ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ঢাকার দিনরাত

সড়ক বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে বেশ তৎপরতা চোখে পড়ছে ঈদের পর থেকেই। ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশও যোগ দিয়েছেন এবং সেইসঙ্গে আছে বয়স্কাউট ও গার্লগাইড সদস্যরা। রেডক্রিসেন্ট ও বিএনসিসির কর্মীরাও নিয়োজিত হয়েছেন একই কাজে। তবে পুলিশ ছাড়া বাদবাকিরা পথচারী তথা জনসাধারণের ট্রাফিক আইন না মেনে চলাচলে বাধা প্রদান করছেন। রাস্তার মোড় বা মাঝখান দিয়ে রাস্তা পেরুতে বাধা দিচ্ছেন। সবাইকে ফুটওভারব্রিজ দিয়েই রাস্তা পেরুতে হবে। বয়স্ক বা অসুস্থ ব্যক্তিদেরও ছাড় দিতে যেন তারা নারাজ। উত্তরা হাউস বিল্ডিং মোড়ে এমনটাই চোখে পড়ল। পক্ককেশ এক বৃদ্ধকে ফুটওভারব্রিজের রাস্তা দেখিয়ে না দিয়ে তারা যদি মানুষটির হাত ধরে রাস্তা পার করে দিতেন, তবে ভাল লাগত। চৌরাস্তার মোড় পেরুতে গিয়ে গণপরিবহন থেমে পড়ছে, যাত্রী তুলছে। আবার যাত্রী তোলার জন্য অত্যন্ত ব্যস্ত এই মোড়টিতে বাসচালকরা যাত্রী তোলার অভিপ্রায়ে গাড়ি চালাচ্ছেন অতি ধীর গতিতেÑ এসব অবশ্য দেখেও দেখছেন না পুলিশ সদস্যরা। মতিঝিলগামী এক সিটিং সার্ভিসের বাস মোড় থেকে কিছুটা সামনে গিয়ে যাত্রী তুলছিল। এক ট্রাফিক পুলিশ বাস থামিয়ে উঠে পড়লেন বাসে। খানিক পর নেমে এলেন চালকের কাছ থেকে গাড়ির কাগজপত্র নিয়ে। পেছনে পেছনে চালকের সহকারী। কে শোনে কার কথা। পুলিশ বাস চালকের সহকারীকে নির্দেশ দিলেন গাড়ি চালিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে জসীম উদ্দীন স্টপেজে যাওয়ার জন্য। সেখানে পুলিশ বক্স রয়েছে। মোটর সাইকেলে উঠে পড়লেন পুলিশ নির্দেশ দিয়েই। অগত্যা ওই বাসটিও তাকে অনুসরণ করতে লাগল। বুঝলাম না বিষয়টি। চালক অন্যায় করলে তাকে স্পটেই জরিমানা করার কথা, সেজন্যে এক কিলোমিটার দূরে যেতে হবে কেন? এক পথচারী বললেন, পুলিশ টাকা খাওয়ার জন্য এমন সব কা- এখনও করে চলেছে। ছাত্রদের এত বড় একটা আন্দোলনের পর এসব কমবে ভেবেছিলাম। যাহোক, কয়েকটি কথা না বললেই নয়। প্রথমত হেলমেট প্রসঙ্গ। মোটরসাইকেল চালকদের হেলমেট পরা বাধ্যতামূলক করতে হেলমেট পরিধানবিহীন চালকের কাছে জ্বালানি বিক্রি না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এতে কিছুটা উন্নতি হয়েছে পরিস্থিতির। তবে কাগজে এমন ছবিও ছাপা হচ্ছে যাতে দেখা যাচ্ছে হেলমেটবিহীন চালকের মোটরসাইকেলে জ্বালানি বিক্রি করা হচ্ছে। এটা অনভিপ্রেত। তাছাড়া মোটরচালকের