ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদযাত্রায় স্বস্তি আসতে পারে উত্তরের পথে

প্রকাশিত: ০৪:৪২, ১৯ আগস্ট ২০১৮

 ঈদযাত্রায় স্বস্তি আসতে পারে উত্তরের পথে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঈদ যাত্রায় এবার কিছুটা স্বস্তি আসতে পারে উত্তরের পথে। দক্ষিণ পশ্চিমের যাত্রা পথের মধ্যে পাটুরিয়া ফেরিঘাটে ভোগান্তি থাকলেও ভিড় নেই শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি ঘাটে। আজ, কাল, পরশু মিলে কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে ঢাকা ছাড়বে বেশিরভাগ মানুষ। ফলে পথের বিড়ম্বনা বাড়বে ছাড়া কমবে না। এবার ঈদের আগে রবি এবং সোমবার অফিস খোলা থাকায় কর্মজীবীদের কেউই ঢাকা ছাড়তে পারেনি। ফলে বুধবার ঈদের আগে মঙ্গলবার সব থেকে বেশি ভিড় হবে শেষ দিন একসঙ্গে গার্মেন্টস শ্রমিকদের সঙ্গে অন্যকর্মজীবীরাও ঢাকা ছাড়ায় ভোগান্তি কয়েকগুন বাড়বে। প্রতিবার ঈদকে কেন্দ্র করে পরিবহনের চেয়ে মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়াতে আসা যাওয়ার পথে ভোগান্তি বাড়ে। এবার শুক্রবার থেকেই যা শুরু হয়েছে। শনিবারও ভোগান্তি ছিল কোন কোন রাস্তায়। তবে বুধবার ১৫ আগস্ট আর শুক্র ও শনি মিলিয়ে অনেকে রাজধানী ছেড়ে চলে যাবে এমন ধরণা করা হলেও শনিবার রাজধানীতে যথারিতি স্বাভাবিক যানজট ছিল। রাজধানীর কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ডে এসবি পরিবহনে ঈদে বাড়ি যায়ার জন্য শনিবার সকাল থেকে অপেক্ষা করছিলেন ফারজানা ইসলাম। রাজশাহীর উদ্দেশে বাস ছাড়ার নির্ধারিত সময় ছিল ১০টা ৪৫ কিন্তু বাস আসতে দেরি করায় প্রায় ৪ ঘণ্টা পর ২টা ২০ মিনিটে বাসটি ছেড়ে গেছে। ফারজানা ইসলাম ৪টার দিকে জানান সারা রাস্তায় থেমে থেমে গাড়ি চলছে। অন্যদিকে পাটুরিয়া হয়ে কুষ্টিয়াগামী হানিফ পরিবহনের যাত্রী সোহেল রানা ঢাকা থেকে সাড়ে সাতটার সময় রওনা দিয়ে সকাল সাড়ে ১০টায় পাটুরিয়া গিয়ে পৌঁছেছেন। তিনি জানান, সকালে তেমন যানজট ছিল না। তবে এরপর থেকে ওই ফেরিঘাটে লম্বাজানজট সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। ঈদে ঘরমুখো মানুষের চাপে ব্যস্ত পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকা। ঘাটে যাত্রীবাহী বাস স্বাভাবিক থাকলেও অতিরিক্ত চাপ রয়েছে ব্যক্তিগত ছোট গাড়ির। নৌরুট পারাপারে অতিরিক্ত ফেরি থাকলেও যানবাহনের বাড়তি চাপে কিছুটা ভোগান্তিতে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরা। শনিবার পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায় নৌরুট পারের অপেক্ষায় শতাধিক বাস ও দুই শতাধিক ব্যক্তিগত ছোট গাড়ি অপেক্ষামাণ রয়েছে বলে জানান ঘাট সংশ্লিষ্টরা। পাটুরিয়া ফেরিঘাট শাখা বাণিজ্য বিভাগের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার জিল্লুর রহমান জানান, ভোর থেকেই দক্ষিঞ্চালমুখী ব্যক্তিগত ছোট গাড়ির প্রচ- চাপ রয়েছে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের উথুলি বাসস্ট্যান্ড থেকে বিকল্প পথে পাটুরিয়া ফেরিঘাটের ৫ নম্বর পন্টুন দিয়ে ছোট গাড়ি পারাপারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর প্রধান সড়ক দিয়ে আগের মতো স্বাভাবিক নিয়মে পারাপার হচ্ছে যাত্রীবাহী বাস। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ছোট বড় মিলে ২০টি ফেরি চলাচল করছে। ঈদ যাত্রায় যাত্রীদের চাপ নেই দক্ষিণবঙ্গের ২১টি জেলার প্রবেশদ্বার মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে। এ নৌরুটে বর্তমানে ৬টি ডাম্প ফেরি যোগ হয়ে ১৬টি ফেরি চলাচল করছে। শনিবার বিকেল ঘাট এলাকায় ১০০ গাড়ি পারের অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে। এর মধ্যে ট্রাক, যাত্রীবাহী ছোট গাড়ির সংখ্যাই বেশি। চ্যানেলে ফেরিগুলো সতর্কতা অবলম্বন করে ওয়ানওয়ের মাধ্যমে চলাচল করছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাট সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় এ ঘাট দিয়ে ৬৯টি বাস, ২৪৮টি ট্রাক, এক হাজার ৯৫০টি ছোট গাড়ি পারাপার হয়েছে। বিআইডব্লিউটিসি’র শিমুলিয়া ঘাটের উপ-মহাব্যবস্থাপক শাহ মোঃ খালেদ নেওয়াজ বলেন, কে-টাইপ ছয়টি, মাঝারি তিনটি এবং ডাম্প ফেরি পাঁচটি ফেরি চলাচল করছে। তবে ডাম্প ফেরিগুলো সতর্কতা অবলম্বন করে নৌরুটে চলাচল করছে। রাতে ডাম্প ফেরিগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেয়া হবে। রো রো ছাড়া অন্য সব ফেরি চলাচল শুরু করেছে। ঘাটে আটকে থাকা পরিবহনগুলো রাতের মধ্যেই পার করা সম্পন্ন হয়ে যাবে বলেও জানান তিনি। এদিকে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম-হাটিকুমরুল গোলচত্বর রুটসহ সিরাজগঞ্জের চারটি মহাসড়কে শনিবার যানবাহনের চাপ বেড়েছে। এতে ঢাকা-উত্তরাঞ্চলগামী লেনে যানবাহন চলাচলে ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে। এদিকে, রোজার ঈদের মতো এবারও মহাসড়ক দীর্ঘ যানজট ও দুর্ভোগমুক্ত থাকবে বলে আশা করছে পুলিশ। এরই মধ্যে মানুষের ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে সড়ক-মহাসড়কে। শনিবার বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কে কিছুটা যানজট দেখা দিলেও পুলিশের চেষ্টায় অল্প সময়ের মধ্যেই তা নিরসন হয়। বেলা ১২টার পর থেকে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। হাটিকুমরুল গোলচত্বর থেকে পাবনা, রাজশাহী ও বগুড়া রুটে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ওসি আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, গোলচত্বর কেন্দ্রিক চারটি মহাসড়কে এখনও পর্যন্ত যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। কোথাও কোন দুর্ঘটনা ঘটলে ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে সেটা দেখে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
×