ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

ইসির ব্যাপক প্রস্তুতি ॥ ৬ কেন্দ্রে ইভিএম, তিনটিতে সিসি ক্যামেরার প্রস্তাব

প্রকাশিত: ০৬:১০, ১০ জুন ২০১৮

ইসির ব্যাপক প্রস্তুতি ॥ ৬ কেন্দ্রে ইভিএম, তিনটিতে সিসি ক্যামেরার প্রস্তাব

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ও নিজস্ব সংবাদদাতা, টঙ্গী ॥ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের এবারের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৬ জুন। এ নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে ইতোমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনী এলাকার কেন্দ্রগুলোতে ভোটগ্রহণের দায়িত্ব পালনের জন্য প্রিসাইডিং অফিসারসহ প্রায় নয় হাজার কর্মকর্তার প্রশিক্ষণ শুরু হচ্ছে আগামী ২১ জুন। এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অর্ধসহস্রাধিক কর্মকর্তাদেরও প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও দেশে প্রথমবারের মতো নির্বাচনী এজেন্টদের প্রশিক্ষণ ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। এদিকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের এবারের নির্বাচনে ৬টি ভোট কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এবং ৩টি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা ব্যবহারের জন্য নির্বাচন কমিশনে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয় গত ৩১ মার্চ। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১৫ মে এ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সীমানা নির্ধারণ নিয়ে জটিলতাকে কেন্দ্র করে হাইকোর্ট গত ৬ মে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করে আদেশ দেয়। এতে স্থগিত হয়ে যায় নির্বাচনী সকল প্রকার কার্যক্রম। পরে হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগে আপীল করেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই মেয়র প্রার্থী এবং নির্বাচন কমিশন। শুনানি শেষে ওই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নির্বাচন অনুষ্ঠান করার আদেশ দেয় উচ্চ আদালত। উচ্চ আদালতের আদেশের প্রেক্ষিতে আগামী ২৬ জুন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করে দ্বিতীয় দফায় ঘোষণা দেয় নির্বাচন কমিশন। নতুন ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী প্রার্থীরা আগামী ১৮ জুন হতে এ নির্বাচনে আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করার কথা। রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন ম-ল জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কেন্দ্রগুলোতে ভোটগ্রহণের দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত থাকবেন প্রায় নয় হাজার প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তা। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মোতাবেক ওই প্রায় নয় হাজার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাকে আগামী ২১ ও ২২ জুন প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) হাইস্কুল, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) হাইস্কুল, ব্রি প্রগতি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জয়দেবপুর সরকারী গার্লস হাইস্কুল ও রানী বিলাসমনি সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে ওইসব কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এছাড়াও ভোটকেন্দ্রসহ নির্বাচনী এলাকায় দায়িত্ব পালনের জন্য নিযুক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৫০৩ কর্মকর্তাকে আগামী ২৪ জুন বঙ্গতাজ অডিটোরিয়ামের হলরুমে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ব্রিফিং দেয়া হবে। নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও গাজীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ তারিফুজ্জামান জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণের দায়িত্ব পালনের জন্য প্রায় ৯ হাজার প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। ইতোমধ্যে তাদের চিঠি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ৪২৫টি ভোটকেন্দ্রের জন্য ৪২৫ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, ২৭৬১টি ভোটকক্ষের জন্য একজন করে সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও প্রতিটি ভোটকক্ষে দুইজন করে পোলিং কর্মকর্তাকে এই প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। সেই সঙ্গে সবক্ষেত্রে পাঁচ শতাংশ রিজার্ভ কর্মকর্তাকেও প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। তিনি আরও জানান, দেশে প্রথমবারের মতো গাজীপুর সিটি নির্বাচনে প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্টদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রতি মেয়র প্রার্থীদের চারজন, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের প্রতি কাউন্সিলর প্রার্থীদের দুজন এবং প্রতি সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলরের একজন এজেন্টসহ প্রায় ৪৫১ জন মাস্টার ট্রেইনারকে এ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। প্রশিক্ষণ গ্রহণ শেষে তারা নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে অন্য এজেন্টদের প্রশিক্ষণ দেবেন। গত ৫ মে জেলা শহরের জকি স্মৃতি হাইস্কুলে মাস্টার ট্রেইনারদের ওই প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। প্রার্থীদের অনেক এজেন্ট কেন্দ্রে তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নয়। তাই তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ও সচেতন করতেই প্রতি প্রার্থীর মাস্টার ট্রেইনার তৈরি করে দেয়া হয়। ছয় কেন্দ্রে ইভিএম ও তিন কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরার প্রস্তাব ॥ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের এবারের নির্বাচনে ৬টি ভোট কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এবং ৩টি ভোট কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা ব্যবহারের জন্য নির্বাচন কমিশনে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও গাজীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ তারিফুজ্জামান জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে এলাকার পরিবেশ, কেন্দ্রগুলোর অবকাঠামো ও যাতায়ত ব্যবস্থা এবং এলাকাবাসীর শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ নানা বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ৬টি ভোট কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করে ভোট গ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশনে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
×