ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

স্মৃতিতর্পণ গান ও কবিতায় অধ্যাপক নূর উল ইসলাম স্মরণ

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ২৪ মে ২০১৮

স্মৃতিতর্পণ গান ও কবিতায় অধ্যাপক নূর উল ইসলাম স্মরণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির অন্যতম প্রবাদ পুরুষ জাতীয় অধ্যাপক ড. মুস্তাফা নূরউল ইসলাম ইন্তেকাল করেন এ মাসের ৯ তাািরখ। স্মৃতিতর্পণ, আবৃত্তি আর গানের মধ্যদিয়ে সময়ের মুখ এ জ্ঞানতাপসের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় বুধবার বিকেলে। জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদ আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইমিরেটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। অনুষ্ঠানের শুরুতে তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর খ্যাতিমান এই ব্যক্তিত্বের সংক্ষিপ্ত জীবনী পাঠ করেন নিলু নামসুর নাহার। পরে তাঁর রচনা থেকে পাঠ করেন বেলায়েত হোসেন। সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, আমাদের দেশে যারা অসাম্প্রদায়িকতা ও বাঙালীত্ব বোধ নিয়ে চর্চা ও প্রচারের চেষ্টা করেছেন তাদের মধ্যে মুস্তাফা নূরউল ইসলাম অন্যতম। তিনি নানা মাত্রিকতার কাজ করে গেছেন। আমরা তার কাজকে সব সময় স্মরণে রাখব এবং ভবিষ্যত প্রজন্ম তার এই নানাবিধ কাজে প্রভাবিত হয়ে দেশকে সুন্দর করতে পারে সে বিষয়ে সচেষ্ট হব। কালজয়ী এ লেখকের সহোদরা শামীম মোমতাজ তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের ৭ ভাই ও ৪ বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়, আর আমি সবার ছোট। তিনি তার কথামালা দিয়ে বাংলার মানুষদের জ্ঞানের সাগরে ভাসিয়ে গেছেন। আমাদের পারিবারিক মিলনমেলায় তিনি ছিলেন প্রধান বক্তা। অসাধারণ এক ক্ষমতা ছিল যা দ্বারা মানুষকে আকৃষ্ট করতে পারতেন। তিনি সংযমী ও নির্লোভ ছিলেন। এরপর রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী শামা রহমান। তিনি পর পর পরিবেশন করেন ‘মাঝে মাঝে তব দেখা পাই’ ও ‘সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে’। মঞ্চে আসেন ভারতের নজরুলসঙ্গীত শিল্পী সোমঋতা মল্লিক। তার পরিবেশনায় ছিল নজরুলের গান ‘আমি চিরতরে দূরে চলে যাব’ ও ‘মৃত্যু নাই নাই দুঃখ’। স্মৃতিতর্পণে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, অধ্যাপক ড. মুস্তাফা নূরউল ইসলামের বহুমাতৃকতার কারণে তাকে কালের সাক্ষী হিসেবে জানি। ভারতবর্ষ ভাগের আন্দোলন থেকে শুরু করে ভাষা আন্দোলন এবং সর্বোপরি মুক্তিযুদ্ধ সবকিছুর সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন। বাঙালী জাতির গৌরব তিনি। সন্তান মুস্তাফা ইমরুল কায়েস বাবার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, আমি ভাগ্যবান এমন একজন বাবার সন্তান হতে পেরে। বাবা খুবই সাদা-মাটা মনের মানুষ ছিলেন। আবেগপ্রবণ হলেও কখনও মাত্রা ছাড়িয়ে যেতেন না। কবি ড. আবুল আজাদ বলেন, আমি স্যারের কাছে শিখেছি-আগে না বলতে পরে হ্যাঁ বলতে। কবি শেখ রবিউল হক বলেন, যারা বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করেছেন তিনি তাদের একজন। পরে তিনি একটি কবিতা পাঠ করে শোনান। শিল্পী বুলবুল মহলা নবীশ বলেন, তিনি ছিলেন অত্যন্ত অমায়িক, রসিক ও সুভাষী মানুষ। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক সামসুজ্জামান খান বলেন, তার চলা ও কথা বলার ভঙ্গিমা এত চমৎকার ছিল যা সহজেই মানুষকে আকৃষ্ট করত। কবি মুহম্মদ সামাদ স্বরচিত ‘আমার দুচোখ জলে ভরে যায়’ কবিতা আবৃত্তি করেন। কবি আজিজুর রহমান আজিজ বলেন, ভাবতে পারছি না, স্যার নেই। তিনি তন্ময় হয়ে রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনতেন। এরপর তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে স্বরচিত কবিতা ‘এক টুকরো স্মৃতি তর্পণ ও মুস্তাফা নূরউল ইসলাম স্মরণ’ আবৃত্তি করেন। শিল্পী অপর্ণা খানের পরিবেশিত রবীন্দ্রসঙ্গীতের মধ্যদিয়ে শেষ হয় অনুষ্ঠান।
×