ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার

ইন্টারনেট সহজলভ্য ও ব্যান্ডউইথের মূল্যহ্রাস আমার প্রথম কাজ

প্রকাশিত: ০৪:৫৩, ১৩ জানুয়ারি ২০১৮

ইন্টারনেট সহজলভ্য ও ব্যান্ডউইথের মূল্যহ্রাস আমার প্রথম কাজ

ফিরোজ মান্না ॥ প্রযুক্তি মাস্টার এখন ছাত্র। ছাত্র থাকবেন আরও কয়েকদিন। এরপর তিনি মন্ত্রী হিসেবে তার কাজে হাত দেবেন। তবে ছাত্র থাকা অবস্থায় তিনি কিছু কথা বলেই দিয়েছেন। তিনি বললেন, সব কিছুর আগে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা ও ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের দাম কমানো। এটা হবে তার প্রথম কাজ। ইন্টারনেট সহজলভ্য না হলে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া কঠিন হবে। দীর্ঘদিন ধরেই ইন্টারনেটের দাম কমানোর বিষয়টি সরকারের সামনে নিয়ে আসা হয়েছে। এখন আমি এ বিষয়ে কাজ করতে পারব। এছাড়া টেলিযোগাযোগ খাতে অলাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলোকে লাভজনক করা। এ কথা বলেন মন্ত্রিসভায় সদ্য যোগ দেয়া ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। বর্তমান সরকারের মেয়াদে টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অসাধারণ অগ্রগতি হয়েছে। যা চোখে পড়ার মত। তবে এই খাতের কয়েকটি সংস্থা ‘নন পারফরমিং’। এসব প্রতিষ্ঠানে ক্যান্সারের মত সমস্যা বিরাজ করছে। সমস্যাগুলো দূর করা হবে। সদ্য নিয়োগ পাওয়া ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপে এসব কথা বলেন তিনি। মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমি ৭ কর্মদিবস ছাত্র থাকব। ছাত্র অবস্থায় আমি মন্ত্রণালয়ের খুঁটিনাটি নানা বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের পরই আমার কাজে হাত দেব। এর আগে আমি মিডিয়ার সঙ্গে কিছু বলতে চাই না। তবে একটা কথা আমি দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি। তা হলো ইন্টারনেটের দাম সব মানুষের নাগালে নিয়ে আসব। কারণ ইন্টারনেট ছাড়া সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কাজ পুরোপুরি বাস্তবায়ন হবে না। বর্তমান দুনিয়া ইন্টারনেটের ওপর ভিত্তি করেই এগিয়ে যাচ্ছে। তাই আমার প্রথম কাজ হবে ইন্টারনেটের দাম কমানো। ভয়েসের মত অবশ্যই ইন্টারনেটের দাম নির্ধারণ করা (উচ্চসীমা ও নিম্নসীমা) থাকতে হবে। মোবাইল ফোনের ভয়েস কলের উচ্চসীমা ২ টাকা আর নিম্নসীমা ২৫ পয়সা যদিও বেঁধে দেয়া সম্ভব হয়েছে। ইন্টারনেটের দামও বেঁধে দেয়া হবে। ইন্টারনেটের দাম অবশ্যই গ্রাহকের চাওয়ার মধ্যে থাকতে হবে বলে তিনি জানান। অন্য বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলতে গেলে তিনি বলেন, ছাত্রাবস্থায় কথা বলা ঠিক হবে না। তবু কিছু বিষয়ে না বললেই নয়। তিনটি প্রতিষ্ঠানের পারফরমেন্স খুব একটা ভাল নয়। এর মধ্যে রয়েছে টেশিস (টেলিফোন শিল্প সংস্থা), টেলিটক ও বিটিসিএল (বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স লিমিটেড)। এসব প্রতিষ্ঠান সরকারী। এ গুলোকে লাভজনক অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হবে। প্রতিষ্ঠানগুলোর ঐতিহ্য কি করে ফেরানো যায় তা নিয়ে অবশ্যই কাজ করা হবে। প্রতিষ্ঠানগুলোর সমস্যা চিহ্নিত করে উন্নতির দিকে নেয়ার চিন্তা তো রয়েছেই। ছাত্রত্ব শেষ হলে এক শ’ দিনের কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হবে। এক শ’ দিনের পরিকল্পনার বিষয়ে তার নিজের কিছু পর্যবেক্ষণ রয়েছে। মন্ত্রণালয়ের আগের যে কাজগুলো রয়েছে সেগুলোও থাকবে। প্রধানমন্ত্রী আমাকে দু’টি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন, তিনি জেনে শুনেই আমাকে এ দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচী ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার বিষয়ে যথাযথ দায়িত্ব পালন করব। আমার সবটুকু দিয়েই কাজ করে যাব। আমি এখন সব জায়গায় এক শ’ দিনের কর্মপরিকল্পনার কথা বলছি। এর মধ্যে সবার কাছ থেকে পাওয়া ধারণা এবং নিজের করণীয় ঠিক করে এক শ’ দিনের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হবে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী বলেন, দু’টি বিভাগের কোথায় কোথায় কি কি অসুবিধা আছে তা আমি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করছি। অনেক বিষয়ে আমার ধারণা তেমন ছিল না। মন্ত্রণালয়ের ভেতরে ঢুকে কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ওই সব বিষয়ে অনেক ধারণা পাচ্ছি। আগে আমি জানি শিখি তারপর কাজে হাত দেব। ইতোমধ্যেই অনেকেই বুঝতে পেরেছেন, কোন উল্টোপাল্টা বুঝ দেয়া যাবে না। কারও কারও বড় বড় কথাও বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে অনেক অনিয়ম আমার চোখে ধরা পড়েছে। আমি যখন মন্ত্রী হইনি তখন ওই সব বিষয় নিয়ে বিভিন্ন সভা সেমিনারে কথা বলেছি। লেখালেখি করেছি। এখন আমি মন্ত্রী। আমি কোন অনিয়ম সহ্য করব না। প্রযুক্তির উন্নয়ন মানে দেশের উন্নয়ন। এখানে কাজ করতে হবে। শুধু শুধু কথা বলে লাভ হবে না। এতে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচীই ফাঁকির মধ্যে পড়বে। সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার পূরণ আমাদের করতেই হবে। তাছাড়া উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে হলে তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষতা অর্জন করতেই হবে। এখানে দক্ষতার কোন বিকল্প নেই। বর্তমান বিশ্বে টেলিযোগাযোগ একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত। বিশ্ব যে গতিতে যাচ্ছে আমাদেরও একই গতিতে এগিয়ে যেতে হবে। আমি সব বিষয়েই সমান গুরুত্ব দিয়ে কাজ করব। এটা আমার দায়িত্ব।
×