ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

চুক্তি স্বাক্ষরের আট মাসেও শুরু হয়নি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

প্রকাশিত: ০৬:৫৪, ৩০ জুলাই ২০১৮

  চুক্তি স্বাক্ষরের আট মাসেও শুরু হয়নি  রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ সরকারী উদ্যোগে গণনা মতে, প্রায় সোয়া ১১ লাখ রোহিঙ্গা উখিয়া টেকনাফ আশ্রয় শিবিরগুলোতে বাস করছে। এদের মধ্য থেকে মাত্র আড়াই হাজার রোহিঙ্গাকে স্বদেশে ফেরার জন্য মিয়ানমারের অনুমতি এসেছে। গত ১১ মাসের বেশি সময়ের মধ্যে একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয়নি মিয়ানমার। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের পর গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশের অভিবাসন ও পাসপোর্ট অধিদফতর (ডিপিআই) রোহিঙ্গা গণনা শুরু করে। দীর্ঘ সময় গণনার পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে কক্সবাজারে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ১৮ হাজার ৫৭৮ জন। গত বছরের ২৬ আগস্টের পর থেকে মিয়ানমারের নাগরিক লাখ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে আশ্রয় নেয় বাংলাদেশে। তাদের বয়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধন করা হয়। আরও অন্তত এক লাখ রোহিঙ্গা (পুরনো) স্বেচ্ছায় বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধনের আওতায় আসেনি বলে জানা গেছে। তারা জেলার বিভিন্ন স্থানে বাড়ি তৈরি ও ভাড়া বাসায় বসবাস করছে। অনেকে আবার রেশনের লোভে আশ্রয় ক্যাম্পেও যাওয়াআসা করছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বাংলাদেশ এখন জাতিসংঘের সহায়তায় রোহিঙ্গা পরিবারগুলোর নিবন্ধনের কাজ করছে। সরকার ও জাতিসংঘ আগামী নবেম্বরের মধ্যে যৌথ নিবন্ধনের কাজটি শেষ করতে চায়। রোহিঙ্গারাও যাতে শীঘ্রই স্বদেশে ফেরত যেতে পারে, এ পরিকল্পনায় এগুচ্ছে সরকার। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য বাংলাদেশ গত ফেব্রুয়ারিতে ৮ হাজার ৩২ রোহিঙ্গার একটি তালিকা দিয়েছিল মিয়ানমারকে। এদের মধ্য থেকে ২ হাজার ৫শ’ জনকে ফেরার অনুমতি দিয়েছে মিয়ানমার। বাংলাদেশ শীঘ্রই নেপিদোকে আরও ১৫ হাজার রোহিঙ্গার একটি তালিকা পাঠাবে বলে জানা গেছে। আন্তর্জাতিক চাপে মিয়ানমার গত বছরের ২৩ নবেম্বর রোহিঙ্গা ফেরত নেয়ার বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। চুক্তির শর্ত মতে যৌথ চুক্তি স্বাক্ষরের পরবর্তী দুই মাসের মধ্যে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে। কিন্তু দুই মাসের স্থলে আট মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও মিয়ানমারের তরফ থেকে কবে নাগাদ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে, তার কোন সদোত্তর পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানা গেছে। রোহিঙ্গা নেতারা জানান, রাখাইন রাজ্যে যতদিন রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের নিশ্চিয়তা না পাওয়া যাবে, ততদিন রোহিঙ্গারা সেখানে ফিরে যাবে না। এখনও উত্তর রাখাইনে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা প্রতিনিয়ত বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। সরকারী হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না। এমনকি পল্লী ক্লিনিকগুলোতেও রোহিঙ্গাদের ভর্তি করানো হচ্ছে না। রোহিঙ্গারা জানিয়েছে, উত্তর রাখাইনে এখন শতকরা ৯০ ভাগ বৌদ্ধ। ৬ ভাগ রোহিঙ্গা এবং ৪ ভাগ অন্য ধর্মাবলম্বী লোকের বসবাস। এত কম সংখ্যক হওয়া সত্ত্বেও রোহিঙ্গাদের প্রতি বৈষম্য করছে রাখাইন সম্প্রদায়ের চিকিৎসক ও নার্সরা।
×