ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

স্মরণসভায় মেনন

ডাঃ ইব্রাহিম ছিলেন সফল চিকিৎসক, শিক্ষক গবেষক ও মানব হিতৈষী

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ডাঃ ইব্রাহিম ছিলেন সফল চিকিৎসক, শিক্ষক গবেষক ও মানব হিতৈষী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এমপি বলেছেন, ভাল কাজের জন্য সকলেই এগিয়ে আসে। তবে নিজের জীবন নিবেদন করে আমৃত্যু মানুষের সেবা করে যান এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। এমন মানবসেবী মানুষদের একজন হলেন অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ ইব্রাহিম। তার যে চিন্তার জায়গা ছিল তা প্রশংসার নয়, কৃতজ্ঞ থাকার মতো বিষয়। তিনি ছিলেন একজন সফল চিকিৎসক, শিক্ষক, গবেষক ও মানব হিতৈষী। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা জাতীয় অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ ইব্রাহিমের ২৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাজধানীর বারডেম মিলনায়তনে স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি (বাডাস) এ স্মরণ সভার আয়োজন করে। সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ এ কে আজাদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সমিতির মহাসচিব মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন ও বারডেম জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক জাফর এ লতিফ। আর ডাঃ মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে স্মৃতিচারণ করেন সাবেক সচিব ও সাবেক তথ্য কমিশনার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবু তাহের ও বাডাস-এর আজীবন সদস্য স্থপতি শাহ আলম জহিরউদ্দিন। রাশেদ খান মেনন বলেন, চিকিৎসাসেবা ও আর্তমানবতার সেবায় জাতীয় অধ্যাপক ডাঃ মোঃ ইব্রাহিম এক বিশেষ স্থান দখল করে রেখেছেন। তিনি নিজেকে মানুষের সেবায় উৎসর্গ করে গেছেন। তার জীবনের গুণগুলো অনুসরণ করলে সমাজ, দেশ ও জাতি উপকৃত হবে। তিনি তার কর্মের মধ্য দিয়ে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবার পূর্ণাঙ্গ ধারণা দিয়ে গেছেন। তার আদর্শ খুবই অনুকরণীয়। অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ ইব্রাহিম সত্যিকার অর্থে এমন একজন প্রতিভাধর ব্যক্তি ছিলেন যার মধ্যে বহুমুখী মানবীয় গুণের সমাহার ছিল। তিনি অনেক কিছুই আগে থেকেই চিন্তা করতে পারতেন। কর্মজীবনের পুরো সময় তিনি জনহিতকর কাজ করে গেছেন। সেই কাজের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে আজকের বারডেম। তিনি নিজেই একটি বিশাল প্রতিষ্ঠান। চিকিৎসা জগতের বাইরেও তিনি মহান সামাজিক দায়িত্ব পালন করে গেছেন। গতানুগতিকতার বাইরে অনুসন্ধিৎসু মন নিয়ে, নিত্য নতুন পন্থা পদ্ধতি প্রক্রিয়া অনুধাবন অনুসরণে চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নয়নে তিনি ছিলেন সদা সচেষ্ট ও নিবেদিত নিষ্ঠাবান। চিকিৎসক ও সমাজকে গ্রন্থিত করে তিনি মেডিক্যাল সোশ্যাল ওয়ার্ক এবং চিকিৎসা নৃ-বিজ্ঞান এবং ব্যবহারিক চিকিৎসা নৃ-বিজ্ঞান শাস্ত্রের পঠন পাঠন এবং গবেষণার স্কুল তৈরি করেছিলেন। বাংলাদেশে এটি ছিল অত্যন্ত বৈপ্লবিক একটি পদক্ষেপ। স্বাস্থ্যসেবায় আত্মনিয়োগের পাশাপাশি সমাজে ইতিবাচক ভূমিকা রাখার মাধ্যমেই জাতীয় অধ্যাপক ডাঃ মোঃ ইব্রাহিমের আদর্শ ও শিক্ষা সমুন্নত রাখতে এবং তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাতে পারি। মোঃ আবু তাহের বলেন, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির জন্য আজকে একটি বিশেষ দিন। ১৯৮৯ সালের এই দিনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ডাঃ মোহাম্মদ ইব্রাহিম মৃত্যুবরণ করেন। সেই থেকে এই দিনটি মৃত্যুবার্ষিকী ও সেবা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। তবে আমাদের কাছে এটি একটি আত্মার বিষয়। তার যে আদর্শ ছিল তা অমায়িক। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি তার অপূর্ণ ইচ্ছেগুলো সমাপ্ত করার। এদিকে, ডাঃ মোহাম্মদ ইব্রাহিমের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী কর্মসূচী পালন করে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি। এর মধ্যে সকাল ৮টায় মরহুমের বনানীর কবর জিয়ারত ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়েছে। এছাড়া সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ডায়াবেটিক সমিতি, বারডেম, এনএইচএন ও এইচসিডিপি’র উদ্যোগে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বিনামূল্যে ডায়াবেটিস নির্ণয়ের ব্যবস্থা করেন। আর বেলা ১২টায় স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বারডেম মিলনায়তনে অনুষ্ঠান শেষে ‘স্বাস্থ্যসেবায় ডাঃ মোঃ ইব্রাহিমের অবদান’ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
×