ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতের আগেই পাকিস্তানের হয়ে খেলেছিলেন শচীন!

প্রকাশিত: ০৭:০১, ২৫ এপ্রিল ২০১৮

ভারতের আগেই পাকিস্তানের হয়ে খেলেছিলেন শচীন!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শচীন টেন্ডুলকর। জীবন্ত কিংবদন্তি। ভারতীয়দের ক্রিকেটঈশ্বর। দীর্ঘ দুইযুগের ক্যারিয়ারে ব্যাট হাতে রানের ফল্গুধারা বইয়ে দিয়েছেন। হাঁকিয়েছেন সেঞ্চুরির পর সেঞ্চুরি। গড়েছেন রেকর্ডের পর রেকর্ড। ১৯৮৯ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক। এটা অনেকেরই জানা। কিন্তু ভারতীয় এই ক্রিকেট লিজেন্ডের অভিষেক আরও দুই বছর আগেই হয়েছিল। আর সেটা ভারত নয়, ‘চিরশত্রু’ পাকিস্তানের হয়ে। নিজের আত্মজীবনী ‘প্লেয়িং ইট মাই ওয়ে’তে এ তথ্য জানিয়েছেন শচীন নিজেই। লিখেছেন, ‘আমি জানি না, ইমরান খানের মনে আছে কি না, এক সময় আমি তার দলের হয়ে ফিল্ডিং করেছিলাম।’ ঘটনা ১৯৮৭ সালের। তিন মাস পর ১৪ বছরে পা দেবেন শচীন। সে সময় ইমরান খানের নেতৃত্বে ৫ টেস্টের সিরিজ খেলতে ভারতে গিয়েছিল পাকিস্তান। সেটি ছিল আরেক ভারতীয় গ্রেট সুনীল গাভাস্কারের সর্বশেষ টেস্ট সিরিজ। সিরিজের আগে ক্রিকেট ক্লাব অব ইন্ডিয়ার (সিসিআই) গোল্ডেন জুবিলি উপলক্ষে একটি প্রদর্শনী ম্যাচ আয়োজন করা হয়। আর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের হয়ে ওই ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিলেন শচীন। ওই ম্যাচের বর্ণনা দিতে গিয়ে সিসিআই অধিনায়ক হেমন্ত কেনক্রে বলেন, ‘বদলি খেলোয়াড় হিসেবে খসর (ভাসানিয়া) ছিল প্রথম পছন্দ। খসর শচীনের চেয়ে বড় ছিল এবং সে অনুর্ধ-১৯ দলের প্রতিভাবান খেলোয়াড় ছিল। খসর ফিল্ডিং করেছিল অফ সাইডে। আর শচীন লেগ সাইডে, ডিপ মিড-উইকেটে। এ সময় একটি ক্যাচ মিস করে শচীন এবং ক্যাচ মিস করে সে খুবই হতাশ হয়ে পড়ে।’ মুম্বাইয়ের ব্র্যাবোর্ন স্টেডিয়ামে ৪০ ওভারে ওই ম্যাচে সিসিআই একাদশের বিপক্ষে মাঠে নামে সফরকারী পাকিস্তান। সিসিআই’র অধিনায়ক ছিলেন হেমন্ত। পাকিস্তান তখন ফিল্ডিংয়ে। এ সময় জাভেদ মিয়াঁদাদ ও ইকবাল কাদের বিশ্রামের জন্য মাঠ ছাড়েন। তখন পাকিস্তানের অধিনায়ক ইমরান খান হেমন্তকে কয়েকজন বদলি ফিল্ডার দেয়ার অনুরোধ করেন। এ কথা শুনে শচীন অধিনায়ক হেমন্তের কাছে মাঠে নামার আগ্রহ প্রকাশ করেন। কিন্তু হেমন্ত অনুমতি দেয়ার আগে শচীন পাকিস্তানের হয়ে ফিল্ডিং করতে মাঠে নেমে পড়েন। সেদিন ২৫ মিনিটের মতো পাকিস্তানের হয়ে নিজ দেশের বিপক্ষে ফিল্ডিং করেছিলেন শচীন। ২০১৩ সালে শচীন যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরে যান তখন ক্রিকেটের প্রায় সমস্ত ব্যাটিং রেকর্ডের মালিক তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান, ক্রিকেটের ইতিহাসের প্রথম ও এখন পর্যন্ত একমাত্র এক শ’ সেঞ্চুরির রেকর্ডসহ অসংখ্য রেকর্ডের মালিকানা নিয়ে ক্যারিয়ারের সমাপ্তি টানেন তিনি। ২৪ এপ্রিল মঙ্গলবার ভারতের সেই ‘ক্রিকেট ঈশ্বর’ ৪৫ বছর পূর্ণ করেছেন। শুধু রেকর্ড আর অর্জনই নয় একজন ‘পারফেক্ট’ ক্রিকেটার হিসেবেও ছিলেন বিতর্কের উর্ধে। ছিলেন ধারাবাহিক এক স্পোর্টসম্যানের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। অসাধারণ ক্রীড়ানৈপুণ্যের জন্য শচীন পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে অর্জুনা পুরস্কার (১৯৯৪), রাজীব গান্ধী খেলরতœ (১৯৯৭-৯৮), পদ্মশ্রী (১৯৯৯), পদ্মভূষণ (২০০৮), ভারত রতœ (২০১৪)। এছাড়া উইজডেন বর্ষসেরা ক্রিকেটার (১৯৯৭), উইজডেন বিশ্বসেরা ক্রিকেটার (২০১০) ও বিসিসিআইর বর্ষসেরা ক্রিকেটার (২০১১) পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
×