ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা ও এলএনজি আমদানি চুক্তি করার প্রক্রিয়া শুরু

প্রকাশিত: ০৬:১৬, ১১ জানুয়ারি ২০১৮

ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা ও এলএনজি আমদানি চুক্তি করার প্রক্রিয়া শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর বাংলাদেশ সফরে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) এবং কয়লা আমদানি বিষয়ে চুক্তি করতে চায় সরকার। বিদ্যুত, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় চুক্তি করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তবে ইন্দোনেশিয়া চাইছে এলএনজি ও কয়লার বাইরেও বাংলাদেশে এলএনজি এবং তরল জ¦ালানি নির্ভর বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের জন্য পৃথক চুক্তি করতে। বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত রিনা পি সোইমারনু বুধবার সচিবালয়ে বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত এলএনজি আমদানির চুক্তির সঙ্গে বাংলাদেশে এলএনজি এবং তরল জ্বালানি নির্ভর বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণে তার দেশের আগ্রহের কথা জানান। তিনি এলএনজি এবং কয়লার বাইরেও এই দুই বিষয়ে চুক্তি করার অনুরোধ জানান। বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, আগামী দিনে আমাদের বড় বড় কয়লা চালিত বিদ্যুত কেন্দ্র উৎপাদনে আসছে। এসব বিদ্যুত কেন্দ্রের কয়লা আমদানির জন্য সরকারী পর্যায়ে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে। ইন্দোনেশিয়া থেকে বাংলাদেশের কয়লা ক্রয়ের আগ্রহের কথা জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বৈঠকে বলেন, দুই দেশের সরকারী পর্যায়ে কয়লা আমদানির বিষয় বিশদভাবে আলোচনা প্রয়োজন। সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করে আমরা যৌথভাবে একটি উন্নয়নের ফ্রেমওয়ার্ক করতে পারি। এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করতে তিনি সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করেন। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো আগামী ২৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ সফরে আসছেন। বিশে^র বৃহত্তম মুসলিম জনগোষ্ঠির দেশটির প্রেসিডেন্ট রোহিঙ্গাদের দুর্দশা দেখতে বাংলাদেশে আসছেন। এর আগে ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো এলপি মারসুদি দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয় ও রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা করতে ২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ঢাকা আসেন। তবে এবার প্রেসিডেন্ট জোকো’র এই সফরে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে চুক্তি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উভয় দেশ। আগামী ১৪ জানুয়ারি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দুই দেশের কোন কোন বিষয়ে চুক্তি হবে তা চূড়ান্ত করা হবে। সফরে জোকো উইদোদো কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করবেন। জ্বালানি বিভাগ মনে করছে প্রাথমিক জ্বালানির অন্যতম বড় উৎস হতে পারে ইন্দোনেশিয়া। এর মধ্যে দেশটির সঙ্গে কয়লা এবং এলএনজি আমদানি করতে পৃথক সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এখন এই সমঝোতার ভিত্তিতে চুক্তি করার পালা। জ্বালানি বিভাগ বলছে গত বছর মধ্য সেপ্টেম্বরে এলএনজি আমদানির বিষয়ে এমওইউ সই হয়। ইতোমধ্যে চুক্তি করার বিষয়ে দুই দেশই আলোচনা করে একমত হয়েছে। চুক্তির সকল দিকও চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রেসিডেন্টের সফরের সময় চুক্তিটি করা হবে। জ্বালানি বিভাগ সূত্র জানায়, গত ১৪ সেপ্টেম্বর ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে এমওইউর ভিত্তিতে বাংলাদেশে এলএনজি অবকাঠামো নির্মাণ এবং এলএনজি সরবরাহ করবে দেশটি। এজন্য ইন্দোনেশিয়ার পারটামিনা এবং পেট্রোবাংলা একটি কমিটি গঠন করে কর্মপরিধি নির্ধারণ করবে। ইতোমধ্যে বিদ্যুত বিভাগ জি টু জি ভিত্তিতে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করলেও জ্বালানি বিভাগে এমন নজির নেই বললেই চলে। তবে এই প্রকল্পের মধ্য দিয়ে সরকারী অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা হতে পারে। বিদ্যুত উৎপাদনের জন্য ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা কিনতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এরই মধ্যে দেশটির বারাতাবাং নামের একটি কোম্পানির সঙ্গে বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে। বারাতাবাং পায়রায় এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুত কেন্দ্রে কয়লা সরবরাহ করবে। তবে সরকার চাইছে দেশটির সঙ্গে সরকারী পর্যায়ে চুক্তি করতে।
×