পেছনের সিটে যিনি বসবেন তারও হেলমেট পরিধান করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু এই নিয়ম কদাচিত মানা হচ্ছে। প্রশ্ন হলো এসব অনিয়ম রোধে কেন পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছে না। তারা গণপরিবহনের বাসচালককে তো ভালই হেনস্তা করছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করছে কিনা সেটাও মনিটর করা লাগবে। এমন একটি গোপন টিম অর্থাৎ সাদা পোশাকে সাধারণ যানবাহনে টহল দিয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিতদের আরও কর্তব্যপরায়ণ করার কাজটি শুরু করলে মন্দ হয় না। কানে তালা চোখে জ্বালা রাজধানী যে ‘রাজকীয় ধ্বনি’ ফিরে পেয়েছে, ফিরেছে আপন ছন্দে- সে কথা বলছি তিতিবিরক্ত হয়ে। যানজটের কথা বলে আর কী হবে! সেদিন মহাখালী ফ্লাইওভারে প্রায় একঘণ্টা অবস্থান করতে হলো। এই উড়াল সড়কটি তৈরি করা হয়েছিল যানজট কমাতে। প্রথম প্রথম সাঁই করে পেরুনো যেত এটি, কিন্তু অপরিকল্পিত নগরীর যে মহাসমস্যা! বাধাহীনভাবে ঢাকায় গাড়ির সংখ্যা, বিশেষ করে ব্যক্তিগত মোটরগাড়ির সংখ্যা বাড়তে বাড়তে সীমা ছাড়িয়ে গেল। অফিসটাইমে একযোগে যদি সেসবের ছোট একটা অংশও মহাখালী ফ্লাইওভার পেরুতে চায় তাহলে কী দশা হবে তা অনুমান করতে কষ্ট হয় না। আবার উড়ালসড়কটি পেরিয়েই পড়তে হয় জাহাঙ্গীরগেটের মোড়ে। উত্তর দিকে ক্যান্টনমেন্ট ও মিরপুরের একটা বড় এলাকায় বসবাসকারীরা ওই রাস্তা দিয়েই শহরে প্রবেশ করেন। ফলে সেখানে একটা ভিড় না থাকার কারণ নেই। তারপর রয়েছে বিজয় সরণির মহাফাঁদ। অবশ্য তার আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পেরুনো আরেক ঝক্কি। সেখানে ট্রাফিকের দুটো প্রতিবন্ধকতা (বিমান বাহিনীর আবাসিক এলাকায় প্রবেশমুখসহ)। গাড়ির সারির মহা চাপ। বিজয় সরণির উড়ালপথও তৈরি করা হয়েছিল ওই যানজট লাঘবের কথা মাথায় রেখেই। পুব-পশ্চিমমুখী মানুষ যাতে প্রায় বাধাহীনভাবে পথ পেরুতে পারে। এখন বিজয় সরণির সিগন্যালে পড়া মানেই কমপক্ষে দশ মিনিট বসে থাকা। তা যে প্রান্তেরই গাড়ি হোক না কেন। রাস্তা কম, গাড়ি বেশি। আবার বিশেষ সময়ে একসঙ্গে রাস্তায় নেমে পড়া। ফলে অবধারিতভাবে এই এলাকা দিয়ে নগরীতে চলাচলকারী ঢাকাবাসী নিত্য সময় অপচয়ের শিকার। যাহোক, বলছিলাম ‘রাজকীয় ধ্বনি’-র কথা। ঢাকার রাস্তা এবং আবাসিক এলাকা- দু’জায়গাতেই শব্দদূষণ মারাত্মক হয়ে উঠেছে। ঈদের ছুটির আগে পরে বেশ ক’টা দিন ঢাকায় কিছুটা জনশূন্যতা ও শান্ত পরিবেশ বিরাজ করেছিল বলেই