ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে সবাইকে সচেতন হতে হবে ॥ খাদ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৪:১৮, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে সবাইকে সচেতন হতে হবে ॥ খাদ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে উল্লেখ করে খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে শুধু আইন করলেই হবে না, উৎপাদক থেকে ভোক্তা, সবাইকে সচেতন হতে হবে। শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবসের সমাপনী দিনে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি একথা বলেন। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্যের উন্নয়ন : আঞ্চলিক আন্তর্জাতিক মান, আইন এবং উৎকৃষ্ট চর্চার সঙ্গতি সাধন শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব শাহাবুদ্দিন আহমদ। এতে সভাপতিত্ব করেন, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোঃ মাহফুজুল হক। খাদ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা দিতে আমরা সক্ষম হয়েছি। মানুষের সাংবিধানিক অধিকার নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তি, এটা নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ আজ যেভাবে কাজ করে যাচ্ছে, আমাদের এ আইনটি বাস্তবায়নের জন্য আমরা যেভাবে কাজ করছি, এই কাজে সবার সহযোগিতা আমাদের কাম্য। ক্রমান্বয়ে শক্তভাবে আমরা আইন প্রয়োগ করব। তবে আইন করে সব কিছু হবে না আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। আমি এই কথাটা আপনাদের স্পষ্ট করে বলতে চাই। সেমিনারে চালের দাম নির্ধারণে বাণিজ্য ও অর্থমন্ত্রীর যুক্তিকে সমর্থন করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, অর্থমন্ত্রী যে কথা বলেছেন, বাণিজ্যমন্ত্রী যে কথা বলেছেন, কেবলমাত্র আমাদের ভোক্তাদের দিকে তাকালে চলবে না। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে যার উৎপাদন করে যারা তাদের কথাও আমাদের ভাবতে হবে। কৃষকরা ন্যায্য মূল্য না পেলে তারা খাদ্যশস্য উৎপাদন বন্ধ করে দেবে। এই সরকারের আমলে দেশের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে খাদ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি ২০২১ সালের মধ্যে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত এবং ২০৪১ সালে œত দেশে পরিণত হব। আমার স্বপ্ন দেখছি বাংলাদেশ উন্নত দেশ হবে। আমরা স্বপ্ন দেখছি এমন এক বাংলাদেশের যে বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার মাহাতির মোহাম্মদের মতো চিন্তা করি, আমরা আজ সিঙ্গাপুরের কথা উদাহরণ হিসেবে ধরি। সেদিন আর বেশি দূরে নয়, পৃথিবীর মানুষ মালয়েশিয়া বা সিঙ্গাপুরকে নয়, বাংলাদেশকে উদাহরণ হিসেবে দেখবে। আগামী নির্বাচনে আবারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করে এই উন্নয়নের ধরা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান খাদ্যমন্ত্রী। সেমিনারে জানানো হয়, বর্তমান সরকারের অন্যতম প্রতিশ্রুতি, দেশকে খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ করা এবং ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত দেশ গড়া। এরই প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যসম্মত, ভেজালমুক্ত ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের জন্য বর্তমান সরকার ২০১৩ সালের ১০ অক্টোবর নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ প্রণয়ন করে। আইনটি ২০১৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি কার্যকর হয় এবং ২ ফেব্রুয়ারি একটি জাতীয় বিধিবদ্ধ সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গঠিত হয়। প্রতিষ্ঠা পাওয়ার পর গত তিন বছরে ছয়টি নিরাপদ খাদ্য বিধিমালা ও প্রবিধানমাল প্রকাশ; ৪৯৩টি মামলা দায়ের; ১৬ হাজার ২২৩টি নমুনা সংগ্রহ; ৫২৮টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা; নিয়মিত ১০টি বাজার পরিদর্শন; বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কৌশলগত পরিকল্পনা ও পথ নকশা প্রণয়ন (২০১৭-২০২১ সাল); সাংগঠনিক কাঠামো অনুমোদন (৩৬৫ জনবল বিশিষ্ট); ৭১টি বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত স্থাপন; বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক ১২টি সচেতনতামূলক কার্যক্রম; নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক এবং অন্যান্য অংশীজন প্রশিক্ষণ প্রদান (১৮৩ জন); ২২শ’ জনের অংশগ্রহণে ১০টি নিরপাদ খাদ্য বিষয়ক সেমিনার ওয়ার্কশপ আয়োজন করা হয়। ১৬ কোটি মানুষের এই বাংলাদেশের মানুষের যথাযথ খাদ্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে বলে জানান খাদ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী চিন্তা করেছেন, প্রথমে মানুষের খাদ্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। তারপরও মানুষের নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তির যে অধিকার, সেই অধিকার নিশ্চিত করার জন্য তিনি কাজ শুরু করেছেন।
×