ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

নোয়াখালীর তিন রাজাকারের ফাঁসি একজনের ২০ বছরের কারাদন্ড

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ১৪ মার্চ ২০১৮

 নোয়াখালীর তিন রাজাকারের ফাঁসি একজনের ২০ বছরের কারাদন্ড

বিকাশ দত্ত ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে নোয়াখালীর সুধারামের চার রাজাকারের মধ্যে আমির আলীসহ তিনজনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদ- ও একজনকে ২০ বছরের কারাদ- প্রদান করেছে। যাদের মৃত্যুদ- দেয়া হয়েছে তারা হলো- আমির আলী, মোঃ জয়নাল আবদীন ও আবুল কালাম ওরফে এ কে এম মনসুর। মোঃ আব্দুল কুদ্দুসের ২০ বছরের কারাদ- দেয়া হয়েছে। এই চার আসামির মধ্যে এ কে এম মনসুর পলাতক। বাকি তিনজন রায়ের সময় কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিল। চেয়ারম্যান বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মঙ্গলবার এ মামলার রায় ঘোষণা করে। এটি হলো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ৩১তম রায়। এর আগে আরও ৩০টি রায় প্রদান করা হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় চীফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপুসহ অন্য প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন। সংশ্লিষ্ট মামলার প্রসিকিউটর জাহিদ ইমাম বলেন, এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। অন্যদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী জানিয়েছে তারা এ রায়ে বিরুদ্ধে উচ্চ আদালত আপীল করবে। এ মামলায় প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর জাহিদ ইমাম। আসামি পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তরিকুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, গাজী এমএইচ তামিম ও মাসুদ রানা। প্রসিকিউশন ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল গত ৬ ফেব্রুয়ারি মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রেখেছিল। রায়ে বলা হয়, প্রসিকিউশনের আনা তিন অভিযোগের সবই প্রমাণিত হয়েছে। মৃত্যুদ-ের তিন আসামির সাজা ফাঁসিতে ঝুলিয়ে কার্যকর করতে হবে। সেই সঙ্গে পলাতক আসামিদের গ্রেফতার করে সাজা কার্যকর করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের আইজিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে ট্রাইব্যুনালের রায়ে। নিয়ম অনুযায়ী ট্রাইব্যুনালের মামলায় রায়ের এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ আদালতে আপীল করা যায়। তবে পলাতক আসামিকে সে সুযোগ নিতে হলে আত্মসমর্পণ করতে হবে। এ মামলায় প্রাথমিকভাবে পাঁচজনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হলেও মামলার অভিযোগ গঠনের আগে মোঃ ইউসুফ আলী নামে এক আসামি গ্রেফতারের পর অসুস্থ হয়ে মারা যান। পরে তার নাম মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়। শুরুতেই নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করে আদালত। তিন সদস্যের এ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি শাহিনুর ইসলাম প্রারম্ভিক বক্তব্যে জানান, এ মামলায় তারা যে রায় দিচ্ছেন, তা ১৫০ পৃষ্ঠার। পরে ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু আহমেদ জমাদার রায়ের সার সংক্ষেপের প্রথম অংশ পড়া শুরু করেন। বিচারপতি আমির হোসেন পড়েন রায়ের দ্বিতীয় অংশ। সবশেষে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান সাজা ঘোষণা করেন। মামলার তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন প্রসিকিউশনের তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন।
×