ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

কেরানীগঞ্জে ব্যস্ত ডকইয়ার্ড

ঈদযাত্রী টানতে তৈরি হচ্ছে লক্কড়-ঝক্কড় লঞ্চ

প্রকাশিত: ০৪:২৭, ১৯ মে ২০১৮

ঈদযাত্রী টানতে তৈরি হচ্ছে লক্কড়-ঝক্কড়  লঞ্চ

নিজস্ব সংবাদদাতা, কেরানীগঞ্জ, ১৮ মে ॥ ঈদ সামনে রেখে ডকইয়ার্ডগুলোয় চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। নদীতে ভাসমান অবস্থায় লঞ্চের ভেঙ্গে যাওয়া বিভিন্ন অংশ ওয়েল্ডিং মেশিন দিয়ে জোড়া দেয়া হচ্ছে। মেঝে কিংবা কার্নিশে লাগানো হচ্ছে লোহার পাত। পরিবর্তন করা হচ্ছে লঞ্চের ডিজাইন। কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা ইউনিয়নের চর খেজুরবাগ ও তেল ঘাট এলাকায় ডকইয়ার্ডগুলোতে লক্কড়-ঝক্কড় লঞ্চ মেরামতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছে কর্মচারীরা। এখানে বেশ কয়েকটি ভাঙ্গা লঞ্চের নিচের অংশও মেরামত করতে দেখা গেছে। জানা গেছে অন্তত তিন মাস ধরে এসব লঞ্চ মেরামতের কাজ চলছে। যাত্রী নিরাপত্তার স্বার্থে নৌযানের নিচের অংশ সংস্কারে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। সব মিলিয়ে এলাকা জুড়েই গড়ে উঠেছে লঞ্চ মেরামতের কারখানা। দিনরাত চব্বিশ ঘণ্টাই মেরামতের শব্দে কান ঝালাপালা। শুক্রবার কেরাণীগঞ্জের ডাকইয়ার্ডগুলো ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। ডকইয়ার্ডে মেরামতরত এম ভি ধুলিয়া নামক লঞ্চটি ঢাকা থেকে কালাইয়া আসা যাওয়া করে। ওই লঞ্চের ম্যানেজারের নাম মোঃ রমজান আলী তিনি এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আমার এই লঞ্চটি প্রতিদিন ঢাকা থেকে কালাইয়া যাতায়াত করে। আসা যাওয়ার ফাকে এই লঞ্চে ঝালাই ও রংয়ের কাজ করাচ্ছি। যাতে ঈদ যাত্রীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারি। অপর একটি লঞ্চ এমভি জাহিদ-৭ এই ঢাকা থেকে বোরহান উদ্দিন পর্যন্ত চলাচল করে। এ লঞ্চটিও মাঝ নদীতে নোঙ্গর করে এর ভাঙ্গা অংশগুলো ঝালাই করে মেরামত করতে দেখা গেছে। এমভি সোহান লঞ্চটি ঢাকা-ভোলা রুটে চলাচল করে। এই লঞ্চটি দেখা গেছে ডকইয়ার্ডে এনে ভাসমান অবস্থায় বড় হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে লঞ্চের বডির স্টিলের মরিচা ছাড়ানো হচ্ছে। এরপর এটিকে সিরিজ কাগজ দিয়ে ঘসে রং করা শেষে এটিকে প্রস্তুত করা হবে ঈদ যাত্রীদের আনা-নেয়ার জন্য। মাসের পর মাস বন্ধ থাকা লঞ্চগুলোও মেরামতের দৌড়ে পিছিয়ে নেই। ঈদে এসব লঞ্চ যাত্রী নিয়ে ছুটবে বিভিন্ন গন্তব্যে। সব মিলিয়ে এবারের ঈদে ঝুঁকি নিয়ে নৌপথে ছুটতে হবে যাত্রীদের। বিআইডব্লিউটিএ-এর সাতটি পোর্ট থেকেই প্রতিবছর ঝুঁকিপূর্ণ লঞ্চ দিয়ে যাত্রী পরিবহনের অভিযোগ করেন পরিবহন বিশেষজ্ঞ ও যাত্রী অধিকার নিয়ে আন্দোলনে যুক্ত নেতৃবৃন্দ। তবে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ বলছে, ফিটনেসবিহীন কোন লঞ্চ ঘাট থেকে ছাড়া হবে না। তাছাড়া চালকদের লাইসেন্স আছে কী না তাও নিশ্চিত করা হবে। যাত্রী নিরাপত্তায় লাইফ জ্যাকেটসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি রাখার কথাও বলছেন তারা। নিয়মিত সংস্কারের অংশ হিসেবে বেশ কিছু লঞ্চ বিভিন্ন ডকইয়ার্ডে মেরামতের দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তিদের। এ বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)-এর যুগ্মপরিচালক এ কে এম আরিফ উদ্দিন বলেন, ঈদ উপলক্ষে কোন ঘাটেই আনফিট লঞ্চ ভিড়তে দেয়া হবে না। যে কোন মূল্যে যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। এবার লক্কড়-ঝক্কড় কোন লঞ্চ যাত্রী পরিবহন করতে পারবে না বলেও জানান তিনি।
×