ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদাকে আটকে রাখতে উচ্চ আদালতও সহায়তা করছে ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২৫ জুলাই ২০১৮

খালেদাকে আটকে রাখতে উচ্চ আদালতও সহায়তা করছে ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটক রাখার জন্য উচ্চ আদালতও সহযোগিতা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এমন নজির নেই যে, নিম্ন আদালতের জামিন উচ্চ আদালত আটকে দেয়। আমরা বিচার ব্যবস্থার ওপর কীভাবে আস্থা রাখব? মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন। অপর এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, দুই মাসের মধ্যে দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে। রাজশাহীতে বিএনপির নির্বাচনী প্রচারকালে ককটেল হামলা বিষয়ে দলের দুই নেতার কথোপকথনের অডিও ফাঁস নিয়ে সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আমরা নাকি জনগণের কাছে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে ব্লেম গেম করছি। বলার উদ্দেশ্যটা হচ্ছে, একটা অডিও বেরিয়েছে আমাদের দুই নেতার মধ্যে কথোপকথনের, যার ওপর ভিত্তি করে আমাদের রাজশাহী জেলার সেক্রেটারিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ কালকার প্রযুক্তির যুগটায় মানুষ এত ভাল বোঝে যে আমার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আলাপনও তৈরি করে দেয়া যায়। এটা কোন কঠিন কাজ নয়। সবাই দেখতে পারেন কার কত রকম ছবি বের হয়, এর ঘাড়ে ওর মাথা। দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলা প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, আমাদের বারবার মনে রাখতে হবে সম্পূর্ণ বৈরী পরিবেশে রাজনৈতিক কর্মকা- চলছে। এই কথাটা ভুলে গেলে চলবে না যে, আমরা ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে বাস করছি। ফ্যাসিস্ট কথাটায় জোর দিচ্ছি কারণ, মাহমুদুর রহমান তার পত্রিকায় সর্বপ্রথম লিখেছিলেন ফ্যাসিবাদের প্রতিধ্বনি শোনা যায়। আজ ফ্যাসিবাদ বুকে পাড়া দিয়ে বসে গেছে। মাহমুদুর রহমানকে আমি অনেক পছন্দ করি। তার মতের সঙ্গে আমার অনেক মিল আছে। সেই মাহমুদুর রহমানের কী হাল করেছে দেশের মানুষ দেখেছে। ফখরুল বলেন, কুষ্টিয়ার মতো বাংলাদেশে এখন আর কোন জনপদ নেই। কুষ্টিয়া এখন সম্পূর্ণভাবে কিছু সন্ত্রাসীর নিয়ন্ত্রণে, পুলিশও সেখানে সন্ত্রাসী হয়ে গেছে। অথচ এই কুষ্টিয়াতে এক সময় আওয়ামী লীগের লোকেরা পালিয়ে বেড়াত। ভুলে গেলে চলবে না। অতীতকে মনে না করলে নিজেকে চিনবেন না। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রকে হত্যা করে জাস্টিফাই করার জন্য যত রকমের কাজ আছে আপনারা তা করছেন। আমরা দলের একটি মিটিং করছি, এর মধ্যে কী আমার দলের কেউ বোমা মারবে? আপনাদের মনে আছে, নয়াপল্টনের সামনে আমরা বিরাট মিটিং করছিলাম। সেদিন ১৫৪ জন গ্রেফতার হলো। আমি যখন ওই মিটিংয়ে ট্রাকের ওপর উঠলাম তখন নাইটিঙ্গেল মোড়ে দুইটা পটকা ফুটল। মাহমুদুর রহমানকে যেই লোক পিটিয়েছে এই লোক সেদিন এখানে ছিল। আমরা যেকোন সময় সমাবেশ করার আগে ভয় পাই। কারণ, ওরাই পটকা মারবে, আর ওরাই আমাদের দোষ দেবে। এই সরকার এই খেলাগুলো ভাল জানে। মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপিকে এত ভয় কেন? জনগণকে বোকা বানিয়ে আপনারা মনে করছেন পার পেয়ে যাবেন? জনগণ এত বোকা নয়। সব বোঝে মানুষ। তাদের মনে ধিকিধিকি আগুন জ্বলছে। তাই সেদিন আর বেশি দূরে নয় যেদিন দেশের মানুষ রাজপথে নামবে। দুই মাসের মধ্যে দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে- মওদুদ ॥ দুই মাসের মধ্যে দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার প্রতিবাদে ‘সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ’ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে মওদুদ বলেন, আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার পর দায়ীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারার ব্যর্থতার জন্য তাদের পদত্যাগ করা উচিত বলে আমরা মনে করি। তিনি বলেন, মাহমুদুর রহমানের ওপর যে আক্রমণ হয়েছে, তাতে সারাজাতি স্তম্ভিত, ক্ষুব্ধ। এটা জাতির জন্য কলঙ্কজনক অধ্যায়। তাকে যে রাজনৈতিক কারণে হত্যার উদ্দেশ্যে আদালতে আক্রমণ করা হয়েছে তার প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।
×