ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

নুরউদ্দিন আহসান

সন্ত্রাস এক ব্যাধি

প্রকাশিত: ০৪:১৩, ৪ জানুয়ারি ২০১৮

সন্ত্রাস এক ব্যাধি

প্রতিটা সমাজে ভাল মানুষের ভিড়ে গুপ্তচরের মতো লুকিয়ে আছে কিছু খারাপ মানুষ। যাদের নিয়ে আমাদের সমাজ-রাষ্ট্র বিচলিত। তাদের অপকর্মের কারণে মানুষ আজ অতিষ্ঠ। চলার পথ হুমকিস্বরূপ। সমাজের প্রতিটা মানুষের নিরাপদে চলাফেরা ও বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। কিন্তু তা আজ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কোন জায়গায়ই মানুষ এখন আর নিরাপদ নয়। প্রত্যেক স্থানেই একটা অতঙ্ক নিয়ে চলাফেরা করতে হয়। কখন যানি অঘটন ঘটে যায়। হাঁটতে গেলে, গাড়িতে চলতে গেলে, ঘুরতে গেলে নিরাপদে ফিরে আসা যাবে কি না তার কোন নিশ্চয়তা নেই। নেই কোন জীবনের নিরাপত্তা। সামান্য টাকার জন্য জীবন পর্যন্ত দিতে হয় এই সভ্য সমাজের কিছু অসভ্য, বর্বর ছিনতাইকারীর হাতে। মায়ের কোলে ছয় মাসের শিশু মৃত্যুর ঘটনা যার জলন্ত প্রমাণ। এভাবে হাজারও ঘটনা ঘটে যাচ্ছে যা অনেক সময় প্রকাশ পায় না। অজানাই থেকে যায় কষ্টে জর্জরিত মানুষের আত্মচিৎকার। তবে কেন এই বর্বোরচিত অমানুষিক কর্মকা-। মানুষগুলো কিসের অভাবে এমন কাজ করছে। এর পেছনে কাদের হাত রয়েছে। আমরা কি কারণগুলো খোঁজার চেষ্টা করেছি? ছিনতাই, চুরি, ডাকাতি সমাজের নিত্যকার ঘটনা যা এক প্রকার ব্যাধিতে রূপ নিয়েছে। তবে অচিরেই এই ব্যাধির হাত থেকে সমাজকে মুক্ত করা অপরিহার্য। আর তা কিছু পদক্ষেপের মাধ্যমে নিশ্চিহ্ন করা যায় বলে মনে করি। ১. মানুষের মাঝে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেয়ার মাধ্যমে। যার আলোয় আলোকিত হয়ে অন্ধকারের জগত থেকে মানুষ আলোর দিকে ধাবিত হবে। বেছে নেবে অবারিত সুন্দর আগামী। সুখের সাগরে প্রাণোচ্ছল হয়ে সামনে হাঁটবে জীবনের বাকিটা পথ। ছেড়ে দেবে বিবেক বর্জিত অমানবিক কর্মকা-। ২. আমাদের সমাজে একটা কথা আছে ‘অভাবে স্বভাব নষ্ট’। সেই অভাব দূর করতে পারলে ধ্বংসের কাজ থেকে মানুষদের দূরে রাখা সম্ভব। যদি তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায় তাহলে সমাজ কে এসব অপকর্ম হাত থেকে মুক্ত রাখা সম্ভব। ৩. সর্বশেষ এর পরও যারা এমন কাজে লিপ্ত থাকবে তাদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে। কথায় আছে কান টনলে মাথা আসে আর তাই এদের মূল হোতাকে আগে ধরতে হবে। যাদের হাত ধরে সমাজে এই অপকর্মের সূচনা হচ্ছে। যাদের নির্দেশে চলছে এমন অপকর্ম। তাদের এমন শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে যেন অন্যরা দেখে এই পথ ছাড়তে বাধ্য হয়। আইনের সঠিক প্রয়োগ ছাড়া সমাজের বর্তমান অবস্থা থেকে অপকর্ম দূর করা সম্ভব নয়। না হয় আমাদের প্রতিদিনই কোন না কোন মা তার সন্তানকে হারাবে। সর্বস্ব হারাবে পথের পথিক। ফলে কষ্ট সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হবে অনেক হতভাগা। তাই এই নাজুক অবস্থা সৃষ্টি হওয়ার পূর্বেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই বিষয়ে কঠোর হওয়া প্রয়োজন। সর্বোপরি আমাদের সাবরই এই বিষয়ে সর্ব অবস্থায় সচেতন থাকতে হবে। আমাদের একটু সচেতনতাই পারে সন্ত্রাসের ছোবল থেকে অনেকাংশে রক্ষা করতে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া থেকে
×