ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জার্মানিকে স্বর্ণপদক জেতালেন সাভচেঙ্কো-মাসোট জুটি

প্রকাশিত: ০৪:৪২, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

জার্মানিকে স্বর্ণপদক জেতালেন সাভচেঙ্কো-মাসোট জুটি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ফিগার স্কেটিংয়ের দ্বৈত ইভেন্টে রেকর্ড গড়ে স্বর্ণপদক জয়ের স্বাদ পেয়েছেন জার্মানির এলজোনা সাভচেঙ্কো এবং ব্রুনো মাসোট জুটি। অলিম্পিকের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১৫৯.৩১ স্কোর গড়ে অসামান্য এই কীর্তি গড়েন তারা। শর্ট প্রোগ্রামে ৭৬,৫৯সহ সাভচেঙ্কো-মাসোটের মোট স্কোর দাঁড়ায় ২৩৫.৯০। রৌপ্য জিতেছেন চীনের উইনজিং সুই এবং কান হং। তাদের মোট স্কোর ২৩৫.৪৭। ২৩০.১৫ স্কোর গড়ে ব্রোঞ্জ জিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে কানাডার মেগ্যান দুহামেল এবং এরিক র‌্যাডফোর্ডকে। জার্মানির কিয়েভে জন্মগ্রহণকারী এলজোনা সাভচেঙ্কো ২০১৪ সালে সঙ্গী হিসেবে বেছে নেন ব্রুনো মাসোটকে। ফ্রান্স বংশোদ্ভূত ব্রুনো মাসোট গত নভেম্বরে জার্মানির নাগরিকত্ব লাভ করেন। দক্ষিণ কোরিয়ার পিয়ংচ্যাংয়ে এবার তারা জার্মানির হয়েই প্রতিনিধিত্ব করে বাজিমাত করেন। ১৯৩২ সালের পর এই প্রথম জার্মানিকে ফিগার স্কেটিংয়ের দ্বৈত ইভেন্ট থেকে স্বর্ণপদক উপহার এনে দেন তারা। অসামান্য এই কীর্তি গড়ে দারুণ রোমাঞ্চিত সাভচেঙ্কো-মাসোট জুটি। ব্রুনো মাসোট ২০১৬ সালে এক সাক্ষাতকারে বলেছিলেন, ‘আমি ফরাসী এবং ফ্রান্সের হয়ে স্কেটিং করতেই ভাল লাগে আমার। তবে হ্যাঁ, পরবর্তীতে জার্মানির হয়ে স্কেটিং করি কারণ, আমি মনে করি আমার ক্যারিয়ার সকল কিছুরই উর্ধে।’ সাভচেঙ্কো ব্রুনো মাসোটের সঙ্গে জুটি বেঁধে দারুণ সন্তুষ্ট। তিনি এক সাক্ষাতকারে বলেছিলেন, ‘আপনি কোন্ জাতীয়তাবাদের প্রতিনিধিত্বকারী তা আপনার রক্ত বুঝতে পারে না। তাই জার্মানির হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে পেরেই আমরা দারুণ খুশি। দেশ আমাদের সহযোগিতা করছে এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’ গত শুক্রবার থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার পিয়ংচ্যাংয়ে শুরু হয়েছে শীতকালীন অলিম্পিকের আসর। এবারের আসরে শুরু থেকেই একের পর এক চমক উপহার দিচ্ছেন বিভিন্ন দেশের এ্যাথলেটরা। রিও অলিম্পিকের পর এবার দক্ষিণ কোরিয়ার পিয়ংচ্যাংয়ের উদ্বোধনীতেও পাদপ্রদীপের আলোয় উঠে এসেছেন পিটা তাউফাতোফুয়া। প্রচন্ড শীতের মধ্যেও খালি গায়ে হেঁটে সবাইকে চমকে দেন তিনি। মূলত দেশের প্রতি প্রচন্ড রকমের ভালবাসার জন্যই তার এই উন্মাদনা। টোঙ্গার তাইকুন্ডু খেলোয়াড় বলেন, ‘আমার কখনই শীত লাগে না। আমরা প্রশান্ত মহাসাগরের এপার-ওপার চষে বেড়াই। আমাদের কাছে এটা কোন ব্যাপারই না। এখানকার তুলনায় রিওতে একটু শীত কম ছিল। তবে দেশের জন্য অন্যরকম কিছু করার মানসিকতা সবসময়ই আপনার মাঝে থাকতে হবে।’ এদিকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে অলিম্পিকে ব্রোঞ্জপদক জিতেও আলোচনায় উঠে আসেন মার্ক ম্যাকমরিস। গত বছর ভয়াবহ এক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন তিনি। সেই দুর্ঘটনার রেশ কাটিয়ে উঠে সম্প্রতি অলিম্পিকে জিতে নিয়েছেন ব্রোঞ্জ। শীতকালীন অলিম্পিকে পুরুষের স্নোবোর্ড স্লোপস্টাইলে ব্রোঞ্জ পদক পান তিনি। ২০১৭ সালের মার্চে স্নোবোর্ডিং করতে গিয়ে এক গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে গুরুতর আহত হন তিনি। সেই দুর্ঘটনায় পাঁজর, বাম হাত, পেলভিস এবং চোয়ালের হাড় ভেঙ্গে যায় তার। প্লীহা ফেটে যায় এবং বামদিকের ফুসফুস অকেজো হয়ে যায়। এ দুর্ঘটনার পর বছর ঘুরতে না ঘুরতেই তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং অলিম্পিকে জিতে নেন ব্রোঞ্জ পদক। ব্রোজ জয়ের পর তিনি বলেন, ‘আজ আমি অতীত নিয়ে চিন্তা করছি না।’ এদিকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শীতকালীন অলিম্পিকের পদক জয়ের তালিকায় রাজত্ব করে জার্মানি। ৮ স্বর্ণ ২ রৌপ্য আর ৪ ব্রোঞ্জ জিতে সবার ওপরে অবস্থান করছে তারা। ৫ স্বর্ণ নিয়ে দুইয়ে অবস্থান উত্তর কোরিয়ার। হল্যান্ড-যুক্তরাষ্ট্রেরও সমান পাঁচটি করে স্বর্ণপদক। অবস্থান যথাক্রমে তৃতীয় এবং চতুর্থ। কানাডা, সুইডেন এবং ফ্রান্সের স্বর্ণ সমান তিনটি করে।
×