গত সপ্তাহ থেকে ঈদ-পূর্ব চারিত্র ফিরে পাওয়ায় আবার তীব্র শব্দসন্ত্রাসের বিষয়টি সামনে চলে আসছে। ঢাকার বুকে নতুন বহুতল ভবন ওঠায় কোন ছেদ পড়ছে না। প্রধান প্রধান কয়েকটি আবাসিক এলাকায় মাসের পর মাস ধরে নতুন ভবন নির্মাণের মহাযজ্ঞ চলে। এ সময় যে বিচিত্র ও বিপুল শব্দ উৎপন্ন হতে থাকে তা এলাকাবাসীর দিনের স্বস্তি রাতের শান্তি হারাম করার জন্য যথেষ্ট। আর রাজপথের বিষয়টি আরও অসহ্য। বেশিরভাগ গাড়ির চালকই সামান্য প্রয়োজনে হর্ন বাজানোর ব্যাপারে থাকেন অকৃপণ। হর্নের শব্দ অতিউচ্চ। শব্দ দূষণের এই প্রতিযোগিতায় মোটরসাইকেলকে এগিয়ে রাখতে হবে এ কারণে যে সব হর্ন ছাপিয়ে এটির হর্নই চড়া ও প্রলম্বিত হয়ে থাকে। বিশেষ করে রাস্তার মোড়ে সিগন্যাল বাতির নির্দেশ উপেক্ষা করে তড়িঘড়ি জায়গাটা পেরুতে গিয়ে একসঙ্গে ৫-৭টি মোটরসাইকেল যখন একযোগে হর্ন বাজাতে শুরু করে। আশঙ্কা হয় শব্দের তীব্রতায় কানের পর্দা ফেটে যাবে না তো! কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ, মোটরসাইকেলগুলো বেঁধে দেয়া শব্দমাত্রায় হর্ন বাজাচ্ছে কিনা এ বিষয়ে একটু অনুসন্ধান করুন। এক ঘণ্টাতেই পরিস্থিতি বুঝে যাবেন। এরপর একটা কড়া অভিযান চালিয়ে মাত্র একশ’ চালককে জরিমানা করলেই মোটরসাইকেলঅলাদের খবর হয়ে যাবে। আর হ্যাঁ, এই সঙ্গে ফুটপাথের ওপর মোটরসাইকেল উঠিয়ে দেয়ার জন্যও জরিমানার ব্যবস্থা রাখা জরুরী হয়ে উঠেছে। লেগুনা প্রসঙ্গে দুয়েকটা কথা না বললেই নয়। পুলিশের আদেশবলে প্রধান প্রধান সড়কসহ অনেক পার্শ্বসড়কে লেগুনা পরিবহন বন্ধ হওয়ায় যে সব রুটে বাস চলে না সেসব রুটের যাত্রীরা বড় বিপদে পড়েছেন। লেগুনায় পনেরোজন যাত্রী নেয়া যায়। এটা ঠিক যে লেগুনার অনেক চালকই অপ্রাপ্তবয়স্ক, সেকথা একবার এ কলামে উল্লেখও করেছি। সেটা একটা সমস্যা বটে। কিন্তু গণপরিবহন সঙ্কট ও নৈরাজ্যেও এই মহানগরীতে লেগুনার মতো একটি সহজ পরিবহন বন্ধ করার আগে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ অনিবার্য ছিল। নিষিদ্ধ করা সহজ কাজ, কঠিন হলো হাজার হাজার নিরুপায় কর্মজীবীর সহজ চলাচল নিশ্চিত করা। লেগুনার পরিবর্তে বাধ্য হয়ে মানুষ রিক্সা ব্যবহার করছে। তাতে তার দৈনন্দিন ব্যয় কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। তাছাড়া সব সড়কে রিক্সা চলারও অনুমতি নেই। তাই লেগুনার বহু যাত্রী বহুগুণ অর্থ বেশি দিয়েও সময়মতো কর্মস্থলে পৌঁছানোর নিশ্চয়তা পাচ্ছে না। লেগুনার বিকল্প হতে পারে অটোরিক্সা কিংবা