছিল। এখন বিপদে নেই। এ জন্য কেউ আইন মানছে না, কাজও করছে না। মালিক-শ্রমিকদের বেপরোয়া মনোভাবের বিষয়ে তিনি বলেন, মালিক-শ্রমিকরা জানে তাদের যানবাহন ও চালকেরা ঠিক নেই। তারা আইন ভাঙবেই, মানুষ মারবেই। এ জন্য তারা আইনের বিরোধিতা করে। নিরাপদ সড়কের বিষয়ে সোচ্চার হলে তারা মাঠে নেমে যায়। এভাবে বিপদে পড়ে আইন মানার প্রবণতা থাকলে সড়ক নিরাপদ হবে না। সম্প্রতি এ বিষয়ে কথা বলেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াও। তিনি বলেন, ‘নগরবাসী আইন না মানলে শুধু পুলিশ নয়, সরকারের কোনো বাহিনীর পক্ষেই ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন সম্ভব নয়। সড়কের যে শৃঙ্খলা এবং নিরাপত্তা আমরা কতটুকু ফিরিয়ে আনতে পেরেছি সেটা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। কিন্তু আমাদের আন্তরিকতা, প্রচেষ্টার যে ঘাটতি ছিল না নির্দ্বিধায় এটা বলতে পারি। তিনি আরও বলেন, ঢাকা শহরে কোন বাস থামানোর কোন চিহ্ন ছিল না। কিন্তু ১৩০টার মতো স্টপেজ তৈরি করেছি। হেলমেট বিহীনভাবে যাতে মোটরসাইকেল চালাতে না পারে সে ব্যবস্থা নিয়েছি। যা অনেকটা সফল হয়েছে। জনগণ এটার প্রশংসা করেছে। ডিএমপি কমিশনার বলেন, প্রিয় মহানগরবাসীকে আমরা অনুরোধ জানিয়ে বলতে চাই, আপনারা যদি ট্রাফিক আইন না মানেন তাহলে সরকারের কোন বাহিনীর দ্বারা ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন করে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা কখনও সম্ভব নয়। তিনি বলেন, সবাইকে ট্রাফিক আইন মান্য করতে হবে এবং পুলিশকে সহায়তা করতে হবে। সড়ক মন্ত্রণালয় ও বিআরটিএ সূত্র বলছে, সড়কে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অন্তত ২০টি সরকারী প্রতিষ্ঠান আছে। সবারই বড় প্রকল্পের দিকে ঝোঁক বেশি। সড়ক নিরাপত্তা বা শৃঙ্খলার বিষয়টি আলাদাভাবে বিবেচনা করা হয় না। কোন বড় দুর্ঘটনার পর হইচই হলে তড়িঘড়ি কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়। জানতে চাইলে বিআরটিএ সচিব শওকত আলী বলেন, সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে বেশকিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কোনটি স্বল্প আবার কোনটি দীর্ঘমেয়াদী। তিনি বলেন, পর্যায়ক্রমে এসব উদ্যোগ বাস্তবে রূপ দেয়া হবে। তাছাড়া সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিএনটিএ সব সময় আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, পরিবহন মালিক কিংবা শ্রমিকদের পক্ষে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। এজন্য প্রয়োজন সকলের আন্তরিক সহযোগিতা। তিনি বলেন, আমাদের সবাইকে এ ব্যাপারে আন্তরিক হয়ে সামনে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে বেশ কিছু পরিকল্পনার বাস্তবায়ন শুরু করেছি। বছরের পর বছর চলা অনিয়মগুলো এক মাসে বা কয়েকদিনে দূর করা কঠিন বলেও মনে করেন তিনি।
×