ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ৮ অক্টোবর ২০১৮

 বাংলাদেশ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন

রুমেল খান ॥ ভুটান মানেই ব্যর্থতা বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য। ২০১৬ সালের ১০ অক্টোবর এখানকার চাংলিথিমাং স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের পুরুষ ফুটবল দল ভুটানের কাছে হারের লজ্জায় নিপতিত হয়েছিল। ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট এই মাঠেই সাফ অ-১৫ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতের কাছে হেরে কান্নার সাগরে ভেসেছিল মেয়েরা। একই ঘটনা ঘটতে পারত ২০১৮ সালের ৭ অক্টোবরও। একই ভেন্যুতে এদিন অনুষ্ঠিত হয় সাফ অ-১৮ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। কিন্তু এবার আর হার নয়, জিতেই ফাইনালে হারার ‘কুফা’ কাটাল বাংলার বাঘিনীরা। প্রতিপক্ষ নেপালকে ১-০ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত এই আসরের প্রথম চ্যাম্পিয়ন (অপরাজিত) হয়ে নিজেদের নামটি স্মরণীয় করে রাখল তারা। ম্যাচের ৪৯ মিনিটে মনিকা চাকমার উড়ন্ত ফ্রি কিকের বলে মাথা ছুঁইয়ে কাক্সিক্ষত গোলটি এনে দেয় ডিফেন্ডার মাসুরা পারভীন, যে কিনা একসময় ছিল জাতীয় কাবাডি খেলোয়াড়। জিতলেও বাংলাদেশ দলকে বিস্তর ঘাম ঝরাতে হয়েছে। তাদের অনেক বেগ দিয়েছে হিমালয়কন্যারা। তারা বারবার চেষ্টা করেছে বাংলাদেশের স্বাভাবিক খেলার ধরন নষ্ট করতে। সেক্ষেত্রে প্রথমার্ধে সেই চেষ্টায় সফল হয় তারা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে জেগে ওঠে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষের জালে পাঠায় গোল। এছাড়া করে একাধিক আক্রমণ। গোলসংখ্যা আর বাড়াতে না পারলেও নিজেদের জালে বল ঢুকতে দেয়নি। শেষ পর্যন্ত খেলা শেষ হলে আনন্দের কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে মেয়েরা। এই আসরে বাংলাদেশ একমাত্র দল হিসেবে হারেনি। তাছাড়া সবচেয়ে বেশি গোল (২৪) এবং সবচেয়ে কম গোল (১) খাওয়ারও কৃতিত্ব তাদের। বাংলাদেশের ফরোয়ার্ড স্বপ্না ৮ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়। এই আসরটি এবারই প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে। অভিষেকেই স্মরণীয় সাফল্য পেয়ে ইতিহাস গড়ল বাংলার বাঘিনীরা। সোনালি ট্রফি নিয়ে আজই সকালে বিমানযোগে ঢাকায় আসছে মৌসুমীরা। এর আগে একই মাঠে অনুষ্ঠিত তৃতীয় স্থান নির্ধারণী খেলায় স্বাগতিক ভুটানকে ১-০ গোলে হারায় ভারত। বয়সভিত্তিক ফুটবলে এ নিয়ে সপ্তমবারের মতো সাফল্য পেল বাংলাদেশ। প্রতিটি দলেরই কোচ হচ্ছেন গোলাম রব্বানী ছোটন। বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে আজ পর্যন্ত নেপালের কাছে হারেনি বাংলাদেশ। তবে সিনিয়র পর্যায়ে একবার হেরেছে। তাও সেটা সেই ২০১০ সালে, ০-৩ গোলে, সাফ নারী চ্যাম্পিয়শিপে। খেলাটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল কক্সবাজারে। ফাইনালিস্ট দু’দলের রোড টু ফাইনাল হচ্ছে এ রকম- বাংলাদেশ ‘বি’ গ্রুপে পাকিস্তানকে ১৭-০ এবং নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিতে ওঠে। সেমিতে তারা স্বাগতিক ভুটানকে ৪-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে। একই গ্রুপের দল নেপাল গ্রুপ পর্বের অন্য ম্যাচে পাকিস্তানকে ১২-০ গোলে হারিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে নাম লেখায় শেষ চারে। উল্লেখ্য, ভুটানের মাটিতে এর আগে বাংলাদেশ দল দু’বার শিরোপা জিতেছে। দু’বারই পুরুষ দল। একবার ২০০২ সালে আমন্ত্রণমূলক টুর্নামেন্টে (বাফুফে একাদশ নামে)। আরেকটি ২০১৪ সালে কিংস কাপে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। অ-১৫ দলের সেই ব্যর্থতা-অপূর্ণতা ভুলিয়ে দিল অ-১৮ দল শিরোপা জিতে। এখন দেখার বিষয়, আগামীতে তারা আরও এমন সাফল্য কুড়িয়ে নিতে পারে কিনা।
×