মাইক্রোবাস। দলবদ্ধ ইভটিজিং! সচিত্র ঘটনাটি ফেসবুকে শেয়ার করেন একটি টিভি চ্যানেলের অনলাইনে কর্মরত সাংবাদিক মেহেদী হাসান। লেখেন: নারী নিগ্রহকারী ভরা বাস! ছবিতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের যে বাসটি, সায়েন্সল্যাব থেকে শংকর পর্যন্ত তাদের পাশাপাশি/পিছে আসার সুযোগ হয়েছে, জ্যামের কারণে। পুরো সময়টা তারা গ্যাং ইভটিজিং করতে করতে গেল রাস্তাজুড়ে। পুরোটা পথ তাদের পাশে রাস্তায় রিক্সায় যে মেয়েটি পড়েছেন, এরা সম্মিলিতভাবে গগনবিদারী চিৎকার করে উঠেছে, অসম্ভব অবমাননাকর মন্তব্য ছুটে গেছে প্রতিটি নারীর দিকে। সেটা লম্বা সময় ধরে হতে দেখা কী বিশ্রী অভিজ্ঞতা, বোঝাতে পারব না! এরা নিশ্চয় প্রতিদিন এই পথে যায়?’ বাসটির পেছনে লেখা ‘শঙ্খনীল’ ঢাকা কলেজ। পোস্টদাতার সহকর্মী ফাহমিদা আখতার মন্তব্য লিখলেন: এদের মা-বোনেরা এদেরকে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেনি কখনো। নিজেদের তিক্ততা শেয়ার করলে তাদেরকেও যদি সন্তান/ভাইরা করুণার চোখে দেখে! আমার ছেলের বোঝার বয়স হলে আমার ব্যক্তিগত প্রতিটা এ্যাবিউজের ঘটনা শেয়ার করব।’ ফারজানা প্রিয়দর্শিনী আফরিন আট বছর আগের স্মৃতিচারণ করেন: ‘ওই কলেজের গেট-এর সামনে বসে থাকে একদল। চলমান নারীদের অত্যন্ত কদর্য ভাষায় টিজ করে, বান্ধবীসহ হলের এক ছোট বোন এর শিকার হলে প্রতিবাদ করায় ওদের মেরে রক্তাক্ত করেছিল। ওরা নীলক্ষেত থানায় মামলা করতে গিয়েছিল, মামলা নেয়নি পুলিশ। সময় ২০১১।’ রোকেয়া সুলতানা বিলুর বক্তব্য বুকে গিয়ে বাঁধে। তিনি লিখলেন : ‘একদিন আমিও এরকম স্কুলগামি বাসের বাচ্চাদের টিজিংয়ের শিকার হয়েছিলাম প্রথমে বুঝতেই পারিনি, পরে অবাক হয়েছিলাম আর সব শেষে কান্না পাচ্ছিল এটা ভেবে যে আমার সন্তান হলে মোটামুটি ওদের কাছাকাছি বয়সের হতো Ñ ওদের এটুকু বোধও নেই।’ কথা হলো প্রকাশ্যে এইসব দলবদ্ধ ইভটিজিং থামানোর কী উপায়? আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কি কোনা দায় নেই? পথচলতি ব্যস্ত মানুষের পক্ষে কি সম্ভব চোখের সামনে এই অপকর্ম ঘটতে দেখে প্রতিবাদ ও ভর্ৎসনা করা? বরং ঢাকা কলেজ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কাজ হতে পারে। রবীন্দ্রস্মরণ : মানহীনতা এবং একজন অদিতি এ সপ্তাহেও রবীন্দ্রস্মরণ অব্যাহত আছে ঢাকায়। এর দুটো আয়োজনে যাওয়ার সময় বের করি। বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থার আয়োজনটি (৭৭তম রবীন্দ্রস্মরণানুষ্ঠান) ছিল দুদিন, শুক্র ও শনিবার। শুক্রবার সন্ধ্যায় পণ করি অন্তত এক ঘণ্টা শুনবো গান। সংগঠনটি সচরাচর পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনেই বার্ষিক এই আয়োজনটি করে থাকে। এবার করল জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে। তার মানে দর্শকসংখ্যা বেড়েছে। গিয়ে দেখি মিলনায়তনের প্রায় অর্ধেকটা ভরেছে। মঞ্চের দু’পাশে একজন করে দু’জন এসে বসছেন, একের পর এক গান পরিবেশন করছেন। সব মিলিয়ে পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, মঞ্চসজ্জা নান্দনিক। নতুন নতুন বেশ কিছু নাম শুনলাম শিল্পীদের। কান খোলা, গান ঢুকছে। আর হতাশ হচ্ছি। এ যে মানহীনতার ছড়াছড়ি! এক ঘণ্টায় পেলাম দু’খানা মানসম্মত পরিবেশনা। দর্শকদের হাততালিও বেশি পড়ল ওই দুটি গানে। তার মানে হলো দর্শক-শ্রোতারা ভালই বোঝেন গানের ভালমন্দ। তাদেরকে আর কতকাল উপেক্ষা করবে এই পুরনো সংগঠনটি। এটা অস্বীকার করব না যে একটি সংগঠন চালাতে হলে কিছু আপোশ করতে হয়। তাই বলে পাক্কা এক ঘণ্টায় পাব মাত্র দু’জনকে? আশা করব আগামীতে এই সংগঠনের কর্তাব্যক্তিরা মান রক্ষার ব্যাপারে আরেকটু কঠোর হবেন। দশটি গানের ভেতর ছ’খানা অন্তত মানসম্পন্ন পরিবেশনা উপহার দেবেন। তাতে সংগঠনটির ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে। শনিবার সন্ধ্যায় অদিতি মহসীন গাইলেন স্টার মেলোডিজের সুপরিকল্পিত আয়োজনে, ডেইলি স্টার ভবনে। অনুষ্ঠানের অপর শিল্পী ফাহিম হোসেন চৌধুরী। শিরোনামÑ নতুন শতকে পরিণত রবীন্দ্রনাথ। দুই শিল্পীর পরিবেশনায় উপভোগ্য হয়ে উঠেছিল আসর। অদিতি মহসীনের কথা আলাদাভাবে বলতেই হবে। রবীন্দ্রনাথের গান যে সঠিক সুরে ও শুদ্ধ বাচনে সুচর্চিত কণ্ঠে গাইলেই শ্রুতিসুখকর হবে, এমন নয়। শিল্পী যদি গানের বাণী গভীর অনুধাবনে সক্ষম হন তবে গায়কীতে তার সংকেত ও মাত্রা যুক্ত হবেই। সেটিই গুরুত্বপূর্ণ। পরিবেশিত প্রতিটি গানের প্রাসঙ্গিক তথ্য অদিতির জানা, গানের ভাব অনুধাবনেও সক্ষম তিনি। তার কথায় ধারণা হলো শব্দজ্ঞানও তার প্রখর। পরপর দুটি বৈতালিক গান পরিবেশনে তার মৃদু আপত্তি লক্ষ্য করলাম, এটিও রুচিকর। আমি তোমার সঙ্গে বেঁধেছি আমার প্রাণ, আর বিরহ মধুর হলো আজি মধুরাতেÑ এ দুটি গান অনেককাল পর একজন শিল্পীর একান্ত নিজস্ব গান বলেই অনুভূত হলো। এমন স্বাতন্ত্র্য ও সৌন্দর্য প্রতিষ্ঠায় তিনি সমর্থ হয়েছেন। তার মতো গুণী শিল্পীর গান নিবিষ্ট শ্রোতার জন্যে বিশেষ প্রাপ্তি। ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ [email protected]
×