ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচন পন্ড করতে অগ্নিসন্ত্রাস চালাবে জামায়াত!

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

 নির্বাচন পন্ড করতে অগ্নিসন্ত্রাস চালাবে জামায়াত!

শংকর কুমার দে ॥ আগামী নির্বাচনের আগেই গোপন তৎপরতায় এক ছাতার নিচে দেখা যেতে পারে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটভুক্ত জামায়াত-শিবির ছাড়াও যুদ্ধাপরাধী গোষ্ঠী, বঙ্গবন্ধুর খুনী চক্র, জঙ্গী গোষ্ঠীগুলোকে। সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের আড়ালে নির্বাচনকালীন সরকারকে চাপে রাখতে ওসব গোষ্ঠী ও চক্র গোপন সমঝোতায় এনেছে তাদের আন্তর্জাতিক মুরব্বি। জামায়াত-শিবির আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে না পারলেও নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এক ছাতার নিচে যোগ দিয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচীর আড়ালে জ্বালাও, পোড়াও সহিংস সন্ত্রাসের তা-বলীলা চালানোর যে নীলনক্সা তৈরি করা হয়েছে। গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধাপরাধী গোষ্ঠী, বঙ্গবন্ধুর খুনী চক্র, জঙ্গী গোষ্ঠীকে এক ছাতার নিচে আনার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে জামায়াত-শিবিরকে। নির্বাচনকালীন সরকারের সময়ে জঙ্গী স্টাইলে চোরাগোপ্তা হামলা, গুপ্তহত্যা, স্পর্শকাতর স্থাপনায় হামলা, ভিআইপি শ্রেণীর ব্যক্তিদের খুন, সহিংস সন্ত্রাস চালানোর প্রস্তুতি চূড়ান্ত করবে তারা। নির্বাচনকালীন সরকার সময়ের নির্বাচন বানচাল করার জন্য নাশকতা চালানোর বিরাট অঙ্কের টাকার বাজেট নিয়ে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিয়েছে তারা। বিগত দিনে ৫ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠেকাতে দেশব্যাপী যে ধরনের সহিংস সন্ত্রাস চালানো হয়েছিল তার চেয়েও ভয়ঙ্কর মূর্তিতে তারা আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের চেষ্টা চালাতে পারে বলে গোয়েন্দা তথ্যের উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের এক কর্মকর্তা বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খানের জামাতা ফুয়াদ জামানকে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের একটি মামলায় গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। শুধু বঙ্গবন্ধুর খুনী চক্রই নয়, যুদ্ধাপরাধী গোষ্ঠীও গোপন তৎপরতায় যুক্ত হয়েছে। যুক্ত আছে জঙ্গী গোষ্ঠীগুলোও। সবার নেতৃত্বে আছে জামায়াত-শিবির। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটভুক্ত জামায়াত নির্বাচনে অংশ নিতে না পারলেও নির্বাচনকালীন সরকারের পতন ঘটিয়ে নির্বাচন বানচালে সক্ষম হলে আবারও প্রকাশ্যে রাজনীতিতে আসতে পারবে জামায়াত-শিবির। লন্ডনে এক গোপন মিটিংয়ের গোপন সমঝোতায় তাদের সম্মত করেছে তাদের আন্তর্জাতিক মুরব্বি। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠেকাতে ব্যর্থ হলেও এবারের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে সরকার করতে না পারে সেজন্য সরকারী অফিস-আদালত, থানা, বিদ্যুত অফিস, কেপিআই, রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা টার্গেট করে তারা আগুন, ভাংচুর ও ককটেল ও পেট্রোলবোমা হামলা, গাছ কেটে রাস্তা অবরোধ, সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী, পুলিশ বাহিনীর সদস্য ও রাজনৈতিক নেতার ওপর ককটেল নিক্ষেপ, মহাজোটের অন্তর্ভুক্ত দলের নেতাকর্মী ও তাদের রাজনৈতিক কার্যালয়ে হামলা এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালাতে পারে বলে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা বলেন, বিএনপির সব কর্মসূচীতে জামায়াতে ইসলামী পাশে থাকবে বলে জানিয়েছেন দলটির নায়েবে আমির মিয়া গোলাম পরওয়ার। গত ১২ সেপ্টেম্বর বুধবার খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির প্রতীকী অনশন কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে এ কথা বলেন তিনি। জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, আমাদের বক্তব্য খুব পরিষ্কার দেশনেত্রীকে কারাগারে রেখে বাংলাদেশে কোন নির্বাচন করতে দেয়া হবে না। জামায়াতে আমিরের হুমকিই প্রমাণ করে তাদের শক্তি ও সাহসের উৎস কোথায়? এতদিন চুপচাপ থাকলেও নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের প্রাক্কালে এ ধরনের হুমকি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান চালাতে ক্ষেত্রে সহিংস সন্ত্রাসেরই ইঙ্গিত দেয়।
×