ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিএসএমএমইউতে ২১তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আজ

প্রকাশিত: ০৫:০১, ৩০ এপ্রিল ২০১৮

বিএসএমএমইউতে  ২১তম বিশ্ববিদ্যালয়  দিবস আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন মেডিক্যাল উচ্চ শিক্ষা, গবেষণা ও মেডিক্যাল চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়। এই প্রতিষ্ঠানে চালু হতে যাচ্ছে জরুরী বিভাগ ও বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন কার্যক্রম। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে সেন্টার অব এক্সিলেন্স-এর তৃতীয় পর্যায়ের কাজ । মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা এবং একটি ওয়ান পয়েন্ট চেক আপ সেন্টার চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বিশেষ উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণায় সাফল্যের কারণে বিশ্বসেরার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। স্পেনের সিমাগো রিসার্চ গ্রুপ ও যুক্তরাষ্ট্রের স্কপাস পরিচালিত জরিপে দেশে ৫ম এবং বিশ্বে ৬৪০তম অবস্থানে স্থান পায় দেশের একমাত্র এই মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে প্রতিদিন সকালের বহির্বিভাগে ও বৈকালিক স্পেশাল আউটডোরে ৫ হাজার রোগী সেবা নিচ্ছেন। গড়ে প্রতি বছর সেবা নিচ্ছে প্রায় ১২ লাখ রোগী। শুরু হতে যাচ্ছে এক হাজার বেডের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের নির্মাণ কাজ। এমন অবস্থার মধ্য দিয়ে আজ সোমবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত হচ্ছে। দিবসটি উপলক্ষে আজ সোমবার দিনব্যাপী নানা কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। আর বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, স্বল্প খরচে উন্নতমানের চিকিৎসাসেবা পাওয়া যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ)। প্রায় দু’ হাজার শয্যাবিশিষ্ট এ বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৫ হাজারের বেশি রোগী সেবা গ্রহণ করেন। বেসরকারী হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর তুলনায় চার থেকে পাঁচগুণ কম ডায়াগনোসিস ফি নেয়া হয়। রোগী ভর্তি, বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফিসহ সকল আর্থিক বিষয় লেনদেন হয়ে থাকে ব্যাংকের মাধ্যমে। তাই এক্ষেত্রে রোগীদের হয়রানির শিকার হতে হয় না। শৃঙ্খলাপূর্ণ পরিবেশে সব কাজ সম্পন্ন হয়ে থাকে। আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন মেডিক্যাল উচ্চ শিক্ষা, গবেষণা ও মেডিক্যাল চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। ইতোমধ্যে উদ্বোধন করা হয়েছে এক হাজার শয্যাবিশিষ্ট সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের কনসালটেন্সি কার্যক্রম। উপাচার্য আরও জানান, দেশের একমাত্র মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়’ আজ রোগীদের আশা-ভরসার কেন্দ্রস্থল। জাতির জনকের নামে প্রতিষ্ঠিত এ বিশ্ববিদ্যালয়টি আজ উচ্চতর চিকিৎসা শিক্ষা, গবেষণা ও চিকিৎসা সেবায় শ্রেষ্ঠতম নাম। এই বিশ্ববিদ্যালয় আগের তুলনায় এখন অনেক বেশি প্রাণবন্ত। বিকেলে, সন্ধ্যায় এমন কি রাতেও সিনিয়র অধ্যাপকবৃন্দ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ নিয়মিত রাউন্ড দিচ্ছেন। সন্ধ্যায় অনেক শিক্ষক ক্লাস নিচ্ছেন। চিকিৎসকবৃন্দ তার কর্তব্যরত ওয়ার্ডে, বহির্বিভাগে যথাসময়ে উপস্থিত থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। নার্সরা নিজ হাতে রোগীদের ওষুধ খাওয়াচ্ছেন। এই বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সকল মানুষের বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশের মানুষের আকাক্সক্ষা পূরণে চিকিৎসাসেবা, চিকিৎসা শিক্ষা ও গবেষণায় অবশ্যই আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা হবে বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন উপাচার্য। রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ চিকিৎসা গবেষণার ক্ষেত্র আরও সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে তার বাণীতে চিকিৎসাক্ষেত্রে নতুন নতুন গবেষণা ও উদ্ভাবনের সঙ্গে পরিচিত হতে এবং তা আমাদের জনগণের স্বাস্থ্যসেবায় প্রয়োগ ঘটাতে দেশে চিকিৎসা গবেষণার ক্ষেত্র আরও সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন। আমি আশা করি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় এক্ষেত্রে আরও উদ্যোগী ও কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক, চিকিৎসক, নার্স, সহায়ক স্টাফসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় যুগোপযোগী চিকিৎসা এবং শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর পরই দেশের স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন। স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ব্যাপক কর্মসূচী বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার। আমরা একটি গণমুখী স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করেছি এবং এ নীতির বাস্তবায়ন করছি। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় আজ দেশের চিকিৎসা জগতে সেন্টার অব এক্সিলেন্সে পরিণত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক, চিকিৎসক, নার্স, সহায়ক স্টাফসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
×