ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

সাবেক প্রেসিডেন্ট গাইয়ুম ও প্রধান বিচারপতি গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

সাবেক প্রেসিডেন্ট গাইয়ুম ও প্রধান বিচারপতি গ্রেফতার

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ মালদ্বীপে আদালত ও সরকারের দ্বন্দ্বের জেরে জরুরী অবস্থা জারির পর দেশটির প্রধান বিচারপতি আবদুল্লাহ সাঈদ ও সাবেক প্রেসিডেন্ট মামুন আবদুল গাইয়ুমসহ সাতজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অন্যদিকে দ্বীপটিতে চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধান এবং কারাবন্দী নেতাদের মুক্ত করতে ভারতের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহামেদ নাশিদ। টুইটারে এক বিবৃতিতে নাশিদ বলেন, বিচারক, রাজনৈতিক বন্দী, সেই সঙ্গে সাবেক প্রেসিডেন্ট মামুন আব্দুল গাইয়ুমকে মুক্ত করতে আমরা ভারত সরকারকে তাদের সেনাবাহিনী সমর্থিত প্রতিনিধি দলকে মালদ্বীপে পাঠানোর আহ্বান জানাচ্ছি। তাদের মালদ্বীপের মাটিতে আসার অনুরোধ জানাচ্ছি। প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ ইয়ামিন সোমবার রাতে দেশে জরুরী অবস্থা জারির পর মঙ্গলবার ভোরের দিকে পুলিশ সুপ্রীমকোর্ট প্রাঙ্গণে ঢোকে। সেখানে প্রধান বিচারপতি আব্দুল্লাহ সাঈদের সঙ্গে আলী হামীদ নামে আরেকজন বিচারক এবং জুডিসিয়াল সার্ভিস এ্যাডমিনিস্ট্রেটর হাসান সাঈদকে গ্রেফতার করা হয়। তার আগে মধ্য রাতে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট মামুন আবদুল গাইয়ুম এবং তার মেয়ের জামাই মোহাম্মদ নাদিমকে তাদের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিবিসি জানায়, তদন্ত কিংবা তাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আনা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি। জরুরী অবস্থার মধ্যে গ্রেফতার হওয়ায় বিশেষ কোন আইনী সুবিধাও তারা পাবেন না। গত বৃহস্পতিবার মালদ্বীপের সুপ্রীমকোর্ট সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহামেদ নাশিদ এবং বিরোধী দলের ১২ এমপিকে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে বিচার করে কারাদণ্ড দেয়াকে অসাংবিধানিক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে রায় দিয়ে তাদের মুক্তির নির্দেশ দেয়। কারাবন্দী নেতাদের মুক্তির দাবিতে বিরোধী দলের সমর্থকদের বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। আদালতের ওই রায়ের পর নাশিদের দল মালদিভিয়ান ডেমোক্র্যাটিক পার্টি নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট মালদ্বীপের ৮৫ সদস্যের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে যায়। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন সুপ্রীমকোর্টের আদেশ মানতে অস্বীকার করে পার্লামেন্ট অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে দিলে মালদ্বীপে শুরু হয় রাজনৈতিক অস্থিরতা। প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনকে ক্ষমতা থেকে সরানো বা ইমপিচ করার যে কোন উদ্যোগ ঠেকানোর আদেশ দেয়া হয় সেনাবাহিনীকে। সোমবার রাতে সরকার ১৫ দিনের জন্য জরুরী অবস্থা জারি করলে সঙ্কট আরও ঘনীভূত হয়। জরুরী অবস্থা জারির ফলে দেশটির সংবিধানে বর্ণিত নাগরিক অধিকারের বেশ কিছু বিধান এখন কার্যকর থাকবে না। নিরাপত্তা বাহিনীও বাড়তি ক্ষমতা ভোগ করবে। অবশ্য প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হলেও জনগণের চলাফেরা, চাকরি বা ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর জরুরী অবস্থার কোন প্রভাব পড়বে না। সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে কারাদণ্ড পাওয়া বিরোধী দলের ১২ এমপির মধ্যে নয় জন কারাভোগ করছেন। স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকা আব্দুল্লাহ সিনান ও ইলহাম আহমেদ রবিবার দেশে ফেরার পর বিমানবন্দর থেকে তাদেরও গ্রেফতার করা হয়। কারাবন্দী নেতাদের মুক্তির দাবিতে দেশটির প্রধান বিরোধী দল মালদিভিয়ান ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ৭ ফেব্রুয়ারি দেশজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল। এ দলের নেতা সাবেক প্রেসিডন্ট নাশিদ শ্রীলঙ্কায় স্বেচ্ছা নির্বাসনে আছেন। তিনি দেশটিতে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট। খবর এএফপি/ বিবিসির